মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধের সাদিক অ্যাগ্রো ফার্মে দেড় বছর আগে তিন দফায় দুবাই থেকে আনা হয়েছে এসব ছাগল। মূলত বাংলাদেশে পরিচিতি পাওয়াতে জাত দু’টি আমদানি করা হলেও অনেকেই কিনে নিয়ে বাসা-বাড়িতে পালছেন।
ফার্ম ঘুরে দেখা গেছে, বাঁকানো শিংয়ের রাহাবি ছাগল দেখতে অনেকটা বারবি ডলের মতো। পুরো শরীর বরফ সাদা লোমে ঢাকা, বড় বড় লোম মাথা বেয়ে ঢেকেছে চোখও। রুপবতী নারীর মতো চোখ জুড়ানো রাহাবি চঞ্চল স্বভাবের। অন্যদিকে হরিণের মতো দেখতে বলেই অন্য প্রজাতির ছাগলটির নাম বারবারি (Berbera)।
সাদিক অ্যাগ্রো’র মালিক ইমরান হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ‘মূলত শখের বশেই এসব ছাগল পালা হয়। আমরা বিক্রির জন্য আনিনি, দেশে পরিচিতি পাওয়াতে ও বিস্তার ঘটাতে এনেছি। তারপরও অনেকেই আমাদের এখান থেকে রাহাবি-বারবারি ছাগল কিনে নিয়ে যাচ্ছেন, বাসা-বাড়িতে লালন-পালন করছেন। তাদের ঘরে বাচ্চাও দিয়েছে সেগুলো। দু’টি জাতের ছাগলই মানুষের সংস্পর্শে থাকতে পছন্দ করে। দেশের আবহাওয়া-পরিবেশের সঙ্গে এগুলো মানিয়েও নিয়েছে দারুণভাবে’।
‘আশা করছি, ছাগলের জাত দু’টি একদিন সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে যাবে’।
তিনি জানান, রাহাবি ছাগলের সৌন্দর্যের কাছে মাংসের স্বাদ ম্লান হয়ে গেছে। আদিজাত স্পেনের হলেও মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে সুখ্যাতি রয়েছে। ৭০ থেকে ৭৫ কেজি পর্যন্ত ওজন হয় এক একটি ছাগলের, মূল্য দুই লাখ টাকা।
অন্যদিকে বারবারি ছাগলের আদি জন্মস্থান পূর্ব আফ্রিকার সোমালিয়ায়। তবে আমেরিকায়ই বেশি গবেষণা হচ্ছে এ ছাগল নিয়ে। প্রথমে আমেরিকা থেকে দুবাইয়ে নিয়ে ব্রিডিং হয়েছে। এরপরে বাংলাদেশে আনা হয়েছে।
মূলত মাংসের স্বাদের জন্যই এ ছাগল জগদ্বিখ্যাত উল্লেখ করে ইমরান হোসেন জানান, একবার খেলে আজীবন মনে থাকবে, মাংসের উৎপাদনও ভালো।
১ বছর বয়সে পুরুষ বারবারি ৩০ থেকে ৩৮ কেজি ও ছাগি ১৮ থেকে ২২ কেজি ওজনের হয়ে থাকে। তবে পূর্ণবয়স্ক হলে ওজন হয় ৬০ থেকে ৬৫ কেজি।
আমাদের দেশের ছাগলের মতোই কচি ঘাস, আগাছা, লতা-পাতা খেতে খুব পছন্দ করে রাহাবি-বারবারি। কাঁঠালপাতা, কুলপাতা, সজনে, নিমপাতা, বকফুল, নটে, কপি, মূলা, পালং, গাজরও খেয়ে থাকে ৷ তরকারির খোসা, চারদিকে পড়ে থাকা কম দামি খাবার খাইয়েও এদের পালনে কোনো সমস্যা হয় না। আলাদাভাবে দানাদার খাবার হিসেবে কুঁড়া, ভুষি, চাল-ডাল বেশি পছন্দ রাহাবি’র আর বারবারি বেশি পছন্দ করে সিম, বরবটি ও অড়হর পাতা।
** ষাঁড় নয়, যেন ৩০ মণ এক পাহাড়!
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১৭
এমআইএস/এএসআর