মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) সকাল দশটার দিকে হেলিকপ্টারে করে বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধ কমপ্লেক্সে পৌঁছেন প্রধানমন্ত্রী। দশটা ০৫ মিনিটে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ শেষে বঙ্গবন্ধুর কবর জিয়ারত করেন তিনি।
কালো পাড়ের সাদা শাড়ি পরে বুকে কালোব্যাজ ধারণ করে সমাধিবেদিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের পর স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি এই মহান নেতার প্রতি সন্মান জানিয়ে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন শেখ হাসিনা। তার পাশে ছিলেন বঙ্গবন্ধুর আরেক মেয়ে দেশের বাইরে থাকায় ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ড থেকে বেঁচে যাওয়া শেখ রেহানা।
এ সময় সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকষ দল জাতির পিতাকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। বিউগলে তখন করুণ সুর বেজে ওঠে।
এরপর আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনা দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধের বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। দলীয়ভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে জাতীয় সংসদের স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার আলাদাভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
অশ্রুসিক্ত প্রধানমন্ত্রী ছোট বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে সুরা ফাতেহা পাঠ ও জাতির পিতাসহ ১৫ আগস্টের সকল শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাতে অংশ নেন। মোনাজাতে দেশ ও জাতির শান্তি ও সমৃদ্ধিও কামনা করা হয়।
মোনাজাত শেষে প্রধানমন্ত্রী ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা বঙ্গবন্ধু ভবনে অবস্থান নেন। পরে বঙ্গবন্ধুর ৪২তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসের অন্যান্য কর্মসূচিতে অংশ নেন বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে।
বেলা পৌনে ১১টায় বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধ কমপ্লেক্স মসজিদে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও গোপালগঞ্জ জেলা পরিষদের আয়োজনে মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্যরা বঙ্গবন্ধু ভবনে বসে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে অংশ নেন।
সকল কর্মসূচিতে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়া, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন ও মুহম্মদ ফারুক খান, গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মীর্জা আজম, ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, বি এম মোজাম্মেল হক, এনামুল হক শামীম ও ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, দফতর সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, শেখ হেলাল উদ্দিন এমপি, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য এ এইচ এম খায়রুজ্জাসান লিটন, ইকবাল হোসেন অপু ও অনোয়ার হোসেন, বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক চিফ হুইপ আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ, শেখ কবির হোসেন, উম্মে রাজিয়া কাজল, কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদসহ কেন্দ্রীয়, গোপালগঞ্জ জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
পাশাপাশি মন্ত্রিপরিষদের সচিব মুহম্মদ শফিউল আলম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম, প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন, প্রেস সচিব ইহসানুল করিমসহ ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পরে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরাসহ সর্বস্তরের মানুষ জাতির পিতার সমাধি ফুলে ফুলে ভরিয়ে তোলে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচির অংশ হিসেবে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ও পরে বনানী কবরস্থানে ১৫ আগস্টের অন্যান্য শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
পরে বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার জন্মস্থান ও সমাধিসৌধস্থলে আসেন। দুপুরে ঢাকায় ফিরে যান তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে টুঙ্গিপাড়াসহ এর আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। জেলার কয়েকটি স্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৭
এমইউএম/এসআই/এএসআর