ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

বিএনপির আমলে বঙ্গবন্ধুর খুনিরা আর্থিক ভাতা পেতো

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০১ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৭
বিএনপির আমলে বঙ্গবন্ধুর খুনিরা আর্থিক ভাতা পেতো

ঢাকা: ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর বিচার প্রক্রিয়া ডিপ ফ্রিজে চলে গিয়েছিল। বিএনপি-জামায়াত জোটের ক্ষমতার শেষ দিন পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর খুনিরা আর্থিক ভাতা পেতো।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল একথা বলেন।

রোববার (২০ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের শহীদ এসআই শিরু মিয়া মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনাসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এ আলোচনাসভার আয়োজন করে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।

মন্ত্রী বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হঠাৎ করেই শাহাদাত বরণ করতে হয়নি। যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা মেনে নিতে পারেনি তারা গভীর ষড়যন্ত্র করে ঘাপটি মেরে বসে ছিল। কারা ষড়যন্ত্র করেছে এটা আয়নার মত পরিষ্কার। ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধু খুনের বিচার শুরু করলেন। অথচ ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর বিচারপ্রক্রিয়া ডিপ ফিজে চলে গেল। তাদের ক্ষমতার শেষ দিন পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর খুনিরা আর্থিক ভাতা পেয়েছে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর খুনের বিচার শুরু করলেন এবং শাস্তি কার্যকর করলেন। এ বিচারের মাধ্যমে আমরা আমাদের কপালের কালো দাগটি মুছে ফেলতে সক্ষম হয়েছি। আসামিদের মধ্যে যারা পলাতক, তাদেরকে ফেরত আনার চেষ্টা অব্যাহত আছে।

পুলিশ মহাপরিদর্শক(আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক বলেন, একটি দেশ একটি জাতি গঠনে একজনই নেতৃত্ব দেন। একজনই জাতির পিতা থাকেন। এ নিয়ে বিতর্কের অবকাশ নেই।

যারা স্বাধীনতা চায়নি, তারাই বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রূপ নিয়ে আত্মপ্রকাশ করে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। এই চক্রটি বিভিন্ন সময় ইসলামের নামে মিথ্যা কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে। তারা একসময় বলেছে, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এলে মসজিদে উলুধ্বনি হবে, মিয়াভাইকে দাদা ডাকতে হবে। কিন্তু এই সরকার ক্ষমতায় এসেছে, এখন জনগণই বিবেচনা করবে তারা সত্যবাদী নাকি প্রতারক।

এই মিথ্যাবাদী ও প্রতারকদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ বা সমর্থন থাকা উচিৎ কি না প্রশ্ন রাখেন তিনি।

মুখ্য আলোচক হিসেবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অধ্যাপক হারুন অর রশীদ বলেন, শুধুমাত্র পথভ্রষ্ট সেনারাই নয়, অন্যরাও জড়িত ছিল। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড ছিল সুপরিকল্পিত। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর কারা ক্ষমতায় এসেছে, কারা খুনিদের পুনর্বাসন করেছে, প্রশ্রয় দিয়েছে এটা পরিষ্কার।

বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ’৭১ এ স্বাধীনতা অর্জনের আগে প্রায় হাজার বছর এ অঞ্চলের মানুষ শোষিত হয়েছে। এ দেশকে আবার নেতৃত্বহীন করে দিতেই ’৭৫ এ বঙ্গবন্ধুকে খুন করা হয়।

অতিরিক্ত আইজিপি মোখলেসুর রহমান বলেন, ’৭৫ এ যে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল সে ষড়যন্ত্র এখনো চলছে। গত নির্বাচনের আগ মুহূর্তে একটি স্বার্থান্বেষী মহল জ্বালাও-পোড়াওয়ের মত যে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড শুরু করেছিল বাংলাদেশ পুলিশ স্বাধীনতার অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে সেসব রুখে দিয়েছিল।

এ রাষ্ট্রের ভিত নিয়ে টানাটানি করতে দেব না আমরা। সকল অপশক্তিকে প্রতিহত করতে পুলিশ বাহিনীকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান তিনি।

র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ বলেন, বাঙালি মানেই বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিতর্ক করা মানে বাঙালি জাতির আরো পিছিয়ে যাওয়া।  

প্রেতাত্মাদের পরাজিত করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সকলকে আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানান তিনি।

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধু কোনো ব্যক্তি নন, তিনি একটি প্রতিষ্ঠান, একটা ইতিহাস। স্বাধীনতাবিরোধীরা দীর্ঘ ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেছিল। পরবর্তীকালে ইতিহাসকেও বিকৃত করা হয়েছে। সেই শক্তিই বিভিন্ন সময় হরকাতুল জিহাদ, জেএমবি, নব্য জেএমবিসহ বিভিন্ন রূপে সহিংসতার চেষ্টা চালাচ্ছে।

নাশকতাকারীদের আইনের আওতায় আনা কোনন রাজনৈতিক কাজ নয়, এটা পেশাদারিত্ব মন্তব্য করে তিনি বলেন, যত ষড়যন্ত্রই হোক বঙ্গবন্ধুকে ধারণ করে, তার স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে আমরা এগিয়ে যাব।

ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত আইজিপি জাভেদ পাটোয়ারী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব কামাল উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২২০০ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৭
পিএম/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।