বন্যা পরিস্থিতির অবনতির সঙ্গে মারাত্মক ঝুঁকি বাড়ছে এসব বাসিন্দাদের। উদ্ধারে আত্মীয়-স্বজনদের অনেকে এগিয়ে এলেও চরের দু’পাশে তিস্তার খর স্রোতে বড় নৌকার অভাবে তাদের কাছে যেতে পারছেন না।
রোববার (১৩ আগস্ট) দুপুরে আদিতমারীর তিস্তার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ‘সলিডি স্প্যার বাঁধ-২’ তে আটকে পড়া চরের বাসিন্দাদের জন্য তাদের স্বজনদের অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
স্বজনরা জানান, ওই চরের প্রায় দেড় হাজার পরিবারের বসবাস। তারা পাঁচদিন ধরে পানিবন্দি রয়েছে। তাদের মধ্যে বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। তারা ফোন করে নৌকা চাচ্ছে, তারা বাঁচতে চায়। তিস্তার স্রোতে ভেসে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।
তিস্তা পাড়ের সেলিম মামুদ বাংলানিউজকে জানান, সকাল থেকে তার মেয়ে জামাই বাঁচার জন্য আহাজারী করছে। কিন্তু নৌকা ছাড়া তাদেরকে মুল ভুখণ্ডে বা বন্যা আশ্রায়ন কেন্দ্রে আনা সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি বলেন, নদীর তীব্র স্রোতের কারণে বড় নৌকা ছাড়া তাদের কাছে পৌঁছানো অসম্ভব।
মহিষখোচা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক হোসেন চৌধুরী জানান, নৌকা না থাকায় ওই চরে আটকে পড়া পরিবারগুলোর কাছে পৌঁছা যাচ্ছে না। নৌকা বা স্পিডবোট সরবরাহের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানান তিনি।
আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসাদুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, বিষয়টি শুনেছি। ওই চরের লোকদের উদ্ধারের জন্য নৌকা খোঁজা হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজার রহমান বাংলানিউজকে জানান, গত শুক্রবার থেকে তিস্তার পানি প্রবাহ বিপদ সীমা অতিক্রম করছে। উজানের ঢল ও টানা ছয়দিনের ভারী বর্ষণে শনিবার দিনভর বিপদ সীমার ২৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও রাতে আরও বাড়তে পারে।
রোববার সকাল ৯টায় ডালিয়া পয়েন্ট তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫৩ দশমিক ৫। যা স্বাভাবিকের ৫২ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার উপরে। দুপুরে কমে গিয়ে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় বিপদ সীমার ৪৬ সেন্টিমিটার উপরে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক শফিউল আরিফ বাংলানিউজকে জানান, সদর উপজেলার মোঘলহাটে ধরলার চরে কিছু পরিবার আটকা পড়েছিল। তাদের স্পিডবোট পাঠিয়ে উদ্ধার করা হচ্ছে। গোবর্দ্ধন চরেও স্পিডবোট পাঠানো হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০১৪৭ ঘণ্টা, আগষ্ট ১৪, ২০১৭
এমইউএম/আরবি/