বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) সকালে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত আনুষ্ঠানিকভাবে হটলাইনটির উদ্বোধন করেন।
দুদকসূত্রে জানা গেছে, হটলাইনে একই সঙ্গে একাধিক ব্যক্তি ফোন করতে পারবেন।
অভিযোগকারীদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা যাতে হুমকির মুখে না পড়ে সেজন্য অভিযোগকারীর পরিচয় পুরোপুরি গোপন রাখা হবে। এছাড়া হটলাইনে পাওয়া দুর্নীতির তথ্য, অভিযোগসহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিক কাজ সম্পন্ন করতে এরই মধ্যে দুদকের প্রধান কার্যালয়ের তৃতীয় তলার ৩১৬ নম্বর কক্ষে ‘দুদক অভিযোগকেন্দ্র’ খোলা হয়েছে।
এর আগে দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) দুদকের ‘হটলাইন ১০৬’ বরাদ্দ দেয়। হটলাইনটি চালু হওয়ার মধ্য দিয়ে উদ্যোগটির শুভ সূচনা হলো। কোনো সরকারি কর্মচারী বৈধ পারিশ্রমিক ছাড়া অন্য কোনো পন্থায় বকশিশ নিলে তা কমিশনের তফসিলভুক্ত অপরাধ। দুদকের তফসিলভুক্ত অপরাধ হিসেবে আরও যেসব অপরাধ আমলযোগ্য সেগুলো হচ্ছে:
সরকারি কর্মচারী, ব্যাংকার, ব্যবসায়ী বা অন্য কোনো ব্যক্তি অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ,কারও ক্ষতি করতে অশুদ্ধ বা মিথ্যা দলিল প্রস্তুত করা, সরকারি কর্মচারী, বেসরকারি ব্যক্তি, ব্যাংক বা অন্য কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী কর্তৃক সরকারি অর্থ, সম্পত্তি আত্মসাৎ বা কোনো ক্ষতি করা, প্রতারণা বা জালিয়াতিতে সরকারের কোনো কর্মচারী বা অন্য কোনো ব্যক্তি সহায়তা দেওয়া, অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আয়ের অবৈধ উৎস গোপন করা বা আড়ালে সেই অর্থ বিদেশে পাচার করা বা বিদেশ থেকে বাংলাদেশে আনা, দুর্নীতি বা ঘুষের মাধ্যমে অথবা অবৈধভাবে অর্জিত কোনো ব্যক্তির অঘোষিত আয় বা সম্পদ বিবরণীর সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পত্তি দখলে থাকা।
আরও জানা গেছে, উদ্বোধনের আগের দিন বুধবার ‘হটলাইন ১০৬’-এ প্রায় ১ হাজার অভিযোগ জমা পড়েছে। আর বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের প্রথম দিনে প্রায় ২ হাজারের মতো অভিযোগ জমা পড়েছে। আপাতত ৪টি শিফটে ২০ জন কর্মকর্তা কাজ করছেন। পরে এই সংখ্যাটা ৫০ জনে উন্নীত করা হবে।
দুদকের সহকারী পরিচালক সেলিনা আখতার মনি এই হটলাইনের সার্বিক তত্ত্বাবধান করছেন। এ বিষয়ে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, এখন সবকিছু গোছানো হচ্ছে। এজন্য একটি ওয়েবসাইট তৈরির কাজ চলছে। প্রচুর অভিযোগ আমরা পাচ্ছি। আর অভিযোগগুলো আমরা যাচাই করে অনুসন্ধানের কাজে নেমে পড়বো। এছাড়া হটলাইনকে কেন্দ্র করে কমিশন তিনটি টিম সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। এই টিম ঘুষ গ্রহণসহ দুর্নীতির তথ্য পেলে তাৎক্ষণিক অভিযান পরিচালনা করবে।
তিনি আরও বলেন, এখন আপাতত প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা হটলাইনে দুর্নীতির তথ্য, অভিযোগ সংগ্রহ করবেন। এরপর যে কেউ চাইলে বিকেল ৫টার পর পরদিন সকাল ৯টা পর্যন্ত হটলাইনে ফোন করে অভিযোগ জানাতে পারবেন। এ সময় অভিযোগটি রেকর্ড হয়ে থাকবে, যা পরের দিন লিপিবদ্ধ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হটলাইন চালু হওয়ার বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বাংলানিউজকে বলেন, এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা দুর্নীতি। এই হটলাইন চালু হওয়ায় দুর্নীতি অনেকাংশে কমে আসবে। কেননা এখন থেকে যখনই দুর্নীতি হবে তখন যেকেউ দুদককে অভিযোগ জানাতে পারবেন। এক্ষেত্রে অভিযোগকারীদের নাম-পরিচয় গোপন রাখা হবে। এই হটলাইন চালু হওয়ায় দুদক আরও একধাপ এগিয়ে গেল। কেননা তথ্য-প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়েও দুর্নীতি প্রতিরোধ করা যায়। এখন সেটাই আমরা করব।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০১৭
এসজে/জেএম