ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

চাকরির নিয়োগপত্র পেলেন সিদ্দিকুর

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৭
চাকরির নিয়োগপত্র পেলেন সিদ্দিকুর ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: সরকারি ফার্মাসিউটিক্যালস প্রতিষ্ঠান এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডে টেলিফোন অপারেটর পদে চাকরি পেলেন শিক্ষার আন্দোলনে পুলিশের ছোড়া টিয়ারশেলে চোখ হারানো তিতুমীর কলেজের ছাত্র সিদ্দিকুর রহমান। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে সিদ্দিকুরের হাতে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন।

আগামী ১ অক্টোবর থেকে সিদ্দিকুর টেলিফোন অপারেটর হিসেবে কাজে যোগ দেবেন।  
 
প্রাথমিকভাবে তিনি ১৩ হাজার টাকা মূল বেতন ও অন্যান্য সুবিধাদি পাবেন।

এক বছর পর চাকরি স্থায়ী হলে ২৩ হাজার টাকা মূল বেতন ও অন্যান্য সুবিধা প্রাপ্ত হবেন সিদ্দিকুর।
 
চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আমরা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম তা বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছি। পুলিশের টিয়ারশেলে মেধাবী শিক্ষার্থী সিদ্দিকুর তার দু’চোখের দৃষ্টি শক্তি হারিয়েছেন। যার চক্ষু নেই বলতে গেলে তার তো কিছুই নেই। আমি যখন সিদ্দিকুরকে দেখতে যাই তখনই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম ওর চোখ ভালো হোক আর না হোক এসেনশিয়াল ড্রাগসে একটি চাকরি আমরা দেবো।
 
প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সিদ্দিকুরের কাছে গিয়ে তার ইন্টারভিউ নিয়েছেন জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, তার যেহেতু চোখ নেই কাজ করতে সমস্যা হবে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি টেলিফোন অপারেটর পদে তাকে চাকরি দেওয়া হবে। সঙ্গে সঙ্গে তার লেখাপড়াও চলবে। চোখে না দেখলেও সে কাজ করতে পারবে, আমার মনে হয় এটা উপযুক্ত চাকরিই হয়েছে।
 
চোখ হারানো সিদ্দিকুরকে চাকরি দিতে পেরে উচ্ছ্বসিত মন্ত্রী বলেন, আজকে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আমরা সবাই খুশি যে তার জন্য একটি কাজ করতে পেরেছি। এটা বেদনার মধ্যেও একটু স্বস্তি। সিদ্দিকুরের পরিবারের জন্য আমাদের সবার সহানুভূতি আছে।
 
চাকরি পেয়ে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সিদ্দিকুর বলেন, শুরু থেকে সরকার আমার পক্ষে ছিল। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মহোদয় আমার সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর নিয়েছেন। মিডিয়াকেও আমি বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই, তারা সবসময় আমাকে সাপোর্ট দিয়েছে। আমার কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষকরাও আমার পাশে ছিলেন।
 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত রাজধানীর সাত কলেজের পরীক্ষার সূচি ঘোষণার আন্দোলনে গত ২০ জুলাই শাহবাগে পুলিশের টিয়ারসেলে আহত হন সিদ্দিকুর। পরে তাকে ভারতের চেন্নাইয়ের হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয় সরকারি খরচে।
 
সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সার্বিক সফলতা কামনা করে সিদ্দিকুর বলেন, কলেজগুলোর শিক্ষা কার্যক্রম যাতে স্বাভাবিক থাকে, তারা যাতে ভালো অবস্থানে যেতে পারে। আমি সবার জন্য দোয়া করি, কাউকে যেন আমার মতো দুর্ঘটনায় না পড়তে হয়।
 
টেলিফোন অপারেটর পদে চাকরির প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, আমি আমার স্বপ্ন থেকে পিছিয়ে আসিনি। আমি আমার স্বপ্নের পেছনো দৌড়াবো।
 
স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. সিরাজুল হক খান, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, এসেনশিয়াল ড্রাগসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক ডা. এহসানুল কবির অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৭
এমআইএইচ/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।