ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সাধারণ বেশে পরিদর্শন, পরে ম্যাজিস্ট্রেট আনিসুরের অভিযান

উত্তম ঘোষ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩১৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৭
সাধারণ বেশে পরিদর্শন, পরে ম্যাজিস্ট্রেট আনিসুরের অভিযান সাধারণের বেশে পরিদর্শন, পরে ম্যাজিস্ট্রেট আনিসুরের অভিযান

যশোর: দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ জেলা যশোরে খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল, কৃষিকাজে ব্যবহৃত সারেও ভেজাল, এমনকি মোটরগাড়ির লুব্রিকেন্টেও (মবিল) ভেজাল ঠেকাতে নিজেই সোর্স হিসেবে কাজ করেছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আনিসুর রহমান। গত ১৪ মাসে দেড় শতাধিক অভিযান পরিচালনা করে জরিমানার অর্ধকোটি টাকা জমা দিয়েছেন সরকারি কোষাগারে। এ সময়কালে একাধিক ভেজাল কারবারীকে পাঠিয়েছেন শ্রীঘরে। আবার সিলগালা করেছেন একাধিক অবৈধ কারখানা।

তবে সম্প্রতি সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে পদোন্নতিজনিত কারণে রাজশাহী বিভাগে বদলি হয়েছেন তিনি।

শনিবার (০৯ সেপ্টেম্বর) যশোর ছাড়ার আগে বাংলানিউজের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় সদ্য বিদায়ী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আনিসুর রহমান বলেন, যশোরে ১৪ মাস দায়িত্ব পালনকালে সরকারি দায়িত্বের পাশাপাশি সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতার জায়গা থেকেও সর্বোচ্চ কাজ করার চেষ্টা করেছি।

অধিকাংশ সময় নিজেই সাধারণ মানুষের বেশে বিভিন্ন অনিয়ম দেখতে ভেজাল পণ্য উৎপাদনের কারখানায় গিয়েছি, পরে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি নিয়ে প্রশাসনের সহযোগিতায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছি। দায়িত্ব পালনকালে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং গণমাধ্যম কর্মীদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা পেয়েছি বলেই কাজ করতে সহজ হয়েছে। এজন্য সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
  
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যশোরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আনিসুর রহমান গত ১৪ মাসে (জুলাই ২০১৬ থেকে আগস্ট ২০১৭) ১৬৬টি অভিযান পরিচালনা করেছেন। এতে তিনি ৩৮৫টি মামলা করে জরিমানা আদায় করেছেন ৪৭ লাখ ৯৮ হাজার ৬শ টাকা এবং ৩৪ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।

দায়িত্ব পালনকালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আনিসুর রহমানের উল্লেখযোগ্য অভিযানের মধ্যে রয়েছে, হোটেল-রেস্টুরেন্ট, বেকারি, আইসক্রিম, লুব্রিকেন্ট, পিভিসি পাইপ ও সার কারখানা, ডায়াগনস্টিক সেন্টার-বেসরকারি ক্লিনিক, মৃত গরুর মাংস বিক্রেতা, সরকারি হাসপাতাল ও ভারতীয় ভিসা সেন্টারের দালাল, ভৈরব নদে অবৈধ বাঁধ ও পাটা অপসারণ, কেশবপুরের ভরতভায়না ও সন্ন্যাসগাছায় সরকারি জমি দখলমুক্ত, চৌগাছার অবৈধ পশুহাট উচ্ছেদসহ নানা ধরনের অবৈধ কারবারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।

একাধিক সূত্র বাংলানিউজকে বলেন, ভেজাল কারবারি, নকল সার প্রস্তুতকারক, বেকারি ইটভাটা মালিকদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা ‘বিশেষ’ এক ব্যক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের খরচ যোগানোর নামে জেলা প্রশাসনকে ম্যানেজের চেষ্টা বরাবরই করে থাকে। যদিও, বর্তমান জেলা প্রশাসক মো. আশরাফ উদ্দিন যোগদানের পর থেকে তিনি অবৈধ কারবারীদের ব্যাপারে কোন ছাড় না দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছেন।

তবে এ ধারা অব্যহত না থাকলে আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে ভেজাল কারবারীরা। এতে ভেজালে সয়লাভ হবে প্রতিটি পণ্যে, পদে পদে লংঘন হবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন।  

বাংলাদেশ সময়: ০৯০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৭
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad