ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

দিনাজপুরে পানিবন্দি দেড় লাখ পরিবার

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৪৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০১৭
দিনাজপুরে পানিবন্দি দেড় লাখ পরিবার দিনাজপুর শহরে বন্যার পানি বেড়েই চলেছে-ছবি: বাংলানিউজ

দিনাজপুর: দিনাজপুরে শহরের বাহাদুর বাজার এলাকায় মুদি দোকান বন্ধ করে রোববার (১৩ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে বাড়ির পথ ধরি। রাস্তার উপর পানি। সেই পানি মাড়িয়ে বাড়িতে এসে দেখি স্ত্রী-সন্তান ঘুমিয়ে। বিদ্যুৎ নেই। আমিও ঘুমিয়ে পড়লাম।
 

মধ্য রাতে ঘুম ভাঙে পানির স্রোতের শব্দে।  উঠে দেখি খাটের চারপাশে পানি।

দ্রুত স্ত্রী-সন্তানদের ঘুম থেকে উঠিয়ে নিরাপদ স্থানে ছুটি। বাড়ির কাছে একটি আশ্রয় কেন্দ্রে উঠি। এরই মধ্যে বন্যার পানিতে ভেসে যায় বাড়ির অনেক মালামাল। সকালে শেষ সহায়-সম্বল উদ্ধার করতে শুরু করি। দিনাজপুরে পানিবন্দি দেড় লাখ পরিবারসোমবার (১৪ আগষ্ট) সকালে দিনাজপুর শহরের নিমনগর বালুবাড়ী এলাকার বাসিন্দা ও বাহাদুর বাজারের মুদি দোকানের কর্মচারী মমিনুল ইসলাম এভাবেই বর্ণনা করেন তার অভিজ্ঞতা।

দিনাজপুর শহরে এখন তার মতো অনেকেই বন্যা কবলিত হয়ে ঘর ছাড়া।   প্রতি মুহূর্তেই বাড়ছে পানি। অবনতি হচ্ছে বন্যা পরিস্থিতির। রোববার দিবাগত রাতেই ৫ থেকে ৬ ফুট পানি বেড়েছে কোথাও কোথাও।

সোমবার সকালে দিনাজপুর কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজে খোলা আশ্রয় কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, গাদাগাদি করে মানুষ আশ্রয় নিয়েছে সেখানে। জানা গেলো, রাতে এক দফা খাবার বিতরণ করা হলেও সকালে খাবার দেওয়ার কেউ নেই সেখানে। দিনাজপুরে পানিবন্দি দেড় লাখ পরিবার-ছবি: বাংলানিউজউজান থেকে নেমে আসা ঢলের চাপে রোববার পুনর্ভবা নদীর শহর রক্ষা বাঁধ ভেঙে যাওয়ার পর থেকে দুর্দশা শুরু হয় দিনাজপুরবাসীর। তলিয়ে যায় শহর ও আশপাশের এলাকাগুলো। ডুবে যায় শত শত ঘর-বাড়ি।

জেলায় বর্তমানে দেড় লক্ষাধিক পরিবার পানিবন্দি জীবনযাপন করছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েই চলেছে পানি। আর পানিতে ডুবে নষ্ট হচ্ছে ঘরের মালামাল।

সোমবার সকালেও শতশত মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রের দিকে ছুটতে দেখা যায়। সকালে পুনর্ভবা নদীর পানি বিপদসীমার ৮৮ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিলো। যা ২৪ ঘণ্টা আগে ছিলো ৭৭ সেন্টিমিটার। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পানি আরো বাড়ছে।

এ পর্যন্ত জেলায় ৬৬টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে ইতিমধ্যেই দেড় লক্ষাধিক বন্যা দুর্গত আশ্রয় নিয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে বন্যা দুর্গতদের মাঝে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা ত্রাণ বিতরণ শুরু করেছে।

জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাদ্য সহায়তা হিসাবে বন্যা দুর্গত মানুষদের জন্য এক লাখ ২৫ হাজার টাকা ও ৬৭ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দিনাজপুরে পানিবন্দি দেড় লাখ পরিবার-ছবি: বাংলানিউজদিনাজপুর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোকলেসুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, বন্যা দুর্গতদের জন্য বরাদ্দকৃত ত্রাণ ছাড়াও মন্ত্রণালয়ে ৫০ লাখ টাকা ও ৩০০ মেট্রিক টন চাল চেয়ে  চিঠি দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বন্যা দুর্গত মানুষদের সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০১৭/আপডেট: ১২৫১ ঘণ্টা
এএটি/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।