ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধের সক্ষমতা এখনো পুলিশের নেই’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২২ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৭
‘সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধের সক্ষমতা এখনো পুলিশের নেই’

ঢাকা: দেশে সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধ করার সক্ষমতা এখনো পুলিশের নেই বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া।

শনিবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে এফডিসিতে আয়োজিত বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

‘কিশোর অপরাধ রোধে সোশ্যাল মিডিয়ার অবাধ ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ জরুরি’ শীর্ষক এ স্কুল বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করে ব্র্যাক, এটিএন বাংলা ও ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমাদের জননিরাপত্তার বিবেচনায় সাইবার অপরাধ একটি হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং দিনে দিনে এ প্রবণতা বাড়ছে। কিভাবে এ অপরাধ প্রতিরোধ করা যায় তা ভাবার সময় এসেছে। আসলে বলা বাহুল্য, সাইবার অপরাধ প্রতিরোধ করার সক্ষমতা এখনো আমাদের হয়নি, তবে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের দেশেও সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট নামে একটি আইনের কাজ চলছে।

তিনি বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, তথ্যপ্রযুক্তির যুগে তথ্যের অবাধ আদান-প্রদান বন্ধের উপায় নেই। তবে কিছু কিছু অ্যাপস ব্যবহারে বিধিনিষেধ থাকা জরুরি। কিছু কিছু অ্যাপস যেমন- হোয়াটসঅ্যাপ, থ্রিমা, টেলিগ্রাম, ভাইবারে কি হচ্ছে আমরা জনতে পারছি না। আমাদের জননিরাপত্তা নিশ্চিত করে এ ধরনের অ্যাপস কিভাবে ব্যবহার করা যায় এসব বিষয়ে আমাদের সরকার বিশেষ করে আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী চিন্তা করছে।

এসব অ্যাপস প্রোভাইডারদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় চুক্তির মাধ্যমে ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।

সাইবার সিকিউরিটি আইন হলেই এসব অ্যাপস ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা যাবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, শুধুমাত্র আইনের আওতায় ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। তবে আইনের আওতায় অ্যাপসগুলোর প্রোভাইডারদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি হলে সেটা সম্ভব হবে। কারণ, চুক্তি না থাকলে তারা আমাদেরকে তথ্য দেবেন না। তাহলে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাপসগুলোর যথেচ্ছ ব্যবহার বন্ধ করা যাবে।

একইসঙ্গে মানুষের বাক স্বাধীনতাও যেন খর্ব করা না হয় সে বিষয়টিও বিবেচনায় রাখতে হবে বলে মনে করেন ডিএমপি কমিশনার।

এর আগে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, কিশোর অপরাধ দিনদিন যেভাবে বেড়ে চলছে এটা আসলেই আমাদের জন্য হুমকির কারণ। কিশোর অপরাধের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া অন্যতম কারণ হতে পারে, তবে একমাত্র নয়। নৈতিক, ধর্মীয় অনুশাসন, পারিবারিক ও সামাজিক অনুশাসনের অবক্ষয়ের সঙ্গে বাড়তি যোগ হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া।

আপনার সন্তান দরজা বন্ধ করে কম্পিউটারে কি ব্যবহার করছে তা আপনাকে জানতে হবে, পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদেরকেও বিষয়টির দিকে নজর দিতে হবে।

তথ্যপ্রযুক্তির যুগে কোনোভাবেই সামাজিক মাধ্যম বন্ধ করা যাবে না। আগে ছিলো, মানি ইজ পাওয়ার, আর এখন বলা হয় ইনফরমেশন ইজ পাওয়ার। কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আইনের পাশাপাশি ধর্মীয়, পারিবারিক মূল্যবোধকে জাগ্রত করতে হবে।

ডিএমপির সাইবার ক্রাইম ইউনিটে প্রতিদিন একশ’র মতো অভিযোগ আসে। যার অধিকাংশই সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে টিনেজার তরুণীদের হেনস্তা করার। তবে এসব অভিযোগের ৯৯ ভাগ অভিযোগকারীই মামলায় যেতে চান না।

বিতর্ক প্রতিযোগিতায় পক্ষে অংশ নেয় সুনামগঞ্জের শহীদ আলী মডেল উচ্চ বিদ্যালয় এবং বিপক্ষে অংশ নেয় শেরপুরের নয়াবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়। প্রতিযোগিতা শেষে বিপক্ষ দলকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৭
পিএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।