ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

চাল আমদানিতে শুল্ক হার কমিয়ে ২ শতাংশ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০১৭
চাল আমদানিতে শুল্ক হার কমিয়ে ২ শতাংশ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: বিদেশ থেকে চাল আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক হার কমিয়ে ২ শতাংশ নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। দু’এক দিনের মধ্যে এ বিষয়ে পরিপত্র জারি হলে আগের ১০ শতাংশের জায়গায় মাত্র ২ শতাংশ কার্যকর হবে।

একই সঙ্গে বিদেশ থেকে আরও ১৫ লাখ মেট্রিক টন চাল ও পাঁচ লাখ মেট্রিক টন গম আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।  
 
বুধবার (১৬ আগস্ট) সচিবালয়ে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সভা শেষে খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
 
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দফতরের প্রধানরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
 
সভায় সার্বিক খাদ্য পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, অকাল বন্যার কারণে হাওর অঞ্চলে ও ব্লাস্টে (ধান গাছের রোগ) ফসল নষ্ট হয়েছে। সার্বিক বন্যা পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন কারণে বোরো ফসলের এক কোটি ৯১ লাখ মেট্রিক টনের টার্গেট আমরা পূরণ করতে পারিনি। বোরো থেকে আট লাখ মেট্রিক টন চাল এবং সাত লাখ মেট্রিকটন চালসহ ১০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশষ্য সংগ্রহ করতে পারছি না।
 
তিনি জানান, এ পর্যন্ত দুই লাখ ছয় হাজার মেট্রিকটন বোরা ফসল গুদামে এসেছে। সব মিলে দুই লাখ ৭০ হাজার মেট্রিকটন বোরো ফসল গুদামে আসবে।
 
সার্বিক বন্য পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে যেভাবে বন্যা আসছে তা বিপদের অবস্থা। সব মিলিয়ে এবার ১৫ লাখ মেট্রিক টন চাল এবং পাঁচ লাখ মেট্রিকটন গম বিদেশ থেকে আমদানি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।  
 
‘আমদানির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলেও এই না যে আমরা খাদ্য সংকটে আছি। কোনো রকম খাদ্য সংকট নাই। আমাদের গুদামে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্যশস্য আছে। বাজারেও পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্যশস্য আছে। এমনকি ট্যারিফ কমিয়ে দেওয়ার পর ভারত থেকে চাল আসছে। এ পর্যন্ত ভারত থেকে দুই লাখ ৬০ হাজার মেট্রিকটন চাল এবং পাঁচ লাখ ৭০ হাজার টন এসেছে। কাজেই কোনো রকম খাদ্য সংকট নেই। চালের কোনো অভাবও নেই, খাদ্যের কোনো অভাবও নেই। ’
 
মন্ত্রী বলেন, আমরা কেবলমাত্র সাবধানতা অবলম্বনের জন্য, কোনো রকম সমস্যায় পড়তে না হয় তার জন্য গম ও চাল আমদানি করছি। তবে গম সব সময়ই আমদানি করতে হয়। ১৫ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানি করতে হচ্ছে, এটা কোনো সংকটের কারণে না। চলতি অর্থবছরের মধ্যে ১৫ লাখ মেট্রিকটন চাল আমদানি করা হবে।
 
‘একটি খুশির সংবাদ দিতে চাই’ উল্লেখ করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ট্যারিফ ২৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ, এরপর ১০ শতাংশ, সেখান থেকে কমিয়ে ৮ শতাংশ কমিয়ে দেওয়া হবে। অর্থাৎ ট্যাক্স মাত্র ২ শতাংশ থাকবে। সেই পরিপত্র আজকালের মধ্যে জারি হয়ে যাবে। তাতে  ভারতসহ আশেপাশের দেশ থেকে চাল আমদানির সম্ভাবনা খুব বেশি থাকবে।
 
এতে দাম কববে কিনা-এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, অবশ্যই। বাজারে দাম আরও কমবে। বাজারের দাম এখন খুব একটা বেশি নাই। এখন স্থিতিশীল অবস্থায় আছে। সবার ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আছে।  
 
মন্ত্রী বলেন, অধিকাংশ এসেছে, বাকিগুলো এ মাসেই চলে আসবে। কম্বোডিয়ার সঙ্গেও আড়াই লাখ মেট্রিকটন চালের চুক্তি হয়েছে, সেই চালের চুক্তিপত্র প্রক্রিয়াধীন। পারচেজ কমিটিতে যাবে। পারচেজে পাস হয়ে গেছে এলসি খোলার পর খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে চাল চলে আসবে।
 
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমদানির পরেও ১০ টাকা বা ৮ টাকা কমার কোনো অবস্থা হওয়ার বাংলাদেশে সম্ভাবনা নাই। ১০ টাকা ২০ টাকা কমে যাবে? চালের দাম এখন সবার ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আছে। এ নিয়ে কোনো রকম হা-হুতাশ নাই। স্থিতিশীল অবস্থায় আছে। ট্যাক্স ২ শতাংশ হয়ে গেলে দাম আরও কমে যাবে।  
 
কেজিতে ৪০ টাকা আসার সম্ভাবনা আছে কিনা একজনের এমন প্রশ্নের উত্তরে কামরুল ইসলাম বলেন, আমি আপনার এতো প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবো না। বললাম তো কোনো রকম হা-হুতাশ নাই। কোনো ক্রাইসিস নাই। মানুষ উৎকন্ঠিত না।
 
সেপ্টেম্বর মাস থেকে হতদরিদ্র ৫০ লাখ পরিবারের মধ্যে ১০ টাকা কেজিতে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়ার খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালু হবে বলে জানিয়েছৈন খাদ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, সেপ্টেম্বর থেকে তিন মাসের কর্মসূচি চলবে। ঈদের পর থেকেই দেওয়া শুর করবো।    
 
ওএমএস বন্ধ আছে কিনা- প্রশ্নে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের কোনো জায়গায় কার্পণ্য নেই। আমরা সব জায়গায় দিচ্ছি। হাওর ও বন্যা দুর্গত অঞ্চলে দেওয়া হচ্ছে। সব রকম বিতরণ চলমান আছে। কোনো বিতরণ আটকায় নাই, আটকাবার প্রশ্নই উঠে না।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০১৭/আপডেট: ১৭০৪ ঘণ্টা
এমআইএইচ/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।