ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘প্রধান বিচারপতির কথা নিন্দনীয়’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০২ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০১৭
‘প্রধান বিচারপতির কথা নিন্দনীয়’ জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা ও দোয়া অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী

গাজীপুর: সংসদে যখন আইন পাশ করে বেতন বাড়ানো হয় তখন সংসদ খুব যোগ্য হয়, আর যখন বলা হয় সংসদে বিচারকদের ভুলের বিচার হবে তখনই সংসদ অযোগ্য লোকজনের কেন্দ্রে পরিণত হয়। 

সম্প্রতি ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতির সংসদ ও সংসদ  সদস্যদের নিয়ে করা সমালোনার জবাবে সোমবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে গাজীপুর জেলা পুলিশের উদ্যোগে জেলা পুলিশ লাইনে অনুষ্ঠিত জাতীয় শোক  দিবসের আলোচনা ও দোয়া অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক।  

মন্ত্রী বলেন, সংসদে আইন পাশ করে যখন বিচার বিভাগকে স্বাধীন করা হয় তখন সংসদ খুব যোগ্য হয়, তখন কোন সমস্যা নেই।

সমস্যা তখনই যখন বলা হয় বিচারকদের ভুলের বিচার হবে সংসদে।  

সম্প্রতি ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতি সংসদ ও সংসদ সদস্যদের নিয়ে কড়া সমালোচনা করেন।  

মন্ত্রী বলেছেন, বিচারকদের অপসারনে জুডিশিয়াল কাউন্সিল সংক্রান্ত রায়কে ঘিরে মাননীয় প্রধান বিচারপতি যে কথাগুলো বলেছেন, সেটা খুবই দুঃখের, বেদনার এবং নিন্দনীয়। প্রধান বিচারপতি বঙ্গবন্ধুকে কটাক্ষ করে বলেন, তিনি জাতির কোনো একক নেতা ছিলেন না, তিনি মুক্তিযুদ্ধের কোনো একক নেতা ছিলেন না।  

প্রধান বিচারপতিকে উদ্দ্যেশ্য করে মন্ত্রী আরো বলেছেন, আমি সংক্ষেপে বলতে চাই, বিচারকদের অপসারনে জুডিশিয়াল কাউন্সিল সংক্রান্ত রায় নিয়ে আপনি অযাচিতভাবে স্ব-প্রণোদিত হয়ে যে কাজগুলো করেছেন, তা আবার নিজের ইচ্ছায় প্রত্যাহার করে নিন। তা যদি না করেন তা হলে আমারা বুঝবো বিশেষ কোনো এজেন্ডা নিয়ে এ কাজ করেছেন। আর যদি প্রকৃতই কোনো এজেন্ডা নিয়ে থাকেন, আপনার দায়িত্ব আপনার রায় আপনি সংশোধন করুন।  

মন্ত্রী বলেছেন, আমরা দেশের মানুষকে ওয়াদা দিয়েছিলাম ক্ষমতায় গেলে দেশে ৭২’র সংবিধান পূন:প্রবর্তন করবো, ৭২’র সংবিধানে দেশকে ফিরিয়ে নিয়ে যাবো। এটা আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারেও ছিল। বঙ্গবন্ধু ৭২’র সংবিধানে লিখেছিলেন যে রাষ্ট্রপতি যদি ভুল করেন মহান জাতীয় সংসদ তার বিচার করবে, অভিসংসন (ইমপিজমেন্ট) করতে পারবেন। সেখানে যদি প্রধানমন্ত্রীও ভুল করেন তার বিচারের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের আছে। তিনি হলেন রাষ্ট্রের দ্বিতীয় ব্যক্তি। রাষ্ট্রের তিন নম্বর ব্যক্তি হলেন মাননীয় স্পিকার। তার বিচারও জাতীয় সংসদ করবে।  চার নম্বর ব্যক্তি হলেন প্রধান বিচারপতি।  

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু লিখেছেন, প্রধান বিচারপতি ভুল করলে তার বিচারও জাতীয় সংসদ করবে। এ প্রচেষ্টা পূরণের জন্য আমরা মহান জাতীয় সংসদে বললাম, জাতীয় সংসদই বিচারকদের বিচার করবে। এ ব্যাপারে মামলা হয়েছে, রায় হয়েছে। সুপ্রিমকোর্টে এ রায়ের বিরুদ্ধে আমরা আইনি লড়াই করবো। কোর্ট যদি মনে করেন বিচারকদের বিচার সংসদে করবে সেটাও বলতে পারেন, যদি মনে করেন তাদের বিচার জুডিশিয়াল কাউন্সিল করবে, তার মতও দিতে পারেন। আদালতের সে ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ করি না, অস্বীকারও করিনা। জুডিশিয়াল, বিচার বিভাগ স্বাধীন, তারা স্বাধীনভাবে বিচার করবে।
 

গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী মোজাম্মেল হক, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক দেওয়ান মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, গাজীপুর আদালতের পিপি হারিছ উদ্দিন আহমেদ, জিপি আমজাদ হোসেন বাবুল, গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০১৭ 
আরএস/বিএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ