সোমবার (১৪ আগস্ট) সকাল ৯টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ১০ সেন্টিমিটার। যা স্বাভাবিকের (৫২.৪০ সে.মি.) চেয়ে ৩০ সে.মি. নিচে।
এর আগে গত শনি ও রোববার পানি প্রবাহ কয়েক দফায় বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার অতিক্রম করেছিল। গত তিনদিন এক টানা বিপদসীমা অতিক্রম করে তিস্তায় পানি প্রবাহের ফলে জেলার ৫টি উপজেলার প্রায় ৬০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। পানিবন্দি এসব পরিবার কেউ উঁচু রাস্তা, বাঁধের ওপর আবার কেউ কেউ খাটের ওপর খাট বসিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
তিস্তার পানি প্রবাহ বিপদসীমার নিচে নেমে আসায় বন্যা পরিস্থিতির অনেকটাই উন্নতি ঘটেছে। তবে পানিবন্দিরা মুক্ত হতে পারে নি।
টানা তিনদিনের এ বন্যায় বেশ কিছু কাঁচা রাস্তা ও বাঁধ ভেঙে গেছে। কয়েক হাজার হেক্টর সদ্য রোপণ করা আমন ধান খেতসহ বেশ কিছু সবজি খেত নষ্ট হয়েছে। বন্যার পানিতে ভেসে গেছে কয়েক হাজার পুকুরের মাছ।
ভেঙে গেছে সদর উপজেলার ইটাপোতা বাঁধ। ভাঙনের মুখে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ সলিডি স্প্যার-২। লালমনিরহাট বুড়িমারী রেল রুটের বিভিন্ন স্থানে ভেঙে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে। আশ্রায়ন কেন্দ্রে আসতে ভেলায় ডুবে দুই শিশুসহ তিনজনের মৃত্য হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছে আরো একজন।
এদিকে বন্যা কবলিত পরিবারগুলোর মধ্যে সরকারি ও বেসরকারিভাবে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। তবে এই প্রথম মানুষ বন্যার কবল থেকে নিজেদের বাঁচাতে আশ্রয়ন কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। জেলার আশ্রয়ন কেন্দ্রগুলো এই প্রথম ভরে উঠেছে অসহায় মানুষে।
তিস্তা ব্যারাজের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, শুক্রবার রাত থেকে বাড়তে শুরু করে তিস্তার পানি প্রবাহ। শনিবার সকাল থেকে রোববার অবধি বিপদসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। সোমবার সকাল ৬টা থেকে নেমে আসে তিস্তার পানি প্রবাহ। সোমবার সকাল ৯টায় তিস্তার পানি প্রবাহ বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার নিচে। বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক শফিউল আরিফ বাংলানিউজকে জানান, তিস্তা ও ধরলার পানি প্রবাহ কমে গেছে। বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। এদিকে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪৬ ঘণ্টা, ১৪ আগস্ট, ২০১৭
আরএ