ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

লালমনিরহাটে পানি কমলেও বেড়েছে দুর্ভোগ!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৭
লালমনিরহাটে পানি কমলেও বেড়েছে দুর্ভোগ! লালমনিরহাটে বন্যার্তদের অস্থায়ী ঘর। ছবি: বাংলানিউজ

লালমনিরহাটঃ লালমনিরহাটে বন্যার পানি নেমে গেলেও বন্যাদুর্গতদের দুর্ভোগ বেড়েছে কয়েক গুণ।

বন্যার্তদের পুনর্বাসনে মাঠে নেমে পড়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তিনটি অস্থায়ী ক্যাম্প। হাতীবান্ধায় রেল লাইনের নিচ দিয়ে স্রোত প্রবাহের কারণে বুড়িমারী স্থলবন্দরের সাথে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

তবে সদর উপজেলার তিস্তায় বিনষ্ট হওয়া লালমনিরহাট-রংপুর রেল লাইন জরুরি ভিত্তিতে মেরামত করে লালমনিরহাটের সাথে সারা দেশের রেল যোগাযোগ সচল করেছেন রেলওয়ে প্রকৌশল দফতর।

পানির তোড়ে বন্যা কবলিত এলাকাগুলোর রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ কালভার্ট ভেঙ্গে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। গোটা জেলার হাজার হাজার হেক্টর জমির আমন ধান খেত পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অসংখ্য মৎস্য খামারের মাছ ভেসে গেছে পানির স্রোতে। বন্ধ হয়ে গেছে দেড় শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদান কার্যক্রম। বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে পানি বাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ বন্যার্তদের জন্য ৫৪টি অস্থায়ী মেডিকেল টিম গঠন করেছে।

লালমনিরহাটে বন্যার্তদের অস্থায়ী ঘর।  ছবি: বাংলানিউজতবে বাড়ি ঘর থেকে পানি নেমে গেলেও দুর্ভোগ কমেনি বন্যা কবলিতদের। কাদা মাখা ঘরের বেড়া ভেঙ্গে পড়েছে। ভিজে গেছে ঘরের সমস্ত আসবাব পত্র। কারো কারো ঘর হেলে পড়েছে। প্রতিটি বাড়ির টয়লেট টানা বন্যায় নষ্ট হয়ে গেছে।   এতে বড় বিপাকে পড়েছেন নারীরা। তাদেরকে নতুন করে করতে হচ্ছে সব কিছু। আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া কেউ কেউ ঘরে ফিরলেও এখনো অনেকেই বাড়ি ফেরেননি।

টানা ৬ দিনের বন্যায় কর্মহীন এসব মানুষ পড়েছেন মহা বিপাকে। নিদারুণ অর্থ কষ্টে ভুগছেন তারা।

হাতীবান্ধা উপজেলার সিঙ্গিমারী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের কামাল হোসেন ও গড্ডিমারী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মুকুল হোসেন বলেন, বন্যার পানি নেমে গেলেও এখন আমাদের দুর্ভোগ বেড়ে যাচ্ছে। খেতে ধান পচে যাচ্ছে, ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। পরিবার-পরিজন নিয়ে আমরা মানবেতর জীবন-যাপন করছি।

আদিতমারী উপজেলার গোবর্দ্ধন গ্রামের মানিক ও আজিজুল বলেন, বন্যার পানির চাপে এলাকার সব রাস্তা-ঘাট ভেঙ্গে গেছে। ফলে চলাচলে আমরা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছি। এছাড়া বসত-বাড়ির মাটি ভেজা থাকার কারণে রান্না করা যাচ্ছে না। সব মিলে চরম বিপাকে পড়েছি আমরা।

লালমনিরহাটে বন্যার্তদের অস্থায়ী ঘর।  ছবি: বাংলানিউজসরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক,  রাজনৈতিক সংগঠন ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। তবে বন্যার্তদের দাবি ত্রাণ নয়, তিস্তার স্থায়ী বাঁধ চাই। আগামি বন্যায় উদ্ধার তৎপরতার জন্য প্রয়োজনীয় নৌকা ও স্পিডবোট সংরক্ষণের দাবি তুলেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সুশীল সমাজ।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক শফিউল আরিফ বাংলানিউজকে বলেন, এক লাখ পরিবার এ বন্যায় পানি বন্দি হয়ে পড়েছিল। বন্যা পরিস্থিতি অনেকটা উন্নতি হয়েছে। ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। আমরা প্রতিটি বন্যার্ত পরিবারকে সহায়তা দিতে চেষ্টা করছি। বন্যার্তদের পুনর্বাসনে সরকারি বিভিন্ন দফতরকে সহায়তা দিতে সেনাবাহিনী কাজ করছে। আগামী বন্যার জন্য প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৭
জেডএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।