ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ঢাকাতেও এখন নেত্রকোনার বালিশ মিষ্টি!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৪৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১৭
ঢাকাতেও এখন নেত্রকোনার বালিশ মিষ্টি! ঢাকাতেও এখন নেত্রকোনার বালিশ মিষ্টি!

ঢাকা: প্রতিটি জেলারই আছে নিজস্ব একটা ইতিহাস-ঐতিহ্য। তেমনি একটি জেলা নেত্রকোনা। যার রয়েছে শতাধিক বছরের নামকরা বিখ্যাত রসালো ‘বালিশ মিষ্টি’র ঐতিহ্য। এতোদিন জানতাম শুধু নেত্রকোনাতেই মজার মজার বালিশ মিষ্টি পাওয়া যায়। কিন্তু আজ এখানে এসে বালিশ মিষ্টি পেয়ে খেয়ে দেখলাম নেত্রকোনা থেকে এখানেও কম স্বাদের নয়।

অস্থায়ী খোলামেলা একসাথে কয়েকটি ঘর। এগুলোতেই বিক্রি হচ্ছে বাহারী সব মিষ্টির সাথে বালিশ মিষ্টিও।

রাস্তায় দাঁড়িয়ে গরম গরম বালিশ মিষ্টি খেয়ে যেন অমৃতই মনে হয়েছে। জিভে এর স্বাদ এখনও লেগে রয়েছে মনে হচ্ছে। এখানকার বালিশ মিষ্টির স্বাদের টানে আমি অবসর পেলেই চলে আসব।

এমনটাই বলছিলেন ঢাকার পূর্বাচল এলাকার নীলা মার্কটে আসা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া ঊর্মি নামের এক ছাত্রী।

ঊর্মি জানান, তিনি ও তার ৫-৬ জন বন্ধু মিলে ওই এলাকায় ঘুরতে এসেছিলেন। গাড়ি করে যাওয়ার পথে হঠাৎ তাদের চোখে পড়ে নীলা মার্কেটের দু’পাশ দিয়ে কতগুলো মিষ্টির দোকান। দু’পাশের দোকানগুলোর মধ্য দিয়ে সরুপথে একটু হাঁটতেই এখানকার বাহারি সব মিষ্টি দেখে আর লোভ সামলাতে পারেননি। ‘বালিশ মিষ্টি’র পাত্রটি দেখেই তারা বিক্রেতাকে ‘মামা’ সম্বোধন করে বলেন, ‘মামা বালিশ মিষ্টি দেন। আমরা এখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে খাবো’।

এছাড়া তারা বাসার জন্যও বালিশ মিষ্টি কিনেছেন বলে জানান ঊর্মি।
ঢাকাতেও এখন নেত্রকোনার বালিশ মিষ্টি!
ঘুরে দেখা যায়, নীলা মার্কেটে অস্থায়ীভাবে ৮-১০টি মিষ্টির দোকান। পাশেই কারিগররা মিষ্টি তৈরি করে এনে গরম গরম সাজিয়ে রাখছেন দোকানে। রং বেরংয়ের সাধারণ মিষ্টি, স্পঞ্জ, রসগোল্লা, রসমলাই আর  আকর্ষণীয় বালিশ মিষ্টি রসনাবিলাসীদের নজর কাড়ে। বালিশ মিষ্টি স্বাদ, গন্ধ, রং ও আকার-আকৃতিতে অসাধারণ। মিষ্টিটি দেখতে মানুষের শোয়ার বালিশের মতো আকার-আকৃতির হয় বলেই একে বালিশ মিষ্টি বলা হয়। এটি সাধারণত পিস হিসেবে বিক্রি করা হয়। এটি বিভিন্ন আকারের হয়ে থাকে। ২০০ বা এর কিছু কম-বেশি টাকা মূল্যের একটি বালিশ মিষ্টি সাধারণত ১২ থেকে ১৩ ইঞ্চি লম্বা হয়ে থাকে। বড় এ মিষ্টিটি কেটে পিস পিস করে পরিবেশন করা হয়। একবার খেলে এর স্বাদ ও গন্ধ জিভে লেগে থাকে। এর দামও খুব বেশি নয়, নাগালের ভিতরেই। এছাড়াও নিতান্ত পেটুক না হলে একজনের পক্ষে আস্ত একটি মিষ্টি খেয়ে সাবাড় করা সম্ভব নয়। তাই দোকানে বসে বা দাঁড়িয়ে খাওয়ার সময় পিস পিস করে বিক্রি করা হয়।

মিষ্টিবিক্রেতা প্রদীপ ঘোষ জানান, মিষ্টি তৈরি করা তাদের ঘোষ পরিবারের ঐতিহ্য। ছোটবেলা থেকেই তারা বাহারি মিষ্টি তৈরি করে আসছেন। শুধু তৈরি নয়, বিভিন্ন বাজারে অস্থায়ীভাবে দোকান খুলে সুচারুভাবে  পরিবেশন করাতেও তাদের জুড়ি মেলা ভার। নীলা মার্কেটে তারা প্রায় ১ মাস ধরে এই মিষ্টি বিক্রি করছেন।

প্রতিসপ্তাহে ছুটির দিন শুক্র-শনিবারই বেশি মিষ্টি বিক্রি হয় বলে জানান তিনি।

তিনি আরও জানান, এখানে বালিশ মিষ্টির যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। অনেকে এখানে শখ করে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে গরম গরম মিষ্টি খেয়ে যান। আবার অনেকে বাসার জন্য বা নিকটাত্মীয়দের জন্য নিয়ে যান। তবে এখানে খাওয়ার চেয়ে লোকে এ মিষ্টি বাসায় নিয়ে যান বেশি।

নেত্রকোনায় গয়ানাথের নামকরা বালিশ মিষ্টির বেশি খ্যাতি দেশে ছাড়িয়ে বিদেশে পর্যন্ত ছড়িয়েছে। শতাধিক বছরের এ বালিশ মিষ্টির জন্য নেত্রকোনার নামটি আলাদাভাবে উচ্চারিত হয়।

বাংলাদেশ সময়: ০৫৪৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১৭
টিএ/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।