ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বাঁধ মেরামতে চ্যালেঞ্জ দুর্গম কাঁচা রাস্তা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০১৭
বাঁধ মেরামতে চ্যালেঞ্জ দুর্গম কাঁচা রাস্তা প্রবল স্রোতের তোড়ে ভেঙেছে বেড়ি বাঁধ-ভিডিও-বাংলানিউজ

মোহনপুরের (রাজশাহীর) ভীমনগর বেড়ি বাঁধ ঘুরে: টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে উত্তাল হয়ে উঠেছে শিবনদী। হঠাৎ করেই ফুঁসে উঠে সব কিছু গিলে খেতে চাইছে। প্রবল স্রোতের তোড়ে এরইমধ্যে ভেঙে ফেলেছে রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার ভীমনগর গ্রামের বেড়ি বাঁধ। 

রোববার (১৩ আগস্ট) বিকেলে বাঁধ ভাঙার পর থেকে হু হু করে পানি ঢুকছে ভীমনগরে। প্রবল স্রোতে গ্রামের ফসল প্লাবিত হচ্ছে।

আকস্মিক এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে দিশেহারা হয়ে পড়েছে রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ড।  

ভাঙনস্থলে প্রবল স্রোত থাকায় কোনোভাবেই বাঁধের মেরামত কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। এর ওপর বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে দুর্গম কাঁচা রাস্তা। সংযোগ সড়ক থেকে বেড়িবাঁধ এলাকাটি তিন কিলোমিটার কাঁচা রাস্তায় ঘেরা। যেখান দিয়ে পায়ে হেঁটে যাওয়াই দায়। সেখানে বাঁধ মেরামতের ভারী কোনো মালামাল বহন করা প্রায় অসম্ভব।

বাঁধে যাওয়ার কাঁচা রাস্তা-ছবি-বাংলানিউজসরেজমিনে বাঁধ ঘুরে দেখা গেছে, একে তো কাঁচা রাস্তা, এরপরে আবার বৃষ্টির পানিতে কাঁচা রাস্তাটি কাদায় ভরে গেছে। রিকশা ভ্যান, সাইকেল বা মোটরসাইকেল নিয়ে বেড়িবাঁধ এলাকায় ঢোকা যাচ্ছে না। এছাড়া ভাঙন দেখতে আশপাশের গ্রামের উৎসুক জনতা সোমবার (১৪ আগস্ট) সকাল থেকেই সেখানে ভিড় করেছেন। এতে অতিরিক্ত চলাচলে কাঁচা রাস্তাটি আরও অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে।

বিশেষ করে ভীমনগর বেইলি ব্রিজের পাশ দিয়ে বেড়ি বাঁধের দিকে নামলে খালি পায়ে প্রায় তিন কিলোমিটার পথ হাঁটা ছাড়া কোনো উপায় নেই। আর বাঁধবাজার হয়ে ভীমনগর মসজিদের পাশ দিয়ে যেতে হলে হাঁটু পর্যন্ত কাপড় মুড়ে পৌঁছাতে হবে।

রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেসুর রহমান জানান, দুর্গম কাঁচা রাস্তাটি তাদের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওই রাস্তা দিয়ে তারা কিছুই বহন করতে পারছেন না। আর ভাঙনস্থলে প্রবল স্রোতও এখন ‘ফ্যাক্টর’ হয়ে দাঁড়িয়েছে।  

প্লাবিত এলাকা-ছবি-বাংলানিউজএরপরও তারা স্রোত কমার অপেক্ষা করছেন। কমলে কোনোভাবে ভাঙনস্থল দিয়ে পানি ঠেকানোর ব্যবস্থা করবেন। এরইমধ্যে আশপাশ থেকে মাটি কাটা হয়েছে। বালি ভর্তি জিও ব্যাগও তৈরি করা হচ্ছে। স্রোত কমলেই এগুলো ফেলতে শুরু করবেন।  

তাই রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার ভীমনগর থেকে শিবনদীর বেড়ি বাঁধ ভাঙার পর সোমবার বিকেলে পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। প্রবল স্রোতের তোড়ে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।  

রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রহিমা খাতুন জানান, ভীমনগর বেড়ি বাঁধ ভেঙে এই পর্যন্ত ৬শ' ৭৯ বিঘা জমির ফসল প্লাবিত হয়েছে। এরমধ্যে রোপা-আমন, রোপা-আউশ, পটল, করলা, বাঁধাকপিসহ বিভিন্ন সবজির খেত রয়েছে। কেবল পান বরজই রয়েছে ২ হেক্টর জমিতে।

ডুবেছে পানের বরজ-ছবি-বাংলানিউজধুরইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজিমউদ্দিন সরকার বলেন, রোববার বিকেল থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত উপজেলার ধুরইল ইউনিয়নের ভীমনগর, লক্ষ্মীপুর, পালসা, খানপুর, মজলিশ বাড়ি, মল্লিকপুর, পিয়ারপুর এবং একই উপজেলার ঘাষিগ্রাম ইউনিয়নের মহিষকুণ্ডি, শ্যামপুর, আতা নারায়ণপুর, ঘাষিগ্রাম, পাইকপাড়াসহ দুই ইউনিয়নের প্রায় অর্ধশত গ্রামে পানি ঢুকে পড়েছে।  

ঝুঁকিতে রয়েছে মোহনপুর উপজেলার বাকশিমুইল, জাহানাবাদ, রায়ঘাটি, মৌগাছি ইউনিয়নসহ পশ্চিম বাগামারা। এখনই কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না নিলে এই গ্রামগুলোতেও শিবনদীর পানি ঢুকে প্লাবিত হবে বলে আশঙ্কার কথা জানান স্থানীয় চেয়ারম্যান।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০১৭
এসএস/আরআর
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।