ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মমিনুলের ঠাঁই এখন খোলা আকাশের নিচে!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০১৭
মমিনুলের ঠাঁই এখন খোলা আকাশের নিচে! মাটির সঙ্গে মিশে গেছে ঘরটি-ছবি-বাংলানিউজ

দিনাজপুর: ‘মুহুর্তের মধ্যে হুহু করে বানের পানি এসে ঘরবাড়ি ভাসিয়ে আমাকে সর্বশান্ত করেছে। বন্যার কবলে পড়ে আমার মাটির ঘরটিও ভেঙে গেছে। সব হারিয়ে আমি এখন নিঃস্ব। কি খাবো, কই যাবো।’ 

বন্যায় সবকিছু হারিয়ে এভাবেই আর্তনাদ করছিলেন দিনাজপুর বিরল উপজেলার বাসিয়াপাড়া এলাকার কৃষক মমিনুল ইসলাম।

মমিনুল জানান, দীর্ঘদিন থেকে শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভুগছেন তিনি।

শারীরিক এই অবস্থায় ভারী কোনো কাজ করতে পারেন না। স্ত্রী জবেদা বেগমকে নিয়ে বসবাস। সন্তানহীন এই দম্পত্তি বন্যার পানি থেকে রক্ষা করতে পারিনি তাদের শেষ আশ্রয়স্থল। বন্যার পানিতে ভেঙে গেছে তাদের একমাত্র মাটির ঘর। এখন খোলা আকাশই তাদের ভরসা।

সব হারিয়ে নিঃস্ব মমিনুল-ছবি-বাংলানিউজতিনি জানান, গত শনিবার (১২ আগস্ট) ভোরে বন্যার পানিতে তলিয়ে যায় ঘরবাড়িসহ ফসলি জমি। বাপ-দাদার রেখে যাওয়া এক টুকরো জমিতে চাষাবাদ করে চলে মমিনুলের ছোট সংসার। সেই জমিতে সদ্য রোপণ করা ফসলি জমির চারা বন্যার পানিতে নষ্ট হয়েছে। বন্যার পানি থেকে বাঁচতে মমিনুল স্ত্রীকে নিয়ে এলাকার অন্যদের সঙ্গে আশ্রয় নেন পূর্নভবা নদীর গ্রামরক্ষা উঁচু বাঁধের উপর। সেখানে পলিথিন দিয়ে নির্মিত কুঁড়েঘরে কেটেছে কয়েক রাত।  

পানি কমে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও দুর্ভোগ বাড়তে থাকে মমিনুলের। এখন পর্যন্ত কোনো সহযোগিতা না পেয়ে অর্ধহারে-অনাহারে দিন কাটছে সন্তানহীন এই দম্পত্তির।

মমিনুলের ভাঙা ঘর-ছবি-বাংলানিউজতিনি বলেন, ক’দিন পরই বন্যার পানি কমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। । বাঁধের উপর থেকে সবাই নিজ নিজ বাড়িতে ফেরে। অন্যদের মতো বাঁধ থেকে আমিও ফিরে আসি নিজ ভিটায়। এসে দেখি আমার ঘরটি ভেঙে মিশে আছে মাটির সঙ্গে। সব হারিয়ে আমি এখন সর্বশান্ত। এখন আমার ঘরটি তৈরি করে দেবে কে?

মমিনুল বলেন, আবাদি জমিতে রোপণ করা আমনের চারাও বন্যার পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। এখন দুইবেলা খাওয়ার টাকা নেই। সেখানে ঘর নির্মাণ বা জমিতে নতুন করে চারা রোপণ করবো কিভাবে? গত দুইদিন থেকে স্ত্রীকে নিয়ে নিজ ভিটায় খোলা আকাশের নিচেই রাত কাটাচ্ছি।  

এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন মমিনুল।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, ২২ আগস্ট, ২০১৭
আরআর


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।