ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কমেছে ব্রহ্মপুত্র-ঘাঘট-তিস্তার পানি, বেড়েছে করতোয়ায়

পিয়ারুল ইসলাম হুমায়ূন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৭
কমেছে ব্রহ্মপুত্র-ঘাঘট-তিস্তার পানি, বেড়েছে করতোয়ায় কমেছে ব্রহ্মপুত্র-ঘাঘট-তিস্তার পানি

গাইবান্ধা: গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট ও তিস্তার পানি কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে করতোয়ার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। 

করতোয়া নদীতে পানির চাপে গত তিন দিনে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পাঁচ স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এছাড়া একটি পয়েন্টে মারাত্মক ধস নেমেছে।

এতে করে বাঁধ ও এর আশপাশের প্রায় ৫০টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

এ ছাড়া জেলার সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা, পলাশবাড়ী, গোবিন্দগঞ্জ ও সাদুল্যাপুর উপজেলার ৫৫টি ইউনিয়নের ৩৭৪টি গ্রামের প্রায় চার লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতন জীবনযাপন করছেন। তবে বন্যার্ত এসব মানুষের জন্য জেলায় ৯০টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বিশ হাজারেরও বেশি মানুষ এসব আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি ২০ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৭০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া ঘাঘট ২৩ সেন্টিমিটার কমে ৫২ সেন্টিমিটার ও তিস্তার পানি ১৫ সেন্টিমিটার কমে ৬৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে খরস্রোতা করতোয়ায় পানি ১৪ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৬৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।  

বন্যার পানিতে ২১ হাজার ৫৭২ হেক্টর জমির ফসল নিমজ্জিত হয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে ২৫৮টি। এছাড়া ১৯ আগস্টের প্রাথমিকের দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা স্থাগিত করা হয়েছে। বন্যার পানিতে এক হাজারেরও বেশি পুকুরের মাছসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, দোকানপাট, গাছপালা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তবে, পানির চাপে ১৮ আগস্ট গোবিন্দগঞ্জে উপজেলার মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের চর বালুয়া পয়েন্টের দুটি স্থানে ১’শ মিটার করে ও হাওয়াখানা এলাকায় দেড়’শ মিটার বাঁধ ভেঙেছে। এছাড়া ১৭ আগস্ট রাত ৮টার দিকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার করতোয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের রঘুনাথপুর পয়েন্টে ১০০ মিটার ধস দেখা দেয়। পরে সেনাবাহিনী ও পানি উন্নয়ন বোর্ড বাঁধের ধস ঠেকাতে কাজ শুরু করে।
কমেছে ব্রহ্মপুত্র-ঘাঘট-তিস্তার পানি

এরআগে, ১৫ আগস্ট আকম্মিকভাবে বন্যার পানি প্রবেশ করায় গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায় হোসেনপুর ইউনিয়নের চেরেঙ্গা বাঁধের ৫’শ ফিট ও কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের টোংরাদহ এলাকায় করতোয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ২০০ ফিট ভেঙে গেছে। এতে করে করতোয়া পাড়ের মানুষ পানিবন্দি হয়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।

গাইবন্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন, জেলার বিভিন্ন বাঁধের ধস ও ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পাশাপাশি কাজ করছে সেনাবাহিনী।

জেলা প্রশাসক গৌতম চন্দ্র পাল বলেন, এ পর্যন্ত বন্যার্তদের ৬’শ ২৬ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ১৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া মজুদ রয়েছে ৬৪ মেট্রিক টন চাল ও ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এছাড়া আরও ৫’শ মেট্রিক টন চাল ও ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।  

তিনি আরও বলেন, জেলায় বন্যার্তদের চিকিৎসার জন্য ৩৭টি মেডিকেল টিম ও ৯০টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এছাড়া জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর ও বেশ কিছু বেসরকারি সংস্থা পানি বিশুদ্ধকরণ প্লান্টের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৭
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।