ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বন্ধ থাকে বানভাসিদের চিকিৎসালয়!

বেলাল হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৭
বন্ধ থাকে বানভাসিদের চিকিৎসালয়! জরুরি মেডিকেল টিমের অস্থায়ী চিকিৎসালয়টি বন্ধই থাকছে বলে অভিযোগ বানভাসিদের। ছবি: আরিফ জাহান

বন্যাকবলিত এলাকা ঘুরে: বগুড়ার ধুনট উপজেলার ভাণ্ডারবাড়ি ইউনিয়নের উত্তরে শহরাবাড়ি ও দক্ষিণে মাধবডাঙা গ্রাম। তারও দক্ষিণে সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার মাইজবাড়ী ইউনিয়নের ঢেকুরিয়া গ্রাম।

যমুনার পানি ঠেকাতে এসব গ্রামের ওপর দিয়ে নির্মিত হয়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ।

ভাণ্ডারবাড়ি ইউনিয়নের শিমুলবাড়িয়া গ্রামের পূর্বদিক বরাবর যমুনার পানির দাপট কমাতে নির্মাণ করা হয়েছে স্পার।

স্পারের শুরুতেই রয়েছে কয়েকটি বড় মুদিখানার দোকান।

দোকানের কাছেই গড়ে তোলা হয়েছে জরুরি মেডিকেল টিমের অস্থায়ী চিকিৎসালয়। বানভাসি মানুষের চিকিৎসাসেবা দিতে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতাল এ উদ্যোগ গ্রহণ নিয়েছে।

কিন্তু মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) দুপুর ৩টা পর্যন্ত সেখানে কোনো চিকিৎসকের দেখা মেলেনি। গত চারদিনে ওই টিনের ঘরে কখনও কখনও ডাক্তার থাকলেও তারা কোনো ওষুধ দিতে পারেননি বলে অভিযোগ বানভাসিদের।  

দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের অবহেলায় ক্ষুব্ধ স্থানীয়রাও।  ছবি: বাংলানিউজসরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, কয়েকটি মুদি দোকান থাকায় স্থানটি প্রায়ই সময় বেশ জমজমাট থাকে। এছাড়া স্পার হয়ে নদীপথে নৌকাযোগে যাতায়াত করতেও এ স্থানটি ব্যবহার করেন মানুষ।

এখানে টিনের বেড়া ও ছাউনির ঘরে বানভাসিদের চিকিৎসাসেবা দিতে ‘জরুরি মেডিকেল টিম’ সাইনবোর্ড টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘরের পূর্বপাশের টিনের দরজা সকাল থেকেই বন্ধ বলে জানান স্থানীয়রা।

মেসার্স ইয়াসমিন স্টোরের মালিক মো. রুবেল মিয়া বাংলানিউজকে অনেকটা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘বানের পানি খেয়ে মানুষ নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। বিশেষ করে বেশিরভাগ বানভাসি মানুষের পেটের পীড়া দেখা দিচ্ছে। কিন্তু ডাক্তাররা আসেন না। এলেও তাদের কাছে কোনো ওষুধ থাকে না’।

কল্পনা, হেনা, শিপন, স্বপনসহ একাধিক বানভাসি মানুষও একই অভিযোগ করে বাংলানিউজকে বলেন, ‘শুধু লোক দেখানোর জন্য এ ধরনের সাইনবোর্ড টানিয়ে লাভটা কি? আমরা অসুখে মরি, আর তারা (ডাক্তার) আমাদের মতো অসহায় বানভাসিদের সঙ্গে মশকরা করেন’।

এজন্য ডাক্তারদের উপযুক্ত শাস্তি পাওয়া উচিত বলেও মনে করেন বানভাসি মানুষগুলো।

ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. রফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, সেখানে একজন স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও একজন সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শকের পালাক্রমে দায়িত্ব পালনের কথা। বানভাসি মানুষদের প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা দিতে প্রয়োজনীয় ওষুধও সরবরাহ করা হচ্ছে তাদের কাছে।

কেন তারা সেটি বন্ধ রাখেন? আর কেনই বা বানভাসি অসহায় মানুষদের তারা ওষুধ দেন না- বিষয়টি দ্রুত খতিয়ে দেখা হবে। এ ধরনের কাজ করে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।     

বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৭।
এমবিএইচ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ