ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

তিন ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত ঢাকায়, নাকাল রাজধানীবাসী

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৪২ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০১৭
তিন ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত ঢাকায়, নাকাল রাজধানীবাসী বৃষ্টিতে লোকজনের ভোগান্তি- ছবি- শাকিল

ঢাকা: মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ঢাকা ও পাশ্ববর্তী এলাকায় ভোর থেকে বজ্রসহ ভারী বর্ষণ হয়েছে। যার মাত্রা ছিল সারাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
 
 

আবহাওয়াবিদ আরিফ হোসেন বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, গত ২৭ ঘণ্টার (২১ আগস্ট সন্ধ্যা ৬টা থেকে ২২ আগস্ট সকাল ৯টা পর্যন্ত) মধ্যে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে ঢাকায়। এক্ষেত্রে সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে।

এ তিন ঘণ্টায় ৫৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এরপরেই রয়েছে কুমিল্লা। সেখানে ৫২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
 
এদিকে তিন ঘণ্টার বৃষ্টিপাতেই নাকাল রাজধানীবাসী। ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে রাজধানীর অধিকাংশ এলাকায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। বিশেষ করে মিরপুর, ধানমন্ডি, উত্তরা, রামপুরা, মালিবাগসহ পুরান ঢাকার বেশিরভাগ সড়কেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে স্বাভাবিক গতিতে যানবাহন চলতে না পারায় সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজট। এতে সকালে ঘর থেকে বেরিয়েই কর্মজীবী, শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েছেন।
 
বেলা ১১টা নাগাদও সড়কগুলো থেকে পানি নামেনি। অন্য জলাবদ্ধতার রেকর্ড ঘেঁটে দেখা যায়, এ পরিমাণ বৃষ্টিপাতের পর রাজধানীর সড়ক চলাচলের উপযোগী হতে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা সময় লেগে যায়। আর এতে যে যানজটের সৃষ্টি হয় তা দিনভরই রাজধানীবাসীর ভোগান্তির কারণ হয়। কখনো কখনো মধ্যরাত পর্যন্ত লেগে থাকে যানজট।  
 
মনিপুরীপাড়ায় ছোট্ট তাহমিনাকে নিয়ে স্কুলে যাচ্ছিলেন মা তহুরা খানম। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় রিকশাও পাচ্ছিলেন না তারা। মাথার ওপরে ছাতা থাকলেও মা-মেয়ের পা ডুবে আছে রাস্তার ময়লা পানিতে। এ প্রতিবেদকে বলেন, মেয়েটা ভিজেই গেলো। রাজধানীতে যদি এভাবে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি, সেটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।

ব্যাংকে দরকারি কাজে যাচ্ছিলেন ষাটোর্ধ্ব আহমেদ বেপারি। বাড়ির বাইরে বেরিয়েই দেখেন রাস্তায় পানি। মহল্লার ভেতরের রাস্তা হওয়ায় রিকশা ছাড়া উপায় নেই এ পানি ডিঙানোর। কিন্তু ঘণ্টাখানেক দাঁড়িয়ে থেকেও কোনো রিকশা না পেয়ে হাঁটু পানি ভেঙেই কাজীপাড়া এসেছেন। বাংলানিউজকে বলেন, এভাবে আর কতদিন? জলাবদ্ধতার কারণে এখন ঘর থেকে বের হওয়াই মুশকিল।
 
আবহাওয়া অফিস বলছে, মধ্যপ্রদেশ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি দুর্বল লঘুচাপে পরিণত হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমি বায়ুর অক্ষ রাজস্থান, লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত। যার একটি বর্ধিতাংশ উত্তর পশ্চিম বঙ্গোপসাগর পর্যন্তও বিস্তৃত। তাই মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর কম সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে দুর্বল থেকে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।
 
মৌসুমী বায়ুর এ অবস্থানের কারণে চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেট, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা এবং ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। একইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে। বর্ষণের প্রবণতা আগামী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকলেও ধীরে ধীরে এটি কমে আসবে। তবে আগামী সপ্তাহের শুরুতে আবারো বাড়তে পারে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১১৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০১৭
ইইউডি/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।