ইতোমধ্যে রাস্তাঘাট, জমির ফসল পানিতে ডুবে গেছে। একমাত্র আবাসস্থল সেটিও বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।
গত কয়েকদিন খেয়ে না খেয়ে কোনো রকমে জীবনধারণ। অসহায় বৃদ্ধ মানুষটি এসেছেন উপজেলার মধুপুর ইউপির সন্তোষপুর গ্রামের চাইরআনটারির মোকলেছ মিয়া (৭০)।
বদরগঞ্জের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের এফডাব্লিউএস (ফ্রেন্ডস ওয়েল ফেয়ার সোসাইটি) একটি টিম বুধবার (১৬ আগস্ট) সরেজমিনে গিয়ে অসহায় মোকলেছ মিয়ার হাতে নগদ অর্থ, চাল-ডাল, চিড়া, স্যালাইন ও পানি বিশুদ্ধকরন ট্যাবলেট দিয়ে আসেন। পরে টিমের সদস্যরা অসহায় এই বৃদ্ধ মানুষটিকে আসতে বলেন তাদের নিজস্ব কার্যালয়ে।
শনিবার (১৯ আগস্ট) সকালে কথা হয় বদরগঞ্জ ডাকবাংলো চত্বরে ত্রাণ নিতে আসা বানভাসি অসহায় মোকলেছ মিয়ার সঙ্গে।
তিনি জানান, মুই অসহায় মানুষ। মোর চার ব্যাটা। কেউ মোর পাকে দেখে না। এই ক্লাবের কয়েকটা ছইল সেদিনও মোর বাড়িত যায়য়া খাবার দিয়া আসছিল। আইজও মোর ফির ডাকাইছে। আল্লাহ্ ওমার ভাল করবে।
কথা হয় ত্রাণ নিতে আসা পৌরশহরের জামুবাড়ি যাদুনগর মহল্লার রাবেয়া বেগম (৫২) সাথে। তিনি জানান, বাবা মুই খায়া না খায়া আছু, এই ছইলগুল্যা মোক ডাকে আনি খাবার দিছে।
তিনি আরও জানান, মুই মুর্খ মানুষ। নেতারা বাদে কেউ যদি সাহার্যের হাত বাড়ে থাকে এর্যায় বাড়াইল।
কথা হয় এফডাব্লিউএসের (ফ্রেন্ডস্ ওয়েল ফেয়ার সোসাইটি) অন্যতম সদস্য খোরশেদ আলম, জিয়াউর রহমান, নাহিদ নওয়াজ তসলিম (লিমন), পলাশ সরকার, রেজাউল ইসলাম ও ফারুক হোসেন বাবুর সঙ্গে, তারা জানান, কয়েকদিন হতে বিভিন্ন ইউনিয়নে ত্রাণ দেওয়ার পাশাপাশি শনিবার স্থানীয় ডাকবাংলো চত্বরে ২ হাজার বানভাসি অসহায় মানুষদের এক বেলা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তারা জানান, বানভাসি অসহায় মানুষদের কষ্ট লাঘবে আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। আমরা আশা করবো বদরগঞ্জের অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, সামাজিক সংগঠন ও স্বচ্ছল মানুষরা যদি এই বানভাসি অসহায় মানুষদের পাশে এসে দাঁড়ায় তাহলে তারা খুব উপকৃত হবেন।
বদরগঞ্জ রিপোর্টার্স ক্লাবের সভাপতি প্রভাষক কামরুজ্জামান মুক্তা বাংলানিউজকে জানান, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এফডাব্লিউএস যেভাবে বানভাসি অসহায় মানুষদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে, এটি শিক্ষনীয়। সবার উচিত বানভাসি মানুষদের পাশে দাঁড়ানো।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৭
এএটি/