ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ষাঁড় নয়, যেন ৩০ মণ এক পাহাড়!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৩৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১৭
ষাঁড় নয়, যেন ৩০ মণ এক পাহাড়! ষাঁড় নয়, যেন ৩০ মণ এক পাহাড়, ছবি ও ভিডিও জিএম মুজিবুর

ঢাকা: পুরো শরীর তার কুচকুচে কালো। আর বিশাল শরীর যেন এক কালা পাহাড়। ছোট দু’টি শিং সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ছোট হাতির বাচ্চার সঙ্গে তুলনা করলে খুব একটা ভুল হবে না।

বড় গলার ঝুল, মাটি ছুঁই ছুঁই বাহারি লেজ। লেজের শেষ ভাগ, শিং ও কানের কিছু অংশ বাদে সমস্ত শরীর ওর কালচে রঙে মোড়া।

লাল-সাদা রশি নাকের ভেতরে। নাক বেয়ে পুরো গলায় জড়ানো হয়েছে রশি। কালো চোখ আর বিশাল কালো শরীর থেকে শৌর্য যেন ঠিকরে বেরোচ্ছে। এককথায় ভয়ঙ্কর সুন্দর। সাহেবি ভাবের এই কালো হাতির ন্যায় গরুর নামটিও বেশ গালভরা--- ‘চেয়ারম্যান’।

মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধের ভাঙা মসজিদের পশ্চিম দিকে অবস্থিত এক গরুর খামার। খামারের নাম ‘দ্য হাম্বা ফ্যাক্টরি’। সেখানেই ওর দেখা পাওয়া গেল। ‘চেয়ারম্যান’ সেখানে তার বিশাল বপু নিয়ে দাঁড়ানো। আজ থেকে চার বছর আগে কুষ্টিয়ায় জন্ম নেয় চেয়ারম্যান। এর পরে নরসিংদী ‘দ্য হাম্বা ফ্যাক্টরি’ থেকে  মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ শাখায় আনা হয় চেয়ারম্যানকে। চার দাঁতের চেয়ার‌ম্যানের বয়সও চার। ষাঁড় নয়, যেন ৩০ মণ এক পাহাড়, ছবি জিএম মুজিবুরবিশালদেহী চেয়ার‌ম্যানের দৈনিক খাবার লাগে ২৫ কেজি। অল্প বয়সেই হাতির মতো দেখতে হয়েছে এটি। ওর লালনপালন মূলত দ্য হাম্বা ফ্যাক্টারিতেই। বিশালবপু চেয়ারম্যানের ওজন ১ হাজার ২০০ কেজি বা ৩০ মণ । উচ্চতা ছয় ফুটের ওপরে। দৈর্ঘ্যও ১১ ফুট। এর মালিকের আশা, কোরবানির ঈদে একে ১২ লাখ টাকায় বিক্রি করবেন।

দ্য হাম্বা ফ্যাক্টরি সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, প্রতিবার ঘড়ির কাঁটা মেনে খাবার দিতে হয় চেয়ারম্যানকে। একটু নড়চড় হলেই সমস্যা। বেঁকে বসে সে। আদুরে বাচ্চাদের মতো অভিমানী স্বভাবের সে। সকাল ৮টা, বিকাল ৩টা এবং রাত ৮টার সময় পেট পুরে খায় সে। প্রতিদিন ১৫ কেজি গম, ভুট্টা, খেসারির ভুসি খেতে দেওয়া হয়। এর বাইরে চেয়ারম্যানকে কাঁচা ঘাস ও ১০ কেজি খড়ও দিতে হয়। ষাঁড় নয়, যেন ৩০ মণ এক পাহাড়, ছবি ও ভিডিও জিএম মুজিবুরসঙ্গে চিটাগুড়ও থাকে। খাবারের বহর দেখে বলাই যায়, ও এক নাদুস নুদুস পেটুক চূড়ামণি!

তিন বেলা গোসল করানো হয় চেয়ারম্যানকে। সঙ্গে ডেটল, সাবান ও শ্যাম্পু রাখা হয়। গোসলের পরে গা মুছে দিয়ে নারিকেল তেল মাখানো হয়। এর পাশাপাশি ২৪ ঘণ্টা ফ্যান ঘোরে মাথার ওপরে। সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা হয় থাকার স্থানটিকে।

দ্য হাম্বা ফ্যাক্টরির পরিচালক কাজী শাহজাদ বাংলানিউজকে বলেন, অস্ট্রেলিয়ান জাতের ষাঁড় চেয়ারম্যানের বয়স মাত্র চার বছর। এর মধ্যেই সে(চেয়ারম্যান) অনেক বড় হয়েছে। আশা করছি, কোরবানির ঈদের এর দাম ১২ লাখ টাকা হবে। এটাই আমার খামারের সবচে বড় গরু। এমন বড় গরু দেশে হাতে গোনা কয়েকটি হবে। কাঁচা ঘাস, ভুষি, চিটাগুড় ও খড় খাওয়ানো হয় চেয়ার‌ম্যানকে। সব সময় ওকে চোখে চোখে রাখা হয়। শরীরের জ্বর মাপা থেকে শুরু করে ডাক্তারও নিয়োজিত ওর জন্য। ও আমাদের বড়ই আদরের।

তিনি আরও বলেন, ব্যবসার পাশাপাশি গরু পালা আমাদের শখ। যাতে করে মানুষ সুস্থ-সবল গরুর মাংস খেতে পারেন সেই বিষয়টি আমাদের ফার্মে নিশ্চিত করা হয়। মানুষের আস্থা অর্জন করে আমরা গরুপালনকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই।

দ্য হাম্বা ফ্যাক্টরিতে মোট ১২০টি গরু আছে। এগুলোর মধ্যে ষাঁড় ৬০টা, বাকিগুলো গাভী ও বাছুর।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১৭
এমআইএস/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad