ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

শত’ কোটি টাকার মাছ ভেসেছে, তবুও জেলেদের জাল শূন্য

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১৭
শত’ কোটি টাকার মাছ ভেসেছে, তবুও জেলেদের জাল শূন্য শত কোটি টাকার মাছ বেরিয়ে গেছে, তবু জালে ধরা পড়ছে না; ছবি: বাংলানিউজ

ভবদহ (যশোর) থেকে: অতিবৃষ্টিতে যশোরের ভবদহ(অভয়নগর, মণিরামপুর ও কেশবপুর) অঞ্চলে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় মৎস্যঘেরের শত কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে দাবি করা হলেও খাল-বিলে মাছের দেখা পাচ্ছেন না জেলেরা।

এসব এলাকার পেশাদার জেলেদের পাশাপাশি মৌসুমি জেলেরা জাল নিয়ে মাছ ধরার চেষ্টা করলেও আশানুরূপ মাছ ধরা পড়ছে না। ফলে বৃষ্টির ভরা মৌসুমেও কমছে না মাছের দাম।

বর্তমানে পাইকারি বাজারে কেজি সাইজের কাতলা মাছ ১৯০ টাকা এবং পাইকারি বাজারে ৬০০-৭০০ গ্রাম সাইজের রুই মাছ ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও দেশি প্রজাতির মাছের দেখা নেই বাজারে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ভবদহ অঞ্চলের সুন্দলী, মশিয়াহাটি, টেকা, মণিরামপুরের খাজুরা, মশ্মিনগর, ঝাঁপা, রাজগঞ্জ, কেশবপুরের নেংটাখালি, মশনিয়াসহ উন্মুক্ত মাছের অন্যতম স্পটগুলোতে জেলেরা জাল ফেলে মাছ ধরার চেষ্টা করছেন। তবে সারাদিনে, দু-চার কেজির বেশি মিলছে না। এতে জেলেরা নিজেদের চাহিদা মেটাতে পারলেও বিক্রি করতে পারছেন না।

অন্যদিকে, জলাবদ্ধতার কারণে প্রত্যেকটি মৎস্যঘের, পুকুর, বাওড় পানিতে পরিপূর্ণ হওয়ায় মাছ ধরতে পারছেন না মালিকরা। এজন্যই বাজারে মাছের দাম কমছে না বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।

মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, অভয়নগর, মণিরামপুর ও কেশবপুরে অতিবৃষ্টির কারণে মৎস্য ঘের-পুকুর ও বাওড় ডুবে অন্তত ১১০ কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে। এসব ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা ও ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করে তালিকা করেছে মৎস্য বিভাগ।

কেশবপুরের কোমরপোল গ্রামের মৌসুমি জেলে মহসিন, কবীর, ফারুক, জিয়াসহ অনেকেই বাংলানিউজকে বলেন, ‘প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে স্থানীয় নেংটাখালি ব্রিজে বসে খেপলা জাল ফেলে আমরা মাছ ধরি। এটা ছোটবেলা থেকে নেশার পাশাপাশি আয়ের বড় উৎস। গতবছর এই মৌসুমে প্রতিদিন দেড়মণ থেকে দুই মণ পর্যন্ত মাছ ধরে বিক্রি করেছি। তবে চলতি বছর সারাদিনে দু’-চার কেজির বেশি মাছ পাওয়া যাচ্ছে না।

বজলুর রহমান নামের স্থানীয় একজন প্রবীণ মৌসুমি জেলে বাংলানিউজকে বলেন, গত বছর অতিবৃষ্টিতে ঘেরমালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এবার আগেভাগেই ঘেরের চারপাশ নেট জাল ও পাটা দেওয়ায় বেশি মাছ বের হতে পারেনি, এছাড়াও সাধারণের মাছ ধরার মতো উন্মুক্ত স্থান না থাকায় মাছ ধরা পড়ছে না।
অভয়নগর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ দেব বাংলানিউজকে বলেন, উপজেলার ২৩০০ হেক্টর আয়তনের ৪ হাজার ৫০০টি মৎস্য ঘের, পুকুর ও বাওড়ে অন্তত ৩৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

মণিরামপুর উপজেলা মৎস্য অফিসার আনোয়ারুল কবীর বাংলানিউজকে বলেন, উপজেলার ৪৩০০ হেক্টর আয়তনের সাড়ে ৫শ’ টি মৎস্য ঘের, পুকুর ও বাওড়ে অন্তত ১৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

কেশবপুর উপজেলা সহকারি মৎস্য কর্মকর্তা আলমগীর কবীর বাংলানিউজকে বলেন, উপজেলার ৪ হাজার ৪০০ হেক্টর আয়তনের ছয় হাজার চারশ’টি মৎস্য ঘের, পুকুর ও বাওড়ে অন্তত ৫৩ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়:১৯৫৬ ঘণ্টা, ১৩ আগস্ট, ২০১৭
ইউজি/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।