ইতিমধ্যে সিংড়া পৌর এলাকাসহ শেরকোল, ডাহিয়া, কলম, তাজপুর ইউনিয়ন এলাকার অনেক এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বুধবার (১৬ আগস্ট) সরজমিনে গিয়ে এই চিত্র দেখা যায়।
পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সিংড়া-বলিয়াবাড়ি স্থানীয় সড়কের যান চলাচল। সেখানে জিও ব্যাগ দিয়ে অনেক স্থানে সড়ক রক্ষার চেষ্টা করছে সড়ক বিভাগ। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
এদিকে এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় বুধবার (১৬ আগষ্ট) বেলা সাড়ে ১১টার সময় জরুরি বৈঠক করাসহ বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। খোদ প্রতিমন্ত্রী বুধবার গণমাধ্যমকে বলেছেন, গত দু’দিনে উত্তরাঞ্চল থেকে নেমে আসা পানি বেড়ে আত্রাই নদীর পানি বিপদসীমার ৩৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এ কারণে নদী তীরবর্তী এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,বাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনায় পানি ঢুকে পড়েছে। তবে দুর্যোগ মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলেও জানান তিনি।
কৃষি অফিস হলরুমে উপজেলা প্রশাসনের বর্ন্যা ও দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবেলা সংক্রান্ত জরুরি সভায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহম্মেদ পলক, উপজেলা চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম, ইউএনও মোহাম্মদ নাজমুল আহসান, পৌর মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌসসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, স্থানীয় ১২ জন চেয়ারম্যানসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। পরে তারা উপজেলার বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা পরিদর্শন করেন।
সিংড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নাজমুল আহসান বাংলানিউজকে বলেন, ইতিমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্যোগ মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন বিভিন্ন আক্রান্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
তিনি বলেন, আত্রাই নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে প্রায় ২৬টি সুতিজাল পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করছে। সেগুলো অপসারণের জন্য সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তার নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। বন্যা ও দুর্যোগ মোকাবিলায় ও পানি প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে নাটোরের সিংড়া উপজেলার আত্রাই নদীসহ সকল স্থান থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সকল অবৈধ সুতি জালসহ সকল বাধা অপসারণের নির্দেশ দিয়েছেন তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি।
নাটোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুধাংশু কুমার সরকার বাংলানিউজকে জানান, সোমবার (১৪ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে আত্রাই নদীতে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে শুরু করে। পরে রাতে ১০ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) দিনব্যাপী বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে থাকে।
এতে উপজেলার উত্তর দমদমা, ফেরিঘাট এলাকা, কলম, বিলদহর, কালিনগরসহ আত্রাই নদীর তীরবর্তী অধিকাংশ গ্রামে বাড়ির ভেতরে পানি প্রবেশ করেছে। কোন কোন বাড়ির উঠোন ও আশপাশ বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। বুধবার (১৬ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৬টা থেকে পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৩৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিলো।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৭
জেডএম/