সকালে নতুন জামা গায়ে দিয়ে বিদায়ের প্রস্তুতি নিয়েছে তৌফা-তহুরা। ঢামেক কেবিনে বাবা-মায়ের কোলে বসে অপেক্ষা করছে তারা।
শিশু দু’টির মা শাহিদা বেগম বাংলানিউজকে জানান, ঢামেকের ডা. শাহানুর বেগম ঈদে তোহা-তহুরাকে নতুন জামা কিনে দিয়েছিল। গতকাল রাতেও নতুন জামা কিনে দিয়েছে। এইন নতুন জামা পরিয়ে আমার সোনা ময়নাদের বাড়ি নিয়ে যাব। আশা করছি আজকেই গাইবান্ধা সুন্দরগঞ্জের পথে রওনা হবো।
অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আলাদা করা শিশু তৌফা ও তহুরা এখন সুস্থ আছে। শিশু দু’টির চিকিৎসার তত্ত্বাবধায়ক শিশু সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডাক্তার শাহনূর ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, তৌফা ও তহুরা এখন ভালো আছে। তাদের ওজন আগে থেকে বেড়েছে। রোববার বেলা ১২টায় হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হবে।
তিনি জানান, তৌফা-তহুরাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হলেও প্রতিমাসে একবার করে তাদের ফলোআপে রাখা হবে। ছয়মাস পর তাদের আবারও অস্ত্রোপচার করা হবে।
শিশু দু’টি এখন পুরোপুরি সুস্থ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঈদের আগে তাদের হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার কথা ছিল। তবে তাদের এলাকার বন্যা পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় তখন তা করা হয়নি। এখন বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে।
ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ.কে.এম নাসির উদ্দিন জানান, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের উপস্থিতিতে তাদের ছাড়পত্র দেওয়া হবে।
গাইবান্ধার জোড়া শিশু তৌফা ও তহুরাকে গত ১ আগস্ট ঢামেক হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আলাদা করা হয়। তাদের আলাদা করতে সময় লাগে চার ঘণ্টা।
গত বছরে ২৯ সেপ্টেম্বর গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় রাজু মিয়া ও সাহিদা আক্তার দম্পতির জোড়া শিশুর জন্ম হয়। পরের মাস ৭ অক্টোবর নয়দিন বয়সে জোড়া শিশু দু’টিকে চিকিৎসার জন্য ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসলে তাদের ভর্তি রাখা হয়। পরে মেডিকেল বোর্ড গঠন করে জোড়া শিশু দু’টির প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু হয়। তখন ছোট একটি অপারেশনের মাধ্যমে তাদের পায়খানার রাস্তা আলাদা করে দেওয়া হয়।
তখন শিশু দু’টির রক্তে সেপটিসেমিয়া ও ওজন ছিল সাড়ে চার কিলোগ্রাম, যা অস্ত্রোপচারের জন্য উপযুক্ত ছিলো না। তারপর পরিচর্যার মাধ্যমে জোড়া শিশু দু’টির ওজন ১০ কিলোগ্রাম ও তাদের অস্ত্রোপচারের জন্য উপযুক্ত করে তোলা হয়।
**দুপুরে ছাড়পত্র পাচ্ছে তৌফা ও তহুরার
বাংলাদেশ সময়: ১১২৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৭
এজেডএস/এসএইচ