ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

আমের ঝুড়িতে করে ঢাকায় অস্ত্র এনেছিলেন 'র‌্যাশ'

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০১৭
আমের ঝুড়িতে করে ঢাকায় অস্ত্র এনেছিলেন 'র‌্যাশ' ফাইল ছবি

ঢাকা: গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলায় অন্যতম পরিকল্পনাকারীদের একজন আসলাম হোসেন মোহন ওরফে আবু জাররা ওরফে রাশেদ ওরফে র‌্যাশ। তিনিই হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্রগুলো চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত এলাকা থেকে আমের ঝুঁড়িতে করে ঢাকায় এনেছিলেন।

শুক্রবার (২৮ জুলাই) ভোরে নাটোরের সিংড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে র‌্যাশকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ সদর দফতরের বিশেষ টিম, কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট, বগুড়া ও নাটোর জেলা পুলিশের যৌথ অভিযানে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

এরপর শুক্রবার বিকেলে তাকে রাজধানীর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কার্যালয়ে আনা হয়।

গুলশানে জঙ্গি হামলার তদন্তকারী সংস্থা সিটিটিসি সূত্র জানায়, গুলশান হামলায় ব্যবহৃত একে-২২ রাইফেলসহ অন্যান্য অস্ত্রগুলো চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকায় আনেন র‌্যাশ। জঙ্গি হাদিসুর রহমান সাগর, মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান ও মিজানুর রহমান ওরফে ছোট মিজানের কাছ থেকে অস্ত্রগুলো সংগ্রহ করে হামলার অপারেশনাল কমান্ডার নুরুল ইসলাম মারজানের কাছে পৌঁছে দেন।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, র‌্যাশের সরবরাহ করা তিনটি একে-২২ রাইফেল গুলশান হামলায় ব্যবহৃত হয়। আরেকটি একে-২২ রাইফেল নব্য জেএমবি’র সমন্বয়ক তামিম চৌধুরীর আত্মরক্ষায় ব্যবহৃত হতো। যে অস্ত্রটি পরবর্তীতে নারায়ণগঞ্জে তামিমের আস্তানা থেকে উদ্ধার করা হয়।

গুলশানে হামলাকারীদের টি-শার্ট, জুতা ও ব্যাগগুলোও সরবরাহ করেছিলেন র‌্যাশ।

সূত্র জানায়, র‌্যাশ তামিম চৌধুরীর সঙ্গে রাজধানীর বিভিন্ন আস্তানায় অবস্থান করতেন। বিভিন্ন সময়ে জঙ্গিদের বিভিন্ন সামগ্রী সরবরাহ করতেন।

র‌্যাশ নওগাঁর মান্দা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে আসলাম হোসেন। তিনি এলাকায় মোহন নামে পরিচিত। গত বছর রোজার সময় বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন র‌্যাশ। এর কিছুদিন পর তার বাবাও নিখোঁজ হন। এরপর থেকেই তাদের সঙ্গে পরিবারের আর কোনো যোগাযোগ নেই।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার চার্জশিট দিতে সোহেল মাহফুজ, রাশেদ ওরফে র‌্যাশ, বাশারুজ্জামান ওরফে চকলেট, ছোট মিজান ও হাদিসুর রহমান সাগরকে খুঁজছিল সিটিটিসি। তাদের মধ্যে সম্প্রতি সোহেল মাহফুজকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করা হয়।  

তারপর তিনি পুলিশকে জানান, গত এপ্রিলে চাঁপাইনবাবগঞ্জে সিটিটিসির ‘ঈগল হান্ট’ অভিযানে বাশারুজ্জামান চকলেট ও ছোট মিজান নিহত হয়েছেন। সর্বশেষ র‌্যাশকে গ্রেফতারের পর শুধু হাদিসুর রহমান সাগরই পলাতক রয়েছেন।

এর আগে, গত এক বছরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন অভিযানে হলি আর্টিজানে হামলার মাস্টারমাইন্ড ও নব্য জেএমবি’র সমন্বয়ক তামিম চৌধুরী, প্রশিক্ষক মেজর (অব.) জাহিদুল ইসলাম ও রায়হান কবির, অপারেশনাল কমান্ডার নুরুল ইসলাম মারজান, অর্থ সরবরাহকারী সারোয়ার জাহান ও তানভীর কাদেরী, সামরিক কমান্ডার ফরিদুল ইসলাম আকাশ, ধর্মগুরু আব্দুল্লাহ নিহত হয়েছেন।

এ বিষয়ে শুক্রবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, নব্য জেএমবি’র রাশেদ ওরফে র‌্যাশ গুলশান হামলার পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে অন্যতম। এই ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত ছিলো তাদের প্রায় সবাই ধরা পড়েছে। মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে রয়েছে। শিগগিরই মামলার চার্জশিট দাখিল করা হবে।

গত বছরের ০১ জুলাই রাতে হলি আর্টিজানে হামলা চালায় সশস্ত্র পাঁচ জঙ্গি। হামলা চালিয়ে বিদেশি, দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ মোট ২২ জনকে বর্বরোচিত কায়দায় হত্যা করা হয়। পরদিন সকালে যৌথ বাহিনীর অভিযানে নিহত হয় ওই পাঁচ জঙ্গি।

বাংলাদেশ সময়: ২৩১৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০১৭
পিএম/এসএনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।