ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পদ্মার পানি বাড়ছে, স্থিতিশীল হচ্ছে যমুনায়

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০১৭
পদ্মার পানি বাড়ছে, স্থিতিশীল হচ্ছে যমুনায়

ঢাকা: পাহাড়ি ঢলের স্রোত কমে যাওয়ায় দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোয় বন্য পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। তবে উজানের পানি নেমে আসায় মধ্যাঞ্চল এবং নিম্নাঞ্চলের নদীগুলোয় পানি বাড়ছে। এতে মধ্যাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, গঙ্গা-পদ্মা নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি আগামী তিন দিনে (৭২ ঘণ্টা) বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। এতে পদ্মা নদীর অববাহিকার জেলাগুলোয় বন্যা দেখা দিতে পারে।


 
তবে যমুনা নদীর পানি ২৪ ঘণ্টায় স্থিতিশীল হয়ে যাবে। এতে সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে বন্য পরিস্থিতি উন্নতি হবে। আর ব্রক্ষ্মপুত্র নদের পানি ৪৮ ঘণ্টায় হ্রাস পেতে পারে। অপরদিকে সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি হ্রাস ২৪ ঘণ্টায় অব্যাহত থাকতে পারে।
 
বুধবার (১৬ আগস্ট) সকাল ৯টা পর্যন্ত বিগত ২৪ ঘণ্টায় দেশের ৯০টি স্টেশনের মধ্যে ২৯টি পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
 
কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, উত্তরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে যাচ্ছে। আর যমুনা নদীর পানি কমতে থাকায় সিরাজগঞ্জেও উন্নতি হচ্ছে। তবে উজানের পানি নেমে আসায় পদ্মা-মেঘনা নদীর পানি বাড়বে। এতে মধ্যাঞ্চলসহ ভাটির জেলাগুলোয় বন্যা দেখা দিতে পারে।
 
এদিন পদ্মা নদীর পানি গোয়ালন্দ স্টেশনে ২১ সেন্টিমিটার বেড়ে ৭৭ এবং ভাগ্যকূলে ১৭ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
 
যমুনা নদীর পানি বাহাদুরবাদে ১ সেন্টিমিটার বেড়ে ১৩৪, কাজীপুরে ১৬ সেন্টিমিটার বেড়ে ১৫১, সারিয়াকান্দিতে ৯ সেন্টিমিটার বেড়ে ১২৬, সিরাজগঞ্জে ২০ সেন্টিমিটার বেড়ে ১৪৮ ও আরিচায় ২৩ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৫৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
 
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে দুবর্ল থেকে মাঝারি অবস্থায় বিরাজ করছে।
 
খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, সিলেট, রংপুর, ময়মনসিংহ ও রাজশাহী বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হাল্কা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।
 
দক্ষিণাঞ্চলে ভারী বৃষ্টির কারণে ওই অঞ্চলের নদ-নদীর উপর পানির প্রভাব পড়বে এবং বন্যা তরান্বিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র।
 
তবে আগামী দুই দিনে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা হ্রাস পেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
 
ক্ষয়ক্ষতি
চলমান বন্যায় দেশের ২১ জেলায় ৩২ লাখ ৮৭ হাজার মানুষ ও ফসলি জমি এক লাখ ৭২ হাজার ২১৭ হেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিবের চলতি দায়িত্বে থাকা মো. গোলাম মোস্তফা।
 
বুধবার সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে তিনি সাংবাদিকের বলেন, এখন পর্যন্ত প্রায় সাত লাখ ৫২ হাজার পরিবার আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মারা গেছে ৩৭ জন। এখন পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে এক হাজার ৫৯৯টি। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে চার লাখ ১১ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।
 
বন্যা মোকাবিলায় সরকারের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ৯ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত তিন হাজার ২৫৫ মেট্রিক টন চাল, এক কোটি ৩২ লাখ নগদ অর্থ, ১৬ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে।
 
যেখানে যতটুকু প্রয়োজন তা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ত্রাণ পেতে কারও যদি অসুবিধা হয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ০২১৫ ঘণ্টা, ১৭ আগস্ট, ২০১৭
এমআইএইচ/আরএ

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।