ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

তিস্তায় রেড এলার্ট জারি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০১ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১৭
তিস্তায় রেড এলার্ট জারি তিস্তায় রেড এলার্ট জারি

লালমনিরহাট: গত পাঁচ দিনের টানা ভারী বর্ষন ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের লালমনিরহাটে তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

শনিবার (১২ আগস্ট) রাত সাড়ে ১০টার দিকে পানি প্রবল গতিতে আসায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ রক্ষার্থে রেড এলার্ট জারি করে ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ।

তিস্তা পাড়ের লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজার রহমান বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, তিস্তার পানি গত শুক্রবার (১১ আগস্ট) রাত থেকে বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করতে সবগুলো জলকপাট (স্লুইসগেট) খুলে দেওয়া হয়েছে। তবুও ব্যারাজের সামনে ৪-৫ ফিট উচুতে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানি প্রবাহ আর মাত্র এক ফিট উচু হলে ব্যারাজের ফ্লাড বাইপাস উপচে পানি প্রবাহিত হবে।

ফ্লাড বাইপাস উপচে গেলে ভাটিতে থাকা জনপদ পানির তোড়ে ভেসে যেতে পারে বা ব্যারাজ রক্ষার্থে যে কোনো সময় ফ্লাড বাইপাস কেটে দেওয়া হবে। তাই ওই এলাকায় রেড এলার্ট জারি করা হয়েছে। ভাটিতে থাকা মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে। লোকজন সরে যেতেও শুরু করেছে বলেও জানান এ প্রকৌশলী।

এরই মধ্যে পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, শ্রীরামপুর, পাটগ্রাম পৌরসভা, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, ডাউয়াবাড়ী, সিঙ্গীমারী, পাটিকাপাড়া, সিন্দুর্না, কালীগঞ্জের কাকিনা, তুষভান্ডার, চন্দ্রপুর, আদিতমারীর মহিষখোচা, দুর্গাপুর, পলাশী, লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা, রাজপুর, মোঘলহাট, কুলাঘাট ও খুনিয়াগাছ ইউনিয়নে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ বন্যা।

এ বন্যায় জেলার ৫টি উপজেলার প্রায় ৫০ হাজার পরিবার ২-৩ দিন ধরে পানিবন্দি রয়েছেন। পানি নিচে ডুবে গেছে সদ্য রোপন করা কয়েক হাজার হেক্টর জমির আমন ধান, বিনষ্ট হয়েছে সবজি ও মরিচ ক্ষেত। বন্যার পানিতে ভেসে গেছে কয়েক হাজার পুকুরের মাছ।

বুড়িমারী পাটগ্রাম মহাসড়ক পানিতে ডুবে যাওয়ায় বুড়িমারী স্থলবন্দরের সঙ্গে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে। পানি ছুই ছুই করছে লালমনিরহাট বুড়িমারী রেললাইন। যার ফলে স্থবিরতা নেমে এসেছে বুড়িমারী স্থলবন্দের আমদানি রফতানি বাণিজ্য। পন্যবাহী ট্রাক বন্দরে ভিড়লেও খালাস করা যাচ্ছে না।

হাতিবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ এনামুল কবির বাংলানিউজকে জানান, তিস্তা পাড়ের মানুষের জানমাল রক্ষার্থে তাদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হচ্ছে। তিস্তার পানি প্রবাহ আরও বাড়তে পারে। পানি বাড়লে ফ্লাড বাইপাস উপচে প্রবাহিত হবে তিস্তার পানি।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক (ডিসি) শফিউল আরিফ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে বলেন, ফ্লাড বাইপাস উপচে গেলে ঘুমন্ত মানুষের ব্যাপক ক্ষতি আশঙ্কায় লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

এ জন্য মাইকিং করা হচ্ছে। ওই এলাকার নিরাপত্তাও জোরদার করা হয়েছে বলেও জানান ডিসি।

বাংলাদেশ সময় ০০০০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১৭/ আপডেট সময়: ১২২৫ ঘণ্টা
জিপি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।