প্রত্যক্ষদর্শী ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
প্রতক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার (১৮ আগস্ট) রাত ৯টার দিকে যশোর-বেনাপোল সড়কের ঝিকরগাছা থানা এলাকায় এসআই মোয়াজ্জেন চেকপোস্ট বসিয়ে যানবাহন তল্লাশি করেন।
ওই গাড়িতে এসআই মোয়াজ্জেনের সঙ্গে পুলিশের জ্যাকেট পরিহিত দেলোয়ার নামে এক বহিরাগতকেও দেখা যায়। প্রায় এক ঘণ্টা বাসটিকে দাঁড় করিয়ে চার বস্তা ভারতীয় মালামাল জব্দ করলেও অর্থের বিনিময়ে তা ছেড়ে দেন এসআই মোয়াজ্জেন।
স্থানীয়রা আরও জানান, এ সময় ওই বাসের যাত্রী সদ্য ভারত থেকে ফেরত ঢাকাগামী এক দম্পতির চারটি লাগেজ জব্দ করা হয়। এ সময় পুলিশ বলে, ওই লাগেজে প্রচুর মালামাল থাকায় তা ছাড়া যাবে না। পরবর্তীতে রাতেই তাদের কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা ও কয়েকটি দামি শাড়ি রেখে লাগেজ ছেড়ে দেয় পুলিশ।
এছাড়াও অন্য এক পাসপোর্টধারী যাত্রীর ব্যাগে অতিরিক্ত মালামাল আছে জানিয়ে তার কাছ থেকেও এসআই মোয়াজ্জেন চারটি থ্রি-পিস কেড়ে নেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় কয়েকজন আরও জানান, এসআই মোয়াজ্জেনের সঙ্গে অভিযানে অংশ নেওয়া পুলিশের জ্যাকেট পরিহিত দেলোয়ার পুলিশ সদস্য নন। তিনি পুলিশের পোশাক পরে বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়ান। মোয়াজ্জেনসহ স্থানীয় পুলিশ সদস্যদের আশকারায় বিভিন্ন সময় ‘ভুয়া’ পুলিশ সেজে অপকর্ম করেন তিনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দেলোয়ার বর্তমানে থানার কথিত পাবলিক ক্যাশিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আগে তিনি পুলিশের চাকরি করতেন। তবে বছর দশেক আগে তার চাকরি চলে যায়। সেই থেকে ‘পাবলিক ক্যাশিয়ার’র হিসেবেই দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
ঢাকাগামী এ কে ট্রাভেলসের একাধিক যাত্রী বাংলানিউজকে বলেন, বেনাপোলে ইমিগ্রেশন, কাস্টমস, প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের বিজিবি চেকপোস্টে চেক হওয়ার পরেও মাঝপথে গাড়ি থামিয়ে তল্লাশি করা এবং অর্থের বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়া চরম হয়রানি ছাড়া কিছুই নই।
ইকবাল হোসেন নামের এক যাত্রী বাংলানিউজকে বলেন, ‘চেকপোস্ট বসিয়েছে ভালো কথা। তারা অবৈধ মালামাল পেলে সংশ্লিষ্ট মালিককে রেখে দিয়ে গাড়ি ছেড়ে দিক। তবে এখানে প্রতিনিয়ত হয়রানি করা হচ্ছে। ’
জানতে চাইলে কথিত পাবলিক ক্যাশিয়ার দেলোয়ার বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমি ঝিকরগাছায় বেড়াতে এসেছিলাম। তখন স্যারের (এসআই মোয়াজ্জেন) সঙ্গে দেখা হয়ে যায়। তার অনুরোধে গিয়েছিলাম (গাড়ি তল্লাশি)। ’
তবে পুলিশের জ্যাকেট পরা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দেননি।
ঝিকরগাছা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোয়াজ্জেন হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমার আর বলার কিছু নেই, সাংবাদিক-পুলিশ ভাই-ভাই, একটু খেয়াল রাখবেন। ’
যোগাযোগ করা হলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) ফকির আজিজুর রহমান বলেন, দেলোয়ার পুলিশের জ্যাকেট পরে থাকলে সে অন্যায় করেছে। বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখবো।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৯ ঘণ্টা, ১৯ আগস্ট, ২০১৭
আরআর