ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে সেনাবাহিনীর টিম

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০১৭
কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে সেনাবাহিনীর টিম কুড়িগ্রামের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত, ছবি: বাংলানিউজ

কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামের উপর দিয়ে প্রবাহিত বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

জেলার বিভিন্ন স্থানে পাউবোর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে সংকটময় করে তুলেছে।

সোমবার (১৪ আগস্ট) সকাল ৬টায় সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি বিপদসীমার ১৩৪ সেন্টিমিটার এবং চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার মাত্র ২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ টিম বন্যা কবলিত এলাকায় রয়েছে।

সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় রোববার (১৩ আগস্ট) রাতে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খানের সভাপতিত্বে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়।

কুড়িগ্রাম সদরের কাঠালবাড়ী, রাজারহাটের কালুয়ার চর ও ফুলবাড়ীর গোড়কমন্ডল এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে বন্যার পানি প্রবেশ করায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।

বিভিন্ন স্থানে পাকা সড়ক ভেঙে যাওয়াসহ উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় জেলার সঙ্গে সড়ক ও রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। নয়টি উপজেলার অর্ধশত ইউনিয়নের প্রায় দুই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

কুড়িগ্রাম সদরের কাঁঠালবাড়ীর বাংটুর ঘাট এলাকায় বাঁধের একশ’ মিটার, রাজারহাট উপজেলার কালুয়ারচর ওয়াপদা বাঁধের একশ’ মিটার ভেঙে পানি ঢোকায় কাঁঠালবাড়ী, ছিনাই, ঘড়িয়ালডাঙ্গা, হলোখানা ও রাজারহাট সদরের বিস্তীর্ণ এলাকা বন্যার পানিতে প্লাবিত।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা স্বপন কুমার রায় চৌধুরী বাংলানিউজকে জানান, আকস্মিক বন্যায় নয় উপজেলায় চারশ’ ৪১টি বিদ্যালয়ে বন্যার পানি ওঠায় পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ভাঙনের মুখে পড়েছে ১৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ১৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

কুড়িগ্রাম জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা খন্দকার মো. আলাউদ্দিন আল আজাদ বাংলানিউজকে জানান, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা মিলে জেলায় ১৬৭টি প্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি ওঠায় পাঠদান বন্ধ হয়ে গেছে।

কুড়িগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. আমিনুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, জেলায় ৮৭টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ডায়রিয়ায় ১৭ জন আক্রান্ত হয়েছে। বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ায় ৮৩টি কমিউনিটি ক্লিনিকের চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান বাংলানিউজকে জানান, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলা ও ত্রাণ তৎপরতা সচল রাখতে সব ধরণের উদ্যোগ নেওয়াসহ সরকারি-বেসরকারি সকল বিভাগকে বন্যার্তদের পাশে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

দুর্যোগ মোকাবেলায় সেনাবাহিনী, বিজিবি ও আনসারকে সার্বিক সহযোগিতার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ টিম বাঁধ সংস্কারের কর্ম-পরিকল্পনা ও সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে কাজ শুরু করেছে।

** শত’ কোটি টাকার মাছ ভেসেছে, তবুও জেলেদের জাল শূন্য

বাংলাদেশ সময়: ০৯০৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০১৭
এএটি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।