ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

দিনাজপুরে বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও দুই-একদিন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৭
দিনাজপুরে বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও দুই-একদিন বন্যার পানিতে ডুবে গেছে ঘরবাড়ি-ছবি-বাংলানিউজ

দিনাজপুর: দিনাজপুরে গত কয়েকদিনের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় জেলার সবকটি নদীর পানি বিপদসীমার নিচের দিকে নামছে। দু-একদিনের মধ্যে নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তবে এখনও বিভিন্ন এলাকার ৫ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরো দুই-একদিন সময় লাগবে।

বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পাশাপাশি বন্যাদুর্গত মানুষদের দুর্ভোগ বাড়ছে। ভেঙে গেছে জেলার অধিকাংশ রাস্তাঘাট।

বন্যার কারণে গত পাঁচদিন থেকে দিনাজপুরের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

সংকট দেখা দিয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির। পাশাপাশি বন্যা কবলিতের জ্বর-সর্দি, কাশি, আমাশয়, ডায়রিয়াসহ নানা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এসব রোগে আক্রান্ত বন্যার্তদের জন্য ২শ’৪৫টি স্বাস্থ্য ক্যাম্প চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছে।

এরইমধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ ১২ লাখ টাকা, ৩শ’ মেট্রিক টন চাল ও ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার (চিড়া, গুড়, মুড়ি, বিস্কুট) বিতরণ করা হয়েছে।

এছাড়া বন্যার্তদের পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, খাবার সেলাইনসহ প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে।

দিনাজপুরের ২শ’৬৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ১শ’৬৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজে এখনও বন্যার্তরা আশ্রয় নিয়ে আছে।

বন্যার পানিতে ডুবে গেছে ঘরবাড়ি-ছবি-বাংলানিউজদিনাজপুর শহরের মির্জাপুর বাস টার্মিনাল এলাকার রিনা আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, বন্যার পানি কমলেও ঘরবাড়ি এখনও তলিয়ে রয়েছে। এখনও কোমর পর্যন্ত পানি আছে।

বন্যার পানিতে ভেসে গেছে অনেক মালামাল। তারপরও যেসব মালামাল অবশিষ্ট রয়েছে তা উদ্ধারে চেষ্টা করছি। উদ্ধারকৃত মালামালগুলো নষ্ট ও পচে গেছে। সব মিলিয়ে ব্যাপক ক্ষতির মধ্যে পড়েছি। এবার বন্যার কারণে যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা কাটিয়ে উঠতে কয়েক বছর সময় লাগবে।

তিনি জানান, বন্যার কারণে সন্তানদের স্কুল বন্ধ রয়েছে। বাড়ির অন্য মালামালের সঙ্গে ভেসে গেছে তাদের বই-খাতা। সন্তানদের পড়াশোনা এখন অনিশ্চিত।

এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার তৌফিক ইলাহি জানান, বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে যেসব শিক্ষার্থীদের বই-খাতা বন্যার পানিতে ভেসে গেছে তাদের সঠিক তালিকা তৈরির জন্য বিদ্যালয়গুলোকে নির্দেশ দেওয়া হবে। সেই তালিকা অনুযায়ী মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হবে। তবে বই সরবরাহ কতদিনের মধ্যে সম্ভব হবে এ বিষয়ে তিনি কিছু জানাতে পারেননি।

এদিকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. মোখলেছুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, দিনাজপুরে বন্যা পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতি হয়েছে। ইতোমধ্যেই জেলায় বন্যার্তদের মধ্যে ১২ লাখ টাকা, ৩শ’ মেট্রিক টন চাল ও দুই হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, খাবার সেলাইনসহ প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছে। বরাদ্দ করা ত্রাণসামগ্রী পর্যায়ক্রমে আরও বিতরণ করা হবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫১ ঘণ্টা, ১৭ আগস্ট, ২০১৭
আরআর
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।