ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

আপন জুয়েলার্সের বিরুদ্ধে আরও ৫ মামলা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪২ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১৭
আপন জুয়েলার্সের বিরুদ্ধে আরও ৫ মামলা আপন জুয়েলার্সের একটি শাখায় অভিযানের পুরনো ছবি

ঢাকা: বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পারায় আপন জুয়েলার্সের প্রায় ১৫ মণেরও বেশি স্বর্ণালঙ্কার ও হীরা এবং নগদ অর্থ জব্দ করার ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে অর্থপাচার প্রতিরোধ আইনে পাঁচটি মামলা দায়ের করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। তাদের বিরুদ্ধে আগেই ঢাকা কাস্টমস হাউজে পাঁচটি মামলা দায়ের করা হয়। নতুন এ পাঁচ মামলার আসামিরা হলেন- আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ সেলিম ও তার দুই ভাই গুলজার আহমেদ এবং আজাদ আহমেদ।

শনিবার ( ১২ আগস্ট) রাজধানীর গুলশান থানায় দুটি (মামলা নং- ১৫ ও ১৬), ধানমন্ডি থানায় একটি (মামলা নং- ১০), রমনা থানায় একটি (মামলা নং- ২৭) এবং উত্তরা থানায় পঞ্চম (মামলা নং- ১৭) মামলাটি দায়ের করা হয়।

বাংলানিউজকে বিষয়টি জানান শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান।

তিনি বলেন, অর্থপাচার প্রতিরোধ আইন, ২০১২ (সংশোধনী ২০১৫) এর ধারা ২ (ঠ) এবং কাস্টমস অ্যাক্ট, ১৯৬৯ এর ধারা ১৫৬(৫) অনুযায়ী শুল্ক গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষ এ পাঁচ মামলা তদন্ত করবে। ‍শুল্ক গোয়েন্দার পাঁচ সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা এম আর জামান বাঁধন, বিজয় কুমার রায়, মো. শাহরিয়ার মাহমুদ, মোহাম্মদ জাকির হোসেন এবং মো. আরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাগুলো করেন।

এর আগে, আপন জুয়েলার্সের তিন মালিকের বিরুদ্ধে শুল্ক ফাঁকির অভিযোগে গত ৮ জুন রাতে ঢাকা কাস্টমস হাউজে পাঁচটি বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে মালিক দিলদার আহমেদ সেলিমের নামে তিনটি, গুলজার আহমেদ ও আজাদ আহমেদের নামে একটি করে মামলা হয়।  

এছাড়া তাদের জুয়েলার্সের স্বর্ণ কেন বাজেয়াপ্ত করা হবে না, সে বিষয়ে জানতে তখন কারণ দর্শানোর নোটিশও দেওয়া হয় কাস্টমসের পক্ষ থেকে।

অবশ্য জব্দ স্বর্ণ ফেরত চেয়ে গত ১ আগস্ট হাইকোর্টে পৃথক পাঁচটি রিট করে আপন জুয়েলার্স কর্তৃপক্ষ। জুয়েলার্সের আইনজীবী প্যানেল রিটের শুনানির জন্য আবেদন উপস্থাপন করলে আদালত বিব্রতবোধ করে সেগুলো কার্যতালিকা থেকে বাতিল করে দেন।

এদিকে, আপন জুয়েলার্সের স্বর্ণ চোরাচালানের ১৯ হোতাকে চিহ্নিত করার কথা জানিয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা। তারা বলেছে, এই ১৯ জনই জুয়েলার্সটির বেতনভুক্ত কর্মচারী। তারাই অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন দেশ থেকে আপন জুয়েলার্সের জন্য স্বর্ণ নিয়ে আসতো। শুল্ক গোয়েন্দার তথ্য অনুযায়ী, আপন জুয়েলার্সের বেতনভুক্ত ১৯ চোরাকারবারী ২০১৩ সাল থেকে ২০১৪ সালের ৩১ মে পর্যন্ত বিভিন্ন দেশে ১২৫ বার যাতায়াত করেছেন।

অপরদিকে, চোরাচালান, শুল্ক ফাঁকি, অর্থপাচার, ভ্যাট ফাঁকি, আয়কর ফাঁকি ইত্যাদি বিভিন্ন জালিয়াতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের দুর্নীতি হওয়ায় আপন জুয়েলার্সের মালিকদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে ব্যবস্থা নিতে এনবিআরের মাধ্যমে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদকে) বার্তা পাঠানো হয়েছে। দুদকও বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেছে।

যদিও এরমধ্যে আবার আপন জুয়েলার্সের জব্দ স্বর্ণ ফেরত দিতে বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতির (বাজুস) পক্ষ থেকে শুল্ক গোয়েন্দাকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়। কিন্তু ঘণ্টাখানেকের মধ্যে সেই আল্টিমেটাম তুলে নেওয়া হয়।

বনানীর একটি হোটেলে গত মার্চে আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদ ও তার বন্ধুদের হাতে দুই বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রীর ধর্ষিত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উঠলে জুয়েলার্সটির পাঁচটি শোরুম থেকে প্রায় ১৫ মণ ১৩ কেজি স্বর্ণ ও হীরার অলঙ্কার জব্দ করে শুল্ক গোয়েন্দা। পরে এসব অলঙ্কার বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১২,২০১৭
এসজে/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।