ঢাকা, বুধবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘যুদ্ধ করবো না, উন্নয়ন ধ্বংস হবে’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৭
‘যুদ্ধ করবো না, উন্নয়ন ধ্বংস হবে’ রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সংবাদ সম্মেলন, ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গণহত্যা ও বাংলাদেশে রোহিঙ্গার ঢল মোকাবেলায় যুদ্ধ কোনো সমাধান নয় বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি। এর আগে পশ্চিমা ও আরব বিশ্বের দেশগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে পৃথক ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়।

রাখাইনে যা চলছে এটি গণহত্যা। এর শিকার হয়ে সোয়া তিন লাখের বেশি মানুষ সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছেন। দিন দিন জনস্রোত কেবল বাড়ছেই। অন্যদিকে সীমান্তে মাইন পুঁতে রেখে রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার পথও বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে সমাধান কী, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, এমন অবস্থায় আমরা কী করবো? আমরা কি যুদ্ধ করবো? না। যুদ্ধ করলে যে উন্নয়ন, সব ধ্বংস হয়ে যাবে। আর যুদ্ধ কোনো সমাধানও নয়। আমরা কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিয়েছি বলেই মিয়ানমার চাপ অনুভব করছে।

              আরও পড়ুন: গণহত্যা বন্ধে মিয়ানমারকে ‘ধমক’ দেওয়া হয়েছে
                                 গণহত্যায় তিন হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা

মন্ত্রী বলেন, অনেকে সমালোচনা করেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিছুই করছে না। এটা ঠিক নয়। সময় হলে প্রকাশ্য হবে। সবসময় সবকিছু বলা যায় না। এটা তাদের সমস্যা তাদের সমাধান করতে হবে। আগে থেকে প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ছিল। নতুন করে তিন লাখ এসেছে।  

তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা কারা? তারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে আসা জনগণ। দেড় হাজার বছর ধরে তারা রাখাইনে (আরাকান) বসবাস করছেন। ১৯৪৮ সালে ব্রিটিশদের থেকে মিয়ানমার স্বাধীনতা লাভের পর রোহিঙ্গারা নাগরিক ছিল এবং ভোটের অধিকারও ছিল। স্বাধীনতার আগের আট বছর যারাই সেখানে ছিল তারাই নাগরিক। সেভাবেই নিয়ম হয় সদ্য স্বাধীন সেই দেশে। তবে ১৯৮২ সালে সিটিজেনশিপ অ্যাক্টের মাধ্যমে এটি বন্ধ করা হয়। যদিও ২০১০ সাল পর্যন্ত রোহিঙ্গারা ভোট দিয়েছেন। এমপিও হয়েছেন, মন্ত্রীও। সহিংসতার জেরে ৯১-৯২ সালে আড়াই লাখ আসেন। ফিরে যান দুই লাখ। এরপর একে একে তারা কেবল এসেছেনই।

কফি আনান কমিশন বলেছে, তারা মিয়ানমারের নাগরিক। এটি বাস্তবায়নের প্রতি জোর দিতে হবে বলেও মত দেন মন্ত্রী। এরসঙ্গে কূটনীতিকরাও একমত বলে জানান তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ অধিবেশ রয়েছে। সেখানে বাংলাদেশ এই ইস্যু উঠাবে। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিটিতে উত্থাপনের বিষয়ে মন্ত্রণালয় কাজ করছে। আমরা জানি এটি স্পষ্ট গণহত্যা। যা সবাই স্বীকার করেছে। এতে তারাও প্রচণ্ড চাপে রয়েছে। তাদের নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেছেন প্রমাণ লাগবে নয় তো ফিরিয়ে নেওয়া হবে না। আসলে চাপে পড়েছে বলেই এটা বলেছে তারা। বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দিয়ে বলবে রোহিঙ্গারা নাগরিক না, এটা হতে পারে না।  

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এমন অবস্থায় আমরা কী করবো? আমরা কি যুদ্ধ করবো? না। যুদ্ধ করলে দেশে যে উন্নয়ন, সব ধ্বংস হয়ে যাবে। এটা সমাধান নয়। পদক্ষেপ নিয়েছি বলে চাপ অনুভব করছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৬ ঘ্ণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৭
কেজেড/আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।