রাজধানীর পূর্ব জুরাইনের হাজী খোরশেদ আলী সড়কটির বুড়ির বাড়ি মসজিদ থেকে জিয়াসরণী পর্যন্ত তিন কিলোমিটার পুরো রাস্তাটিই পানির নীচে তলিয়ে গেছে। গত ৫ বছর ধরে শুকনা মৌসুমেও দুই কিলোমিটার রাস্তা পানির নিচে ডুবে থাকে।
যারা ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতেন তারা এ এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন সেই কবে। বাড়িওয়ালা ও স্বল্প আয়ের কিছু মানুষ কম বাড়িভাড়ার মায়ায় বছরের পর বছর এ এলাকায় থেকে কষ্ট করে চলেছেন।
বুধবার (২৬ জুলাই) সকালে জুরাইন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, খোরশেদ আলী সড়কের কোথায় কোনো যানবাহন চলছে না। আশে পাশের স্কুলগুলোতে কোনো ছাত্র-ছাত্রী যায়নি। ড্রেনের ময়লা কালো পানি ঘরে ঘরে ঢুকে পড়েছে।
জুরাইন প্রধান সড়কটির আশপাশে গড়ে উঠেছে জুরাইন আশ্রাফ মাস্টার উচ্চ বিদ্যালয়, সিটি আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ডলফিন কিন্ডারগার্টেন, জুরাইন আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়সহ প্রায় ৯-১০টি স্কুল। বিদ্যালয়গুলোর প্রায় ১০ হাজার ছাত্র-ছাত্রীকে প্রতিদিন এ ময়লা পানি মাড়িয়ে স্কুলে যেতে হচ্ছে।
সারা বছর সড়কটি পানি নীচে ডুবে থাকায় সড়কের দু’ধারের দোকানীরা কোনো খরিদদার পায় না। ইতোমধ্যেই সড়কটির দু’ধারের ৮০ ভাগ দোকানপাট বন্ধ হয়ে গেছে।
পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনগুলো ইট, বালির ব্যবসায়ীদের বালিসহ নানা ধরনের বাসাবাড়ির ময়লা, পলিথিনে ভরাট হয়ে আছে। ড্রেন দিয়ে কোনো পানি নামতে না পারায় প্রধান সড়কের উপর দিয়েই প্রবাহিত হচ্ছে।
এলাকাবাসী জানান, ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন না করে কয়েক বছর পর পর শুধু রাস্তা উঁচু করা হয়। ফলে রাস্তায় দু’পাশের বাড়িগুলোর একতলা মাটির নীচে হারিয়ে গেছে। ২৫ বছর আগে যেসব বাড়িঘর রাস্তা থেকে ৫ ফুট উঁচু করা হয়েছিল সেগুলোর অর্ধেকটা এখন মাটির নীচে। এ এলাকায় যারা নতুন করে বাড়ি করছেন তারা বর্তমান রাস্তার লেবেল থেকে ৮-১০ ফুট উঁচু করে ঘরবাড়ি নির্মাণ করছেন।
এলাকাবাসী মজিবুর জানান, প্রতিদিন জীবাণুযুক্ত দুর্গন্ধময় কালো পানি মাড়িয়ে বাচ্চাদের নিয়ে স্কুলে যাওয়ার ফলে তাদের শরীরে চর্মরোগ দেখা দিয়েছে। ঘনঘন বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
তিনি আরও বলেন, এলাকাটি রাজধানী ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৫৩নং ওয়ার্ডের অধীন। সমস্যা সমাধানে এলাকার ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুর হোসেন বিভিন্ন সময় আশ্বাস দিলেও এখন এলাকার কেউ আর বিশ্বাস করে না।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫০ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১৭
এমআই/এসএইচ