ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

প্রধানমন্ত্রীকে হত্যাচেষ্টার দায়ে ১০ জনের মৃত্যুদণ্ড

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৩৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৭
প্রধানমন্ত্রীকে হত্যাচেষ্টার দায়ে ১০ জনের মৃত্যুদণ্ড

ঢাকা: গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার দায়ে ১০ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড, একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও তিনজনকে ১৪ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। এছাড়া ৯ জনকে একই ঘটনার বিস্ফোরক আইনের অন্য মামলায় ২০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

গোপালগঞ্জ সদর থানার বিশেষ ক্ষমতা আইনের হত্যাচেষ্টা মামলাটিতে ১০ আসামিকে গুলি করে মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর করতে বলেছেন ট্রাইব্যুনাল।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- ওয়াসিম আক্তার ওরফে তারেক ওরফে মারফত আলী, রাশেদ ড্রাইভার ওরফে আবুল কালাম ওরফে রাশেদুজ্জামান ওরফে শিমন খান, ইউসুফ ওরফে মোসাহাব মোড়ল ওরফে আবু মুসা হারুন, শেখ ফরিদ ওরফে মাওলানা শওকত ওসমান, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আব্দুল হাই ও মাওলানা আব্দুর রউফ ওরফে আব্দুর রাজ্জাক ওরফে ওমর।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত মেহেদী হাসান ওরফে আব্দুল ওয়াদুদ ওরফে গাজী খানকে দশ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে।

আসামি আনিসুল ইসলাম, মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ও সারোয়ার হোসেন মিয়াকে ১৪ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি দশ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর করে কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জঙ্গি নেতা মুফতি আব্দুল হান্নানের অন্য মামলায় ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় এ মামলা থেকে তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

কোটালীপাড়া থানার বিস্ফোরক আইনের মামলায় ২০ বছর করে সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- ইউসুফ ওরফে মোসাহাব মোড়ল ওরফে আবু মুসা হারুন (পলাতক), আনিসুল ইসলাম, মেহেদী হাসান ওরফে আব্দুল ওয়াদুদ ওরফে গাজী খান, ওয়াসিম আক্তার ওরফে তারেক ওরফে মারফত আলী, মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান, মাহমুদ আজহার ওরফে মামুনুর রশিদ, রাশেদ ড্রাইভার ওরফে আবুল কালাম ওরফে রাশেদুজ্জামান ওরফে শিমন খান, শাহনেওয়াজ ওরফে আজিজুল হক ও শেখ এনামুল হক (পলাতক)।

রোববার (২০ আগস্ট) ঢাকার ২ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মমতাজ বেগম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভার কাছে ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে হত্যাচেষ্টা ও ৮০ কেজি ওজনের বোমা উদ্ধারের বিস্ফোরক আইনের মামলা দু’টির এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডের রায়ে ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪ এর ১৫ (১)(এ)(বি)(সি)/২৫(ডি) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে ওইসব ধারা অনুসারে প্রত্যেক আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলো। হাইকোর্ট বিভাগের অনুমোদন সাপেক্ষে মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসারে গুলি করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হোক’।

২০০০ সালের ২২ জুলাই কোটালীপাড়ার শেখ লুৎফর রহমান সরকারি আদর্শ কলেজ মাঠ প্রাঙ্গনে স্থানীয় আওয়ামী লীগের জনসভার আগে ৭৬ কেজি ওজনের একটি শক্তিশালী বোমা পুঁতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল।
 
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, কোটালীপাড়া সফরের অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শেখ লুৎফর রহমান সরকারি আদর্শ কলেজ মাঠ ভাষণ দেওয়ার কথা ছিল। দু’দিন আগে ২০ জুলাই কলেজ প্রাঙ্গনে জনসভার প্যান্ডেল তৈরির সময় শক্তিশালী বোমার অস্তিত্ব পাওয়া যায়। পরে ওই কলেজের উত্তর পাশে সন্তোষ সাধুর দোকানঘরের সামনে থেকে সেনাবাহিনীর একটি দল ৭৬ কেজি ওজনের বোমাটি উদ্ধার করে।
 
পরদিন ২১ জুলাই গোপালগঞ্জ সদর থেকে ৮০ কেজি ওজনের আরও একটি শক্তিশালী বোমা উদ্ধার করা হয়।

এসব ঘটনায় পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করা হয়েছিল।
 
২০০১ সালের ০৮ এপ্রিল সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার মুন্সি আতিকুর রহমান গোপালগঞ্জের আদালতে মুফতি আব্দুল হান্নানসহ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১০ সালে মামলা দু’টি ঢাকার ২নং দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়।
 
মামলার ৮৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ৬৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। গত ১০ আগস্ট রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপন শেষে ১৭ আগস্ট রায়ের দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৭
এমআই/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।