ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

বাগাল খালাস, ভয়ে ৪ শিশুর পরিবার

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১৭
বাগাল খালাস, ভয়ে ৪ শিশুর পরিবার বাগাল খালাস, ভয়ে ৪ শিশুর পরিবার

হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার সুন্দ্রাটিকি গ্রামের ৪ শিশু হত্যা মামলার প্রধান আসামি আব্দুল আলী বাগাল (৬০) বেকসুর খালাস পাওয়ায় নিহত শিশুদের পরিবারগুলো নিরাত্তাহীনতায় ভুগছেন।

অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় পঞ্চায়েত প্রধান আব্দুল আলী বাগালের সঙ্গে খালাস দেওয়া হয়েছে বাগালের দুই ছেলে পলাতক আসামি বাবুল মিয়া (৪৫) ও বিল্লাল মিয়াকেও (৩৫)।

চার শিশুর পরিবারের সদস্যরা আশঙ্কা করছেন, যেকোনো সময় বাগাল ও তার লোকজন তাদের ওপর হমলা চালাতে পারেন।

এজন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।

বুধবার (২৬ জুলাই) দুপুরে চাঞ্চল্যকর চার শিশু হত্যার দায়ে তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড ও দু’জনকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন সিলেট বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মকবুল আহসান। ৮ আসামির মধ্যে বাগালসহ ওই তিন আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- আব্দুল আলী বাগালের ছেলে রুবেল মিয়া (১৮), বাগালের প্রধান সহযোগী (সেকেন্ড ইন কমান্ড) হাবিবুর রহমান আরজু (৪০) ও উস্তার মিয়া (৪৮)। তাদের মধ্যে উস্তার পলাতক। বাকি দু’জন কারাগারে রয়েছেন।

সাত বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- বাগালের আরেক ছেলে জুয়েল মিয়া ও সহযোগী শাহেদ আহমদ (৩২)। পাশাপাশি তাদের দু’জনকে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরো ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বিকেলে সুন্দ্রাটিকি গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, নিহত শিশু ইসমাইল হোসেনের (১০) বাবা আব্দুল কাদির, মো. তাজেল তালুকদারের (১০) বাবা আব্দুল আজিজ, জাকারিয়া আহমেদ শুভের (৮) বাবা ওয়াহিদ মিয়া ও মনির মিয়ার (৭) বাবা আবদাল মিয়া যার যার ঘরে বসে রয়েছেন।

তারা বাংলানিউজকে বলেন, ‘যে রায়টি ঘোষণা করা হয়েছে, তাতে আমরা প্রকৃত বিচার পাইনি। আমরা অন্য ৫ আসামিরও ফাঁসি চাই’।

নিহত ইসমাইল সুন্দ্রাটিকি মাদ্রাসা ও অন্য তিন শিশু সুন্দ্রাটিকি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল।

ইসমাইলের বাবা আব্দুল কাদির বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরা বাড়ি থেকে বের হওয়ার সাহস পাচ্ছি না। যেকোনো সময় বাগাল ও তার লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালাতে পারেন’।

তাজেলের বাবা আব্দুল আজিজ বলেন, ‘গত দু’দিন আগেও বাগাল তার লোকজনের মাধ্যমে আমাদের হুমকি দিয়েছেন। তাই আমরা জীবনের নিরাপত্ত্বাহীনতায় ভুগছি’।

তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিহত শিশুদের বাড়িতে বাহুবল থানার একদল পুলিশ সদস্য অবস্থান করছিলেন। তারা বাংলানিউজকে বলেন, ‘কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে, সেজন্য টহলে রয়েছি’।

বাহুবল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাজহারুল হক বলেন, ‘পুলিশ ঘটনাস্থলে রয়েছে। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না বলে আমরা আশাবাদী’।

গত বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি বিকেলে বাড়ির পাশের মাঠে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় ওই চার শিশু। পাঁচদিন পর স্থানীয় ইছাবিল থেকে বালিচাপা দেওয়া অবস্থায় তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হলে দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ঘটনার পর চারজনকে আটক করে পুলিশ। পরে বাহুবল থানায় ওই চারজনসহ মোট নয়জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন নিহত শিশু মনিরের বাবা আবদাল মিয়া।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১৭
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।