ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ে ইতিহাস বিকৃত হয়েছে’ 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১২ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১৭
‘ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ে ইতিহাস বিকৃত হয়েছে’  মিট দ্য প্রেসে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। ছবি: শাকিল

ঢাকা: ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের পর্যবেক্ষণে ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। 

তিনি বলেছেন, ‘রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে- মুক্তিযুদ্ধে কোনো একক নেতৃত্ব নেই, সেটি সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক। এ কথাটির মাধ্যমে ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে।

ইতিহাস ঘেঁটে এ রকম কোনো কথা খুঁজে পাওয়া যায়নি। ’

রোববার (১৩ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) মিলনায়তনে ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘ইতিহাস যে বিকৃত হয়েছে, তা নিশ্চিত। তবে এটি অসদাচরণ কি-না- তা খতিয়ে দেখতে হবে, এটি বিচারের ভার রাষ্ট্রপতির। ’

তিনি বলেন, ‘ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে এখনও পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদনের সিদ্ধান্ত হয়নি। রায়ের পুরো বক্তব্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে, এটি অনেক সময়াসাপেক্ষ ব্যাপার। ৭৯৯ পৃষ্ঠার রায়টি দীর্ঘ সময় নিয়ে পড়ার প্রয়োজন রয়েছে। রায়টি পড়ে দেখতে হবে- কোথায় কোথায় রিভিউ আবেদনের মতো পয়েন্ট রয়েছে। তবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আরও সময়ের প্রয়োজন’।

ষোড়শ সংশোধনীর বাতিলের রায় নিয়ে সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীদের করা মন্তব্যে তাদের শপথ ভঙ্গ হবে কি-না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এ রায়ে আমাদের এমন একটি জায়গায় আঘাত করা হয়েছে, যা নিয়ে আলাপ-আলোচনা হতে পারে। পাশাপাশি এ কথাটি ছিল রায়ের সঙ্গে অপ্রাসঙ্গিক। তবে আদালতের প্রতি আমরা সব সময় শ্রদ্ধাশীল’।

তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা সম্পর্কে আনিসুল হক বলেন, ‘এটিকে নিজেদের অপরাধের ধারা মনে করবেন না। তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে সাইবার ক্রাইম বেড়েছে। এটি মোকাবেলা করতেই এ আইন করা হয়েছে। তবে আমরা জানি- এটি নিয়ে আপনাদের আপত্তি রয়েছে’।

‘সেজন্য ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট নামে যে নতুন আইনটি করা হবে, সেখানে ৫৭ ধারার বিষয়ে আপনাদের (সাংবাদিক) যে আপত্তি রয়েছে, তা পরিষ্কার করা হবে। এমন কোনো আইন করা হবে না- যা সাংবাদিকবান্ধব নয়’।

বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের ফিরিয়ে আনা ও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলা প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের দেশে ফিরিয়ে আনতে যা যা প্রক্রিয়া করার দরকার, তা চলমান। এ বিষয়ে কানাডা ও আমেরিকার সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে। আর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচার কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে’।

সাংবাদিক সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘বিচারহীনতার সংস্কৃতি দূর করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বাধীনতার ৬৪ বছর পর মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার হয়েছে। সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডেরও মামলা হয়েছে। মামলাটির তদন্ত শেষ হওয়া পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। আমরা সকলেই এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই’।

তিনি বলেন, ‘অবসরের কারণে শূন্য হওয়া বিচারকের পদ পূরণ ও নতুন বিচারক তৈরিতে সরকারের পদক্ষেপ সব সময়ই চলমান। বিচারকের পদে যেন কখনোই শূন্যতার সৃষ্টি না হয়, সেজন্য বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে’।

‘বিশাল মামলার জট দূর করে বিচারিক কার্যক্রম দ্রুত করতে সরকার সব ধরনের উদ্যোগই নিচ্ছে। এর একটি হচ্ছে, নতুন বিচারক নিয়োগ ও তৈরি। বিচারক তৈরির প্রক্রিয়া কিন্তু কঠিন ও সময়াসাপেক্ষ। সরকার নানাভাবে বিচারক শূন্যতা দূর করছে’।
 
আইনমন্ত্রী জানান, দেশের সকল আদালতকে ডিজিটালাইজড করার কাজ চলছে। আগামী বছরের মধ্যে দৃশ্যমান হয়ে এর সুফল দেখা যাবে।
 
‘মিট দ্য প্রেসে’ ডিআরইউ’র সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা ও সাধারণ সম্পাদক মোরসালীন নোমানীসহ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন: ‘নতুন বিচারক নিয়োগ ও তৈরিতে সরকারের পদক্ষেপ চলমান’

বাংলাদেশ সময়: ১৪০২ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১৭/আপডেট: ১৫২৪ ঘণ্টা
এমএসি/এমএ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।