ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

চায়ের দোকানির নামে ‘সাদেক চত্বর’!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৭
চায়ের দোকানির নামে ‘সাদেক চত্বর’! ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সাদুল্যাপুর, গাইবান্ধা ঘুরে: চায়ের দোকানটি চলছে টানা ৩২ বছর ধরে। মালিক সাদেকের আচার-আচরণ বেশ অতিথিপরায়ণ। দু’টি গাছের ছায়াঘেরা পরিবেশে চা খেতে খেতে আড্ডা দেওয়ার স্থানটি তাই যেমন প্রিয়, তেমনি সাদেককেও পছন্দ করেন ক্রেতারা। ফলে সব সময়ই জমজমাট থাকে দোকানটি।  

সাদেককে ভালোবেসে এখন গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর বাজারের ভেতরের মোড়টিকে ‘সাদেক চত্বর’ নামে ডাকেন এলাকাবাসী। শিগগিরই নামটি স্থায়ী হয়ে যাবে বলেই বিশ্বাস তাদের।



‘পুরো সাদুল্যাপুরে সাদেক নামে আর কোনো চায়ের দোকানদার নেই। এখানে সাদেকের চায়ের দোকানের কথা বললে যে কেউ দেখিয়ে দেবে’-  কথাগুলো বলছিলেন খোদ সাদেক। হালকা গড়নের সাড়ে ৪ ফুট উচ্চতার মধ্যবয়সী মানুষটি নিজেই পুরো দোকানটি চালান।
 
সাদুল্যাপুর থেকে মাদারগঞ্জ যেতে হাতের ডানদিকে দুই রাস্তার মুখের সাদেকের চায়ের দোকানে গিয়ে দেখা গেছে, কৃষ্ণচূড়া ও রেনট্রি কড়ই গাছের ছায়াঘেরা মনোরম পরিবেশ সেখানে। এককোণে থেকে দোকানের সুরক্ষা দিচ্ছে গাছ দু’টি।

কয়েক বছর আগে নিজের হাতেই গাছ দু’টি লাগিয়েছেন বলে জানান সাদেক। বেশ বেড়ে উঠেছে এ ক’বছরেই।
ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমটিনের বেড়াঘেরা দোকানটিতে সব সময়ই ক্রেতাদের সমাগম থাকে। দোকানের সেলফে রাখা পুরনো টেলিভিশনটিও তাদের আড্ডার রসদ যোগায়। মূলত সাদেকের চা খেতেই আসেন সবাই। প্রয়োজনে সঙ্গে দু’একটা বিস্কিট নেন। এর সঙ্গে পান-সিগারেট ছাড়া অন্য কোনো খাবারের ব্যবস্থা নেই। তাতেই দিনে বিক্রি গড়ে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা বলে জানান সাদেক।
 
লাঙল প্রতীকের রাজনীতির সমর্থক সাদেক বলেন, ‘এ দোকানটিতে প্রথমে সারের ব্যবসা ছিলো। এরপর মনোহরির দোকান। পরের ৩২ বছর ধরে চায়ের ব্যবসা করছি আমি। এর আয়-রোজগারে স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে ভালোই আছি’।
 
দোকানের মেঝে এরশাদের আমলে পাকা করা। এখন সবই উঠে গিয়ে মাটির আস্তরণ পড়েছে। আড়ায় জমেছে মাকড়সার বাসা। ঘরটি যে বেশ পুরনো- তা দেখলেই বোঝা যায়।
 
ক্রেতাদের জন্য দোকানটিতে পাঁচটি ছোট আকৃতির টেবিলের দুই পাশে টুল পাতা। এতে একসঙ্গে জনাবিশেক লোক বসতে পারেন। এক কাপ চা খেতে এসে কেউ আধাঘণ্টা পার করলেও তাতে রা’ নেই সাদেকের। চায়ের অর্ডার করলে নিজেই তা টেবিলে টেবিলে পৌঁছে দেন।
 
কয়েকজন ক্রেতা বলেন, ‘বহুদিন ধরে চলায় সাদেকের এ দোকান লোকজনের মুখে মুখেই বেশ পরিচিত হয়ে উঠেছে। আমরাও সাদেকের নামে মোড়টিকে ‘সাদেক চত্বর’ বলে ডাকি। শিগগিরই এ নামটি স্থায়ী হয়ে যাবে বলে বিশ্বাস আমাদের’।
 
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৭
জেডএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।