ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন মৃৎশিল্পীরা

মনি আচার্য্য, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৭
প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন মৃৎশিল্পীরা ছবি: সুমন শেখ- ব‍াংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: কাশ ফোটা শরতের প্রথম দিন থেকেই দুর্গোৎসবের প্রস্তুতি শুরু হয় মন্দিরগুলোতে। সেইসঙ্গে পূজা উপলক্ষে তৈরি অস্থায়ী মণ্ডপগুলোতে। যা এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলা চলে।

দুর্গোৎসবের প্রধান অনুষঙ্গ হচ্ছে দেবী দুর্গার প্রতিমা। আর তাই দুর্গোৎসবকে সামনে রেখে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা।

পূজা শুরুর নির্দিষ্ট সময়ের আগেই মা দুর্গাকে তুলতে হবে মণ্ডপে। সেই জন্য মৃৎশিল্পীরা এখন রাত দিন একাকার করে করছেন প্রতিমা তৈরির কাজ। ইতিমধ্যে প্রতিমার কাঠামোর মাটির কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এরপর শুরু হবে রং ও সাজসজ্জার কাজ।

রোববার(১০ সেপ্টেম্বর)রাজধানীর শাঁখারিবাজার ও তাঁতিবাজারের বেশ কয়েকটি পূজা মণ্ডপ ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, পূজামণ্ডপগুলোতে দেবী দুর্গা তার বাহন সিংহের প্রতিমাসহ তৈরি করা হচ্ছে যাকে বধ করার জন্য দেবীর আগমন, সেই মহিষাসুরের প্রতিমা। এছাড়াও তৈরি করা হচ্ছে দেবী লক্ষ্মী, সরস্বতী, দেবতা কার্তিক, গণেশ, এবং তাদের বাহন পেঁচা, হাঁস, ইঁদুর আর ময়ূর।

প্রতিমাশিল্পীদের সঙ্গে প্রতিমা তৈরিতে মহাব্যস্ত সময় পার করছেন তাদের কারিগররাও।

শাঁখারিবাজার ও তাঁতিবাজারের মণ্ডপগুলোর প্রতিমার মাটির কাজ এরই মধ্যে প্রায় শেষ করে ফেলেছে শিল্পীরা। মূর্তি গড়া শেষে রং তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলা হবে প্রতিমা। দেবীকে স্বাগত জানাতে সর্বত্র আনন্দঘন পরিবেশ বিরাজ করছে।

মৃৎশিল্পী ও তাদের সহযোগী কারিগরদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত দেড়টি মাস ধরে তারা দেবী দুর্গার প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন। প্রতিমা তৈরির মাটির কাজ প্রায় শেষ, এখন চলছে সৌন্দর্যবর্ধন কাজ। এই কাজ শেষ হয়ে গেলেই চলবে রং তুলির কাজ। কোথাও কোথাও মেশিন দিয়ে চরছে রঙের কাজ।

তারা আরও বলেন, প্রতিবছরই তারা দেবী দুর্গার প্রতিমা তৈরির কাজের জন্য অপেক্ষায় থাকেন অধীর আগ্রহে। শুধুমাত্র জীবিকার জন্যই না, দেবী দুর্গার প্রতিমা তৈরির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে তাদের ধর্মীয় অনুভূতি, ভক্তি আর ভালোবাসা।

শাঁখারিবাজারের সঙ্ঘমিত্র পূজা কমিটির মণ্ডপে দেবী দুর্গার প্রতিমা তৈরি করছেন মানিকগঞ্জের সুকুমার পাল। এই প্রতিমাটি ছাড়াও এবারের দুর্গোৎসব উপলক্ষে আরও ৬টি প্রতিমা তৈরি করছেন তিনি।

সুকুমার পাল বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিমা তৈরির কাজ এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে। রাত দিন মিলিয়ে ১৬-১৭ ঘণ্টা ধরে কাজ করতে হয় এখন। কাজে কোনো ফাঁকফোঁকরের সুযোগ নেই। কারণ বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সব থেকে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। তাই সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে ভক্তদের কাছে মাকে সমর্পণের।

সর্বনিম্ন ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৪ লাখ টাকায় তিনি প্রতিমা তৈরি করছেন বলেও জানান।

শাঁখারিবাজার প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবের পূজা মণ্ডপের প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত মৃৎশিল্পী বলাই পাল। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, এখনই বছরের সব থেকে বেশি ব্যস্ত সময় পার করছি। পূজার আর মাত্র ১৫ দিন বাকি। তাই দম ফেলার ফুরসতটুকুও আর নেই। এই সময়ের মধ্যেই দেবী দুর্গার প্রতিমা তৈরির সব কাজ শেষ করতে হবে।

তিনি বলেন, যত কষ্টই করি না কেন, যখন দেবীকে তার স্বরূপে মণ্ডপে বসানো হবে তখন সব কষ্ট দূর হয়ে যাবে। আমাদের কাছে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে যখন আমাদের তৈরি করা প্রতিমাকে সবাই পূজা করে। তখন নিজেকে আমার সফল, সার্থক মনে হয়।

এদিকে দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে রাজধানীর শাঁখারিবাজার ও তাঁতিবাজারে। এরই মধ্যেই মণ্ডপ তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছেন ভক্তরা। এর সঙ্গে এলাকা দুইটির বাসিন্দাদের মধ্যে শুরু হয়ে গেছে দেবী দুর্গার আগমনের প্রহর গোনা!

বাংলাদেশ সময়: ০০২৬ ঘণ্টা সেপ্টেম্বর ১১,২০১৭
এমএসি/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।