ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘বঙ্গবন্ধু হত্যায় অনেক রাঘব বোয়াল জড়িত’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৫৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৭
‘বঙ্গবন্ধু হত্যায় অনেক রাঘব বোয়াল জড়িত’ বক্তব্য দিচ্ছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা-ছবি: দীপু মালাকার

ঢাকা: বঙ্গবন্ধ‍ু হত্যাকাণ্ডকে ‘ক্রিমিনাল কন্সপিরেসি’ উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, ‘এ হত্যা মামলার বিচার করতে গিয়ে আমরা দেখেছি, এর সঙ্গে অনেক রাঘব বোয়াল জড়িত। কিন্তু তদন্তের দুর্বলতায় আমরা তাদের কিছু করতে পারিনি’।

মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) সকালে বঙ্গবন্ধুর ৪২তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আয়োজনে স্বেচ্ছায় রক্তদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আজ ১৫ আগস্ট, আমাদের ইতিহাসের একটি মর্মান্তিক দিন।

বাংলার মানুষ স্বাধীনতার স্থপতিকেই কেবল হারাননি, তার বিশ্বাস ও স্বজনকেও হারিয়েছেন। এ উপমহাদেশে দু’জন জাতির পিতা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। তাদের একজন মহাত্মা গান্ধী, অন্যজন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’।

‘মহাত্মা গান্ধী হিন্দু মৌলবাদী নাথুরাম গডসের হাতে নিহত হয়েছিলেন হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা বন্ধে আমরণ অনশন করে। সেবারের দাঙ্গায় ভারতে ১০ লাখের মতো মানুষ মারা গিয়েছিলেন। কেবল কলকাতায়ই ২ লাখ মুসলমান মারা যান। মহাত্মা গান্ধীর অনশনের পর দাঙ্গা বন্ধ হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে হিন্দু মৌলবাদী নাথুরাম গডসে তাকে হত্যা করেন’।

তিনি বলেন, ‘অন্যদিকে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল অত্যন্ত নিকৃষ্ট উপায়ে। পৃথিবীর ইতিহাসে এর চেয়ে নিকৃষ্ট হত্যাকাণ্ড আর নেই। দশ বছরের ছেলে শেখ রাসেল, দুই নবপরিণীতা পূত্রবধূ, স্বজন, তার ভাই শেখ নাসের- যাদের সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক ছিলো না, তাদেরকেও হত্যা করা হয়’।

সুপ্রিম কোর্টের আয়োজনে স্বেচ্ছায় রক্তদান অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি-ছবি-দীপু মালাকারবিচারপতি এস কে সিনহা বলেন, ‘সবচেয়ে বড় দুঃখজনক ঘটনা হলো- নিকৃষ্টতম এ হত্যাকাণ্ডের পর ইনডেমনিটি বিল এনে বিচারপতিদের পথ আটকে দেওয়া হয়, যেন এই হত্যাকাণ্ডের বিচার হতে না পারে। পরের সামরিক সরকার খুনিদের বিভিন্নভাবে পুনর্বাসন করেছে, পুরস্কৃত করেছে’।

‘তবে আমরা এই আদালতে ইনডেমনিটি বাতিল করেছি, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার করেছি’।

অনুষ্ঠানে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি আব্দুল ওয়াহহাব মিঞা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু জাতির জনক- এ নিয়ে কারো সন্দেহ নেই, বিতর্কেরও কিছু নেই। তিনি ছিলেন বলেই দেশ স্বাধীন হয়েছে। আমি দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি হয়েছি। দেশ স্বাধীন না হলে বড় জোর পাকিস্তান পর্যন্ত যাওয়া যেতো। কিন্তু দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি হওয়া সম্ভব হতো না’।

শুরুতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের  শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করেন হাইকোর্ট মাজারের পেশ ইমাম।
 
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৭
আরএম/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।