ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সিংড়ায় বিপদ সীমার ৪৯ সেন্টিমিটার ওপরে পানি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৭
সিংড়ায় বিপদ সীমার ৪৯ সেন্টিমিটার ওপরে পানি বালির বস্তা ফেলে পানির আগ্রাসন ঠেকানোর চেষ্টা; ছবি: বাংলানিউজ

নাটোর: নাটোরের সিংড়ায় আত্রাই নদীর পানি গত ২৪ ঘন্টায় আরো ১১ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে বিপদ সীমার ৪৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।প্রতিদিনই পানি বাড়ছে একটু একটু করে।

এখন পর্যন্ত সিংড়া পৌর এলাকাসহ ৫টি ইউনয়নের বাইরে নতুন কোন এলাকা প্লাবিত হয়নি। তবে সিংড়ায় স্থাপিত পল্লী বিদুৎ সমিতির-১ এর উপকেন্দ্রের চারিদিকে বন্যার পানি বেড়েছে।

এই পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে যে কোনো মুহূর্তে বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে পানি ঢুকতে পারে।

এদিকে গত কয়েকদিনের বন্যায় সিংড়া পৌরসভাসহ পাঁচটি ইউনিয়ন এলাকায় অন্তত ১৭২টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের জন্য ১০ টন চাল ও নগদ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়েছে ত্রাণ মন্ত্রনালয়।

শুক্রবার (১৮ আগস্ট) তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১৭২টি সহ আরো ২০০ পরিবারের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করবেন।

ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে প্রতি পরিবারকে ২০ কেজি করে চাল, ৫০০ গ্রাম মশুরের ডাল, ৫০০ গ্রাম চিড়া, ২ প্যাকেট ওরস্যালাইন, এক প্যাকেট দিয়াশলাই ও ৫টি করে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হবে।

উপজেলা কৃষিবিভাগ সূত্র জানান, বন্যার পানিতে উপজেলার ৭২০ হেক্টর জমির রোপা আমন ধান তলিয়ে গেছে। তবে অনান্য ফসলের তেমন ক্ষতি হয়নি। অসময়ে বন্যার আবির্ভাবে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নিতে পারে।

সিংড়া উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সিংড়া পৌরসভাসহ উপজেলার বন্যা কবলিত এসব এলাকার ১৭২ টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের জন্য ত্রাণ সহায়তা হিসেবে ৩০ টন চাল ও নগদ ২ লাখ টাকা চাওয়া হলেও এখন পর্যন্ত পাওয়া গেছে ১০ টন চাল ও নগদ ২০ হাজার টাকা।

এছাড়া আপদকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলায় ১০ হাজার ওরস্যালাইন, ২০ হাজার প্যাকেট পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট এবং ১০০ অ্যাম্পুল সাপের কামড়ের প্রতিষেধক ইনজেকশন মজুদ রয়েছে।

পরিস্থিতি আবনতি হবার আশংকা বিবেচনায় আরো ২০ হাজার ওরস্যালাইন, ১০ হাজার প্যাকেট পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট এবং ২০০ অ্যাম্পুল সাপের কামড়ের প্রতিষেধক ইনজেকশন চাওয়া হয়েছে যা এখনও পাওয়া যায়নি।

সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল আহসান বাংলানিউজকে জানান, প্রতিমুহূর্তেই বন্যা পরিস্থিতি মনিটরিং করা হচ্ছে। দ্রুত ত্রাণ তৎপরতা শুরু হবে। আক্রান্ত এলাকার মানুষকে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। কন্ট্রোল রুম থেকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

নাটোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুধাংশু কুমার সরকার বাংলানিউজকে জানান, আত্রাই নদী ও লালপুরে পদ্মা নদীতে প্রতিদিন পানি বাড়ার বিষয়টি নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার থেকে আবহাওয়া শুষ্ক থাকায় এবং বৃষ্টিপাত না হওয়ায় আর নতুন করে কোনো এলাকা প্লাবিত হবে না বলে আশা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, আর দুই একদিন পানি বাড়তে পারে। তবে এরপর থেকে পানি কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৩৪৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৮
জেএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।