ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

জানমাল বাঁচাতে ছুটছে লোকজন

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৭
জানমাল বাঁচাতে ছুটছে লোকজন অনেক পৌরানিক কাহিনী...

সানকিভাঙা, গাইবান্ধা থেকে: অনেক পৌরানিক কাহিনী মতো। এই বুঝি দৈত্য হাজির হবে, খেয়ে ফেলার জন্য। যে যে দিকে পারছে পালাচ্ছে, আর আর্তনাদ করছে।

বৃদ্ধ, যুবক, শিশু, রোগী, ভিক্ষুক থেকে বিত্তশালী সবাই সামিল সেই পালানোর মিছিলে। সবার হাতে মাথায় নানান মাল-সামান।

কারো মাথায়, চালের বস্তা, কেউ নিয়েছে তোশক-বালিশ।

মাথার বোঝার সঙ্গে কেউ নিয়েছে গরু-ছাগল, কারো হাতে তৈজসপত্র। ছোট্ট শিশুটিও খালি হাতে বের হয়নি। কিছুনা কিছু সঙ্গে নিয়েছে।

না নিয়ে যে কোনো উপায় নেই, যা নিবে হাতে তাই যাবে সঙ্গে। কারণ যা আসছে পৌরানিক দৈত্যের চেয়ে কোটিগুণে শক্তিশালী মহাদানব বলা চলে। দানবের হাত থেকে লুকিয়ে বাঁচার উপায় থাকতো কিন্তু মহাদানব রূপে অর্বিভূত যমুনার পানি যা পাবে সবই গিলে খাবে। খড়কুটো থেকে বাড়ি গাড়ি সবই তার খাবারের তালিকায়।

যা ফেলে যাবে তার কিছুই হয়তো আর ফিরে পাবে না। তাই সাধ্য নেই তবুও গরুর জন্য খড়ের বোঝাটা মাথায় তুলে নিয়েছেন বৃদ্ধা মা।

গরমে দরদর করে ঘাম ঝরছে বৃদ্ধা মায়ের শরীর থেকে। চোখের জল, আর মাথার ঘাম মিশে একাকার। তবুও যেন দাঁড়াবার জো নেই, কারণ দাঁড়ালেই নির্ঘাত মালামাল সমেত সলিল সমাধী।

সানকিভাঙার বাঁধ ভেঙেছে, হু হু করে আসছে পানি, মাত্র এক ঘণ্টায় অনেক বাড়ি তলিয়েছে। উজানে যমুনায় পানির  স্তর যে পর্যায়ে  রয়েছে সানকিভাঙায়, তাতে বকুল মিয়ার ঘর তলিয়ে যাবে। হাঁটু বা কোমর পানি হলে তারা এতো ভয় পেতনা বলে জানান।

সবাই ছুটছে শুকনো জায়গার খোঁজে। চোখের পলকে বদলে যাচ্ছে দৃশ্যপট। বিকেল ৩টায় যে পথ শুকনো ছিলো এক ঘণ্টা পর সেখানে বুক পানি জমল চোখের সামনে।

যে বাঁধে লোকজন পিঁপড়ার সারির মতো ছুটে আসছে, সেখানেও কিন্তু তিল ঠাঁই নেই। আগে তলিয়ে যাওয়া গ্রামের লোকজন তাবু গেড়েছে। বিকেল ৪টা দিকে অনেকরে পানিবন্দি হয়ে আটকা পড়তে দেখা গেছে। অনেকে বাঁচার জন্য কাকুতি-মিনতি করছিল।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৭
এসআই/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।