দুইদিন বিরতির পর আজই বাংলাদেশ সীমান্তঘেঁষা রাখাইন প্রদেশের সবচেয়ে বেশি গ্রাম জ্বলতে দেখা গেছে। আগের দু’দিন কিন্তু আগুন বন্ধ ছিলো না।
এপারে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা বলছেন, রোহিঙ্গা-শূন্য গ্রামগুলোতে এই অগ্নিসংযোগই প্রমাণ করে মিয়ানমারের সরকার ও প্রশাসন আরাকানকে সম্পূর্ণরূপে মুসলমান ও রোহিঙ্গামুক্ত করতে চায়। এ কারণেই সেখানে আমাদের সব সম্পদ ও আশ্রয়স্থলের চিহ্নটুকু ভস্মীভূত করে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে। 
বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলের দিকে নাফ নদীর পাশে এবং মংডু শহরের উপকন্ঠের সবচেয়ে বড় দুটি মুসলিম অধ্যুষিত গ্রাম থেকে কালো ধোঁয়ার বিশাল কুণ্ডলি উঠতে দেখা যায়। এই এলাকাটির বিস্তৃতি ছিলো কয়েক বর্গ কিলোমিটার। নিকষ কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলি প্রায় এক কিলোমিটারের উপরে পাঁক খেয়ে আরাকান পাহাড়ে জমা হওয়া কালো মেঘের সঙ্গে মিশে পুরো এলাকা ঢেকে দিয়েছে। 
মিয়ানমারের ওপারে আগুনজ্বলা দেখছেন এপারে পালিয়ে আসা বিপন্ন রোহিঙ্গারা। স্থানটি টেকনাফের ট্রাকস্টান্ডের ঠিক উল্টো দিকে। সেখানে দাঁড়ানো রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর কেফায়েত উল্লাহ জানালেন, আগুন জ্বলছে মংডুর পেরামপুরা এলাকার কৈয়ানছাড়া বিল ও দাওড়া বিল গ্রামে। এই গ্রাম দুটি সম্পূর্ণ পুরোপুরি মুসলিম অধ্যুষিত এবং প্রায় ২০ হাজার মানুষের বাস ছিলো এতে। এবারের সহিংসতা শুরুর প্রথম দিকেই মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের দ্বারা আক্রান্ত হয় এলাকাটি। সে সময় প্রচুর মানুষ হতাহত হয় এবং সেনাবাহিনীর হাতে আটক হয়। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বহু বাড়িঘর। এখন আর সেখানে কোনো রোহিঙ্গা অবশিষ্ট নেই। সবাই পালিয়ে এসেছেন বাংলাদেশে।
সন্ধার পরপরই টেকনাফের নাইটং পাড়া এলাকার রাস্তায় দাঁড়িয়ে গ্রাম দুটিকে দাউদাউ করে জ্বলতে দেখা যায়। আগুনের শিখা অনেক দূর পর্যন্ত এলাকাকে আলোকিত করে ফেলে। সে আগুন এখনো জ্বলছে। আগুন ছড়িয়ে পড়ছে আশেপাশের এলাকায়ও।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৭
আরএম/জেএম
