ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

টিকিট পেয়ে উল্লাস, অব্যবস্থাপনায় ক্ষোভ

মহিউদ্দিন মাহমুদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৭
টিকিট পেয়ে উল্লাস, অব্যবস্থাপনায় ক্ষোভ টিকিট পেয়ে উচ্ছ্বসিত এক যাত্রী, অভিযোগ ঝাড়ছেন আরেকজন। ছবি: জিএম মুজিবুর

ঢাকা: আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ঢাকা থেকে ঘরে ফিরতে ইচ্ছুক মানুষের জন্য অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু করেছে পরিবহনগুলো।

শুক্রবার (১৮ আগস্ট) সকালে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে যাতায়াতের টার্মিনাল গাবতলী ও কল্যাণপুরের বাস কাউন্টারগুলোতে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে যাত্রীদের টিকিট কিনতে দেখা যায়। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর হাতে বাড়ি ফেরার টিকেট পেয়ে অনেককে উল্লাস-উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা যায়।

আবার অনেকে টিকিট না পাওয়ার জন্য অব্যবস্থাপনা ও জালিয়াতিকে দায়ী করে ক্ষোভ এবং হতাশা প্রকাশ করেন।

৩০ আগস্ট সপরিবারে বগুড়ায় যাওয়ার জন্য হানিফ এন্টারপ্রাইজের অগ্রিম টিকিট পেয়ে গেছেন মিরপুরের বাসিন্দা আরাফাত হোসেন।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ভোরে এসে হানিফের টিকিট কিনতে লাইনে দাঁড়িয়েছি। আড়াই ঘণ্টা লাইনে থেকে, ধাক্কাধাক্কি করে শেষ পর্যন্ত টিকিট পেয়েছি। এখন বেশ খুশি।

কিন্তু একই পরিবহনের অগ্রিম টিকিট নেওয়ার লাইনে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়েও না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করেন মোহাম্মদ ইয়াছিন ও সবুজ মিয়া নামের দুই যাত্রী।

দীর্ঘ অপেক্ষার পর বেলা সাড়ে ১০টার দিকে মোহাম্মদ ইয়াছিন বলেন, সকাল সাড়ে ৭টা থেকে অনেক সময় লাইনে দাঁড়িয়েছি। ১০টার দিকে শুনলাম ৩০ ও ৩১ আগস্ট এবং ১ সেপ্টেম্বরের টিকিট শেষ।

বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করা ইয়াছিন হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ২৮ আগস্টের টিকিট পাচ্ছি, কিন্তু এই সময় তো ছুটি পাবো না। জানি না এবার বাড়ি যাবো কীভাবে?পরিবহনগুলোর কাউন্টারে যাত্রীদের ভিড়।  ছবি: জিএম মুজিবুরটিকিট কালোবাজারির অভিযোগ তুলে আরেক যাত্রী সবুজ মিয়া বলেন, ওরা এখন বলছে টিকিট নাই। কিন্তু সন্ধ্যার পর এলে ঠিকই ৭৫০ টাকার টিকিট ১২০০-১৫০০ টাকা বিক্রি করবে। গতবারও আমি এভাবে টিকিট কিনেছি। ওরা আসলে চালাকি করে বলে টিকিট নাই। ইচ্ছা করে বাস সংখ্যা কমিয়ে দেয়। পরে বেশি দামে বিক্রি করে।

ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এতো তাড়াতাড়ি টিকিট শেষ হয় কিভাবে?

তবে টিকিট কালোবাজারির অভিযোগ অস্বীকার করেন হানিফের কাউন্টারের ব্যবস্থাপকরা। তারা বলেন, যাত্রীদের চাপ বেশি। অনেক জায়গায় ট্রেন বন্ধ। আবার রাস্তা খারাপ হওয়ায় বাসের সংখ্যাও কম। ফলে টিকিটের চাহিদা অনেক বেশি। তাছাড়া বেশির ভাগেরই টার্গেট থাকে ঈদের আগের ২-৩ তিন দিনের টিকিট। সেই টিকিটগুলো শেষ হয়ে গেছে। ২৮ ও ২৯ আগস্ট বা তার আগের দিনগুলোর টিকিট এখনও আছে।  

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বন্যা ও বৃষ্টিতে রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বাসে যাতায়াতে আগের চেয়ে ২-৩ গুণ বেশি সময় লাগছে। সেজন্য বেশির ভাগ পরিবহন তাদের ঈদের সম্ভাব্য ট্রিপ সংখ্যাও কমিয়ে দিয়েছে। ফলে যাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী টিকিট সরবরাহ করতে পারছে না তারা।

এ বিষয়ে হানিফ এন্টারপ্রাইজের জেনারেল ম্যানেজার মোশাররেফ হোসাইন বাংলানিউজকে জানান, তাদের উত্তরাঞ্চলমুখী ৩০ ও ৩১ আগস্ট এবং ১ সেপ্টেম্বরের অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। পরিবহনগুলোর কাউন্টারে যাত্রীদের লাইনে।  ছবি: জিএম মুজিবুরতিনি বলেন, উত্তরাঞ্চলের অনেক জেলায় ট্রেন চলাচল বন্ধ। ফলে বাসের ওপর চাপ বেড়েছে। তাছাড়া রাস্তার খারাপ অবস্থার কারণে একেকটি ট্রিপের জন্য আমাদের অনেক বেশি সময় লাগছে। বাধ্য হয়ে ট্রিপ সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছি আমরা। সব মিলিয়ে যাত্রীদের চাপ বেশি হওয়ায় ঈদের আগের ২-৩ দিনের টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে।

এবার কোরবানির ঈদে সরকার নির্ধারিত ছুটি ১ থেকে ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। তবে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে এতে পরিবর্তন হতে পারে। ঈদের ছুটি শুরুর আগের দিন ৩১ আগস্ট থেকেই বেশিরভাগ বেসরকারি চাকরিজীবী সপরিবারে গ্রাম অভিমুখে রওয়ানা হন, এবারও তেমনই হবে বলে আশা করা হচ্ছে।


বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৭
এমইউএম/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।