ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

আমন চাষ নিয়ে অনিশ্চয়তায় বন্যার্ত বর্গাচাষিরা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৪৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৭
আমন চাষ নিয়ে অনিশ্চয়তায় বন্যার্ত বর্গাচাষিরা আমন চাষ নিয়ে অনিশ্চয়তায় বন্যার্ত বর্গাচাষিরা, ছবি: বাংলানিউজ

দিনাজপুর: বন্যার পানিতে তলিয়ে পচে নষ্ট হয়ে গেছে দিনাজপুর জেলার ৪৫ হাজার একর (হেক্টর) জমির আমনের চারা। ইতোমধ্যে বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করায় ফসলি জমিতে নতুন করে চারা রোপণের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা।

কিন্তু বর্গাচাষিরা আগের ঋণের টাকা পরিশোধ না করায় মহাজন ও এনজিও কর্মীরা নতুন করে তাদেরকে ঋণ দিতে চাচ্ছেন না। ফলে দ্বিতীয় দফায় চারা রোপণে অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছেন তারা।

গত মৌসুমের লোকসান পোষাতে বুক ভরা আশা নিয়ে এবার আমনের চারা রোপণ করেছিলেন চাষিরা। জেলার প্রায় ৯৮ শতাংশ জমিতে চারা রোপণ শেষও হয়েছিল। কিন্তু কয়েকদিনের মধ্যেই হঠাৎ টানা ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পানিতে সৃষ্ট বন্যায় তলিয়ে যায় ফসলি জমি। আমন চাষ নিয়ে অনিশ্চয়তায় বন্যার্ত বর্গাচাষিরা, ছবি: বাংলানিউজ

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ঘর-বাড়ি ও রাস্তা-ঘাটের চেয়েও আমনের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া কষ্টকর- বলছেন স্থানীয় কৃষকরা।

বিশেষ করে বর্গাচাষিরা আমনের চারা রোপণ করেছিলেন ঋণের টাকায়। ফলে নতুন ঋণের অনিশ্চয়তায় তাদের বুকভরা আশাও ভেঙে যেতে বসেছে।

দিনাজপুর সদর উপজেলার চেরাডাঙ্গী এলাকার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বর্গাচাষি মো. শামীম বাংলানিউজকে বলেন, ‘প্রতি মৌসুমে অন্যের ৫ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে ধান চাষ করি। গত মৌসুমে ফসলে ব্লাস্টসহ বিভিন্ন রোগ দেখা দিলে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি খরচ হয়। ফলনও তুলনামূলক অনেক কম হওয়ায় লোকসানে পড়ি’।

‘সে লোকসান পুষিয়ে নিতে স্থানীয় একটি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে এবার আমনের চারা কিনে রোপণ করেছিলাম। কিন্তু তিনদিনের মাথায় বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে জমি। যেসব চারা ওপরে ছিল, সেগুলোও দীর্ঘ সাতদিন পানিতে তলিয়ে থাকায় পচে নষ্ট হয়ে গেছে’।

শামীম বলেন, ‘বন্যা পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিকের দিকে। আবারও চারা রোপণে টাকার প্রয়োজন। কিন্তু কোনো ব্যক্তি বা এনজিও’র কাছ থেকে ঋণ পাওয়া যাচ্ছে না। যদি সরকার বিনামূল্যে চারা সরবরাহ করে, তাহলে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন বর্গাচাষিরা’।

দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. গোলাম মোস্তফা বাংলানিউজকে জানান, চলতি আমন মৌসুমে জেলার ১ লাখ ৭৫ হাজার ৮৫৯ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ করে ৯ লাখ ৯৩ হাজার ৭৫১ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে ৪৫ হাজার হেক্টর জমির ফসল। বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিকের দিকে এগোচ্ছে। ইতোমধ্যে কৃষি ও বীজ বিভাগের যৌথ উদ্যোগে কৃষকদের মাঝে নতুন করে চারা বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তিনি জানান, আগের রোপণ করা চারা পরিপক্ক না হওয়ায় তা থেকে এখনও গোড়া বের হয়নি। ফলে বন্যার পানির স্রোতে তলিয়ে থাকা চারাগুলোতে পচন ধরে নষ্ট হয়েছে। তবে যেসব জমির রোপণ করা চারা ঠিক রয়েছে, সেগুলোর সঠিক পরিচর্যায় কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৭
আরআর/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।