ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

শোকের মাসে ম্যানগ্রোভে কনসার্ট, ৫ শিক্ষক আটক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১৭
শোকের মাসে ম্যানগ্রোভে কনসার্ট, ৫ শিক্ষক আটক আটক কয়েকজন ও ম্যানগ্রোভ ইনিস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ফটক। ছবি: বাংলানিউজ

খুলনা: জাতীয় শোক দিবসের মাত্র দুই দিন আগে খুলনার ম্যানগ্রোভ ইনিস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে কনসার্ট আয়োজন করায় পাঁচ শিক্ষককে আটক করেছে পুলিশ। 

রোববার (১৩ আগস্ট) দুপুরে প্রতিষ্ঠানটির টেক্সটাইল প্রথম বর্ষের নবীনবরণ উপলক্ষে আয়োজিত কনসার্ট থেকে তাদের আটক করা হয়। তবে এসময় শিক্ষার্থীরা পালিয়ে যায়।

শেষে পণ্ড হয়ে যায় কনসার্টও।
 
আটক ৫ শিক্ষক হলেন- শাওন শাহরিয়ার, ওলিউল্লাহ, মেহেদী হাসান রাজু, শহীদুল ও পলাশ। তারা সবাই টেক্সটাইল বিভাগের শিক্ষক।  

প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম সাইফুল ইসলাম মোমিন বাংলানিউজের কাছে দাবি করেন, শিক্ষকরা এ কনসার্টের আয়োজনে জড়িত থাকায় তাদের তিনি পুলিশে তুলে দিয়েছেন। তিনি বলেন, গান বাজনা করতে পারেনি। কেবল শুরু করেছিলো। ওদের বলা ছিলো শুধু আলোচনা করতে হবে। কোনো হৈ-হুল্লোড় নয়। কিন্তু ওরা কনসার্ট শুরু করলে টেক্সটাইলের ৫ শিক্ষককে পুলিশে তুলে দেওয়া হয়।  

খালিশপুর থানায় আটকদের ছবি আনতে গেলে থানার ডিউটি অফিসার ইন্দ্রজিত ছবি ও নাম দিতে অস্বীকার করেন। পরে বলেন, ওসির (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) অনুমতি ছাড়া দেওয়া যাবে না। এসময় মোবাইলে ছবি তুললে তিনি মোবাইল কেড়ে নিয়ে ছবি ডিলেট করে দেন এবং ঔদ্ধর্ত্যপূর্ণ আচরণও করেন।  

কনসার্ট পণ্ড হওয়ার পর জড়ো করে রাখা হয়েছে সব চেয়ার।  ছবি: বাংলানিউজ
থানার ওসি নাসিম খানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, মিটিংয়ে আছেন।  

অভিযোগ উঠেছে মোটা অংকের টাকা লেনদেনে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে ম্যানগ্রোভ কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ। কলেজটিতে জামায়াত-শিবিরপন্থি শিক্ষার্থী ও কিছু শিক্ষক রয়েছেন। যারা ঘাপটি মেরে এখানে তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছেন।  

এ বিষয়ে মোমিন বলেন, বিডি জবসের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কে কোন দল করেন, তা জানা নেই।  

এদিকে শোকের মাসে কনসার্ট আয়োজনের ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, ক্যাম্পাসে বিশাল সাউন্ড সিস্টেমে কনসার্ট করে হৈ-হুল্লোড় করে উৎসবে মেতে ওঠেন শিক্ষার্থীরা। তাদের ওই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার কথা ছিলো। কিন্তু শোকের মাসে এ ধরনের আপত্তিকর অনুষ্ঠান করায় তারা অংশগ্রহণ করেননি। অথচ শিক্ষকদের একটি বড় অংশ বাঁধা না দিয়ে অংশগ্রহণ করেন।  

তারা আরও জানান, অনুষ্ঠান সম্পর্কে মোমিন জানতেন। তিনিও আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন। তোপের মুখে পড়ে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণে সচেষ্ট হয়েছেন।

এ বিষয়ে খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেক এমপি বাংলানিউজকে বলেন, শোকের মাসে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের কর্মসূচি পালন ন্যাক্কারজনক ও বেদনাদায়ক। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই ও দোষীদের শাস্তি দাবি করছে।  

বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১৭
এমআরএম/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।