ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘খুলনায় সাংবাদিক গ্রেফতারের বিষয়টি খতিয়ে দেখবো’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০০ ঘণ্টা, আগস্ট ১, ২০১৭
‘খুলনায় সাংবাদিক গ্রেফতারের বিষয়টি খতিয়ে দেখবো’ তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে অ্যাটকো নেতাদের বৈঠক। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: আইসিটি আইনের ৫৭ ধারার মামলায় খুলনার সাংবাদিক আব্দুল লতিফ মণ্ডলকে গ্রেফতারের বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।

পত্রিকায় প্রকাশিত ছাগলের মৃত্যুর সংবাদ ফেসবুকে শেয়ার দেওয়ার কারণে ওই সাংবাদিককে গ্রেফতারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তথ্য মন্ত্রণালয় তো গ্রেফতার করেনি, গ্রেফতার করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়’।
 
‘এটি আমি খতিয়ে দেখবো, তারপর আলাপ করবো’।


 
অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্সের (অ্যাটকো) নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর মঙ্গলবার (০১ আগস্ট) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান তিনি।

ডিজিটাল জগতের ডিজিটাল নৈরাজ্য ও অপরাধ গণমাধ্যম এবং সরকার মিলে মোকাবেলার সিদ্ধান্ত হয়েছে জানিয়ে হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘গণমাধ্যমের নেতাদের মতামতকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবো’।
 
তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল জগতে যে ডিজিটাল অপরাধ হচ্ছে, যে নৈরাজ্য হচ্ছে, তা মোকাবেলা করা দরকার। সে বিষয়ে অ্যাটকো ও তথ্য মন্ত্রণালয়- আমরা একমত হয়েছি। তথ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সরকারের কাছে তারা পরামর্শ দিতে একমত হয়েছেন। আমরা স্বাগত জানিয়েছি’।
 
‘আমরা মনে করি, ডিজিটাল অপরাধ মোকাবেলা করতে হবে। সরকার একা পারবে না। বেসরকারি কর্তৃপক্ষ ও গণমাধ্যমের নেতারা যৌথভাবে কাজ করে ডিজিটাল জগতের ডিজিটাল অপরাধ মোকাবেলা করতে হবে। সরকার তাদের মতামতকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে পদক্ষেপ নেবো’।
 
নোয়াবের (নিউজ পেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন) সঙ্গে বৈঠকের তথ্য দিয়ে অ্যাটকো’র সভাপতি ও ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন লিমিটেডের চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান বলেন, ‘আমরা যৌথভাবে স্বীকার করছি যে, ডিজিটাল স্পেসে যে চ্যালেঞ্জ আছে, তা আমাদের মোকাবেলা করতে হবে। সেখানে যেসব সমস্যা আছে, সেগুলোর সমাধান করতে হবে’।
 
‘ডিজিটাল স্পেস এখন এমনভাবে হয়ে গেছে যে, শুধু সরকার নয়, আমরা বিব্রত হয়ে যেতে পারি এবং হচ্ছি। ঘটনাগুলো ঘটছে, যে জিনিসগুলোকে অ্যাটাক করছে যেগুলোকে মোকাবেলা করতে হবে’।
 
সালমান এফ রহমান বলেন, ‘অ্যাটকো ও নোয়াব যৌথভাবে সরকারের সঙ্গে বসতে চাই। এ চ্যালেঞ্জগুলো কিভাবে মোকাবেলা করবো, এ সমস্যাগুলোর কিভাবে সমাধান করতে পারি, এটি আমরা জানিয়েছি’।
 
দুপুরে রাজধানীতে অ্যাটকো ও নোয়াবের যৌথ সভায় আইসিটি আইনের ৫৭ ধারার ব্যাপারে উদ্বেগ জানানো হয়েছে বলে তথ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।
 
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা কোনো আলোচনা করিনি। অ্যাটকো’র নেতারা কেবলমাত্র বলেছেন যে, ডিজিটাল জগতে যে ডিজিটাল নৈরাজ্য, অপরাধ ও সমস্যা- সেসব সমস্যাও আমরা স্বীকার করি এবং সমস্যা মোকাবেলায় সরকারের সঙ্গে কাজ করতে হবে’।
 
‘যে কেউ মন্ত্রীর সমালোচনা করতে পারেন। সাংবাদিকরাও আপনার (তথ্যমন্ত্রী) বিষয়ে কথা বলেছেন যে, আপনি এখানে থাকার কারণে অনেক কিছু দ্রুততার সঙ্গে হচ্ছে না’- এ প্রশ্নের জবাবে হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘সেটি প্রত্যেক সাংবাদিক ও নাগরিক যেকোনো মন্ত্রীর কার্যক্রম দ্রুত হচ্ছে না শ্লথ হচ্ছে- এ ব্যাপারে সমালোচনা করতে পারেন। আমার তাতে কোনো অসুবিধা নেই’।
 
বৈঠকের শুরুতে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সম্প্রচার আইন প্রায় চূড়ান্ত। দীর্ঘ দুই বছর ধরে সকল অংশীজনের সঙ্গে আলোচনার পরে আইনটি মন্ত্রিপরিষদে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। আশা করছি, মন্ত্রিপরিষদ অনুমতি দিলে আগামী অক্টোবরে সংসদে আইনটি পাঠাতে পারবো’।
 
আইনের ভেতরে সম্প্রচার কমিশন গঠনের বিষয় আছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হবে কমিশন গঠনের পর। সমগ্র ইলেকট্রনিক মিডিয়া বা সম্প্রচারের জগতটাই এই কমিশনের আওতায় আসবে। সেখানে আপনার নিরাপত্তাও হবে, গ্রাহক ও সরকারেরও নিরাপত্তা হবে। এ আইন টেলিভিশন ও সম্প্রচার মাধ্যমকে আইনগত নিরাপত্তা দেবে’।
 
অ্যাটকো’র সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান একাত্তর টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবু আইনটি মন্ত্রিসভায় যাওয়ার আগে চূড়ান্ত খসড়াটি নিজেরা আরেকবার দেখার আহ্বান জানান।
 
টেলিভিশনের নাট্যকর্মীদের বিভিন্ন দাবির বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অ্যাটকো, নাট্যকর্মী ও তথ্য মন্ত্রণালয় মিলে ত্রিপক্ষীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি আগামী এক সপ্তাহের ভেতরে কাজ শুরু করবে’।
 
তথ্যসচিব মরতুজা আহমদ ও অ্যাটকো’র নেতারা বৈঠকে অংশ নেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, আগস্ট ০১, ২০১৭
এমআইএইচ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।