ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বিপদসীমার রেকর্ড ভেঙেছে যমুনার পানি, আরও অবনতির শঙ্কা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮০৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০১৭
বিপদসীমার রেকর্ড ভেঙেছে যমুনার পানি, আরও অবনতির শঙ্কা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: যমুনা নদীর পানি জামালপুরের বাহাদুরাবাদ ঘাটে বিপদসীমার ১২৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যা পূর্বের সকল রেকর্ডের তুলনায় ৪ সেন্টিমিটার বেশি। আগামী ৬ ঘণ্টায় আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এছাড়া চিলমারী পয়েন্টে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সর্বোচ্চ বিপদসীমা অতিক্রম করবে।

সোমবার (১৪ আগস্ট) পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র এ তথ্য জানিয়েছে। সংস্থাটি বলছে, পানি বৃদ্ধির কারণে উত্তরাঞ্চলের কুড়িগ্রাম, জামালপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে।


 
এছাড়া এই পানি নেমে যাওয়া শুরু করলে নদী অববাহিকা এলাকায় মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, রাজবাড়ী ও শরীয়তপুরে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, পানির সমতল বৃদ্ধি বাহাদুরাবাদ ঘাটে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে।
 
এদিকে বাহাদুরাবাদ ঘাটে গত বছর আগের রেকর্ডের থেকে এবার পানি ৪ সেন্টিমিটার বেড়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থার নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন। তিনি জানান, চিলমারী পয়েন্টে ১৯৮৮ সালে রেকর্ড ছিল ২৫ দশমিক ০৭ মিটার। এখন তা ২৪ দশমিক ৭৩ মিটারে ‍উঠেছে।
 
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের বিশেষ বন্যা সতর্কীকরণ বুলেটিনে (নং-৩) বলা হয়েছে, বাংলাদেশের উজানের তিনটি অববাহিকায় (গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র এবং মেঘনা) পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর ভারতীয় অংশে গড়ে ৩২ সেন্টিমিটার ও বাংলাদেশ অংশে ৪৭ সেন্টিমিটার, গঙ্গা-পদ্মা নদীর ভারতীয় অংশে ১১ সেন্টিমিটার ও বাংলাদেশ অংশে ২২ সেন্টিমিটার এবং মেঘনা অববাহিকায় সুরমা-কশিয়ারা নদীর পানি ১০ সেন্টিমিটার করে বৃদ্ধি পেয়েছে।  

বর্তমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে পূর্বাভাস কেন্দ্র জানায়, ব্রহ্মপুত্র-যমুনার বাংলাদেশ অংশে গত ২৪ ঘণ্টায় পানি বৃদ্ধির হার গড়ে ৪৭ সেন্টিমিটার। ফলে নুনখাওয়া, চিলমারী, বাহাদুরাবাদ, সারিয়াকান্দি ও সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে সকাল ৯টায় বিপদসীমার যথাক্রমে ৭৩, ১১৮, ৯০ এবং ৯৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।  

‘আগামী ৭২ ঘণ্টায় এই নদীর পানি ৪০ হতে ৪৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। ফলশ্রুতিতে দেশের উত্তরাঞ্চলের ব্রহ্মপুত্র-যমুনা অববাহিকার বন্যা পরিস্থিতি অবনতিশীল থাকবে। ’
এদিকে তিস্তা-ধরলা-দুধকুমার অববাহিকার নদীর পানি  কমতে শুরু করেছে। ফলে এই অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও তা বর্তমানে বিপদসীমার ১ দশমিক ২৫ থেকে ১ দশমিক৭৫ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এই অববাহিকার উজানে নেপালে ও বিহারে বন্যা পরিস্থিতি থাকার ফলে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। মেঘনা অববাহিকায় সুরমা কশিয়ারার বন্যা পরিস্থিতি আগামী ২৪ ঘণ্টায় অবনতিশীল থাকবে।  

বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রে ব্রিফিং।  ছবি: বাংলানিউজপূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ব্রহ্মপুত্র-যমুনার ভারতীয় অংশে আগামী ২৪-৩৬ ঘণ্টায় গড়ে ২০-২৫ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেতে পারে। বাংলাদেশ অংশে আগামী ৭২ ঘণ্টায়  ৪৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি আগামী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকবে তবে তা বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হবে। মেঘনা অববাহিকার সুরমা কশিয়ারার পানি আগামী ২৪ ঘণ্টায় স্থিতিশীল থেকে পরবর্তীতে হ্রাস পাবে।  

একই সময়ে বিগত ৪-৫ দিন থেকে ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা অববাহিকায় পানি বৃদ্ধির ফলে উত্তরের এবং উত্তর-পূর্বের নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি অবনতিশীল রয়েছে। এই বন্যা পরিস্থিতি  মধ্যাঞ্চল ও দক্ষিণ-মধ্যাঞ্চলে বিস্তৃতি লাভ করতে পারে। গঙ্গা অববাহিকার পানি বৃদ্ধি পেলেও তা বিপদসীমার বেশ নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।  
 
মধ্যাঞ্চলের ঢাকার চতুর্দিকের পাঁচটি নদীর পানি বিপদসীমার ৬০ সেন্টিমিটার থেকে ১৫০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এই নদীগুলোতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে তবে আগামী ৭২ ঘণ্টায় বিপদসীমা অতিক্রম করার সম্ভাবনা নেই।

সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক থাকার জন্য এবং এই বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০১৭/আপডেট: ১৪৪৫ ঘণ্টা
এমআইএইচ/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad