ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

জেলা প্রশাসকদের ২৩ দফা নির্দেশনা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৫৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০১৭
জেলা প্রশাসকদের ২৩ দফা নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা/ফাইল ছবি

ঢাকা: দেশের সব জেলা প্রশাসকদের ২৩ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জেলা প্রশাসকদের তিনদিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে এ নির্দেশনা দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী ২৩ দফা নির্দেশনায় বলেন, সরকারি সেবা গ্রহণে সাধারণ মানুষ যাতে কোনভাবেই হয়রানি বা বঞ্চনার শিকার না হন, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

তৃণমূল পর্যায়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে কাজ করতে হবে।

গ্রামীণ অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করে নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। মানুষ যেন শহরমুখী না হয়। শহরের উপর জনসংখ্যার চাপ যাতে না বাড়ে সে ব্যবস্থা করতে হবে।  

গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, সম্ভাবনাময় স্থানীয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশ এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনে আপনাদের ব্রতী হতে হবে।  

ধনী-দরিদ্র্যের বৈষম্য কমাতে উন্নয়ন কর্মসূচি এমনভাবে গ্রহণ করতে হবে যাতে সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষ উপকৃত হয়। বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণে সম্পদের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করতে হবে।

আরও পড়ুন: স্বাধীন জাতি হিসেবে এগিয়ে যাবো
জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িকতা দূর করে সমাজ জীবনের সর্বক্ষেত্রে শান্তি-শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে আরও সতর্কতার সঙ্গে এবং কঠোরভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস নির্মূলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার শিক্ষক, মসজিদের ইমাম, গ্রামের মুরুব্বি, নেতৃস্থানীয় ব্যবসায়ী, নারী সংগঠক, আনসার-ভিডিপি, গ্রাম পুলিশ, এনজিও কর্মীসহ সমাজের সবাইকে সম্পৃক্ত করতে হবে।

প্রতিবন্ধী, অটিস্টিক ও পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর কল্যাণে বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

সাধারণ মানুষকে সহজে সুবিচার দেওয়া ও আদালতে মামলার জট কমাতে গ্রাম আদালতগুলোকে কার্যকর করতে হবে।

জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছাতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়ন ও বিকাশে নেতৃত্ব দিতে হবে।
 
শিক্ষার সবস্তরে নারী শিক্ষার হার বৃদ্ধি এবং ঝরেপড়া শিক্ষার্থীদের মূলধারায় ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ নিতে হবে।

ভূমি প্রশাসন-ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি এবং সরকারি ভূমি রক্ষায় আরও সচেষ্ট হতে হবে।
 
কৃষি-উৎপাদন বৃদ্ধিতে সার, বীজ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ইত্যাদির সরবরাহ নির্বিঘ্নে করতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিতে হবে। পরিবেশবান্ধব কৃষি ব্যবস্থাপনাকে জনপ্রিয় করতে উদ্যোগী হতে হবে।
 
ভেজাল খাদ্যদ্রব্য বাজারজাতকরণ প্রতিরোধে ব্যাপক গণসচেতনতা সৃষ্টি করে এসব অনৈতিক কর্মকাণ্ড কঠোর হস্তে দমন করতে হবে।

সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ও এসডিজির সফল বাস্তবায়নে মেধা, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বিপর্যয় প্রশমনে সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। পরিবেশ রক্ষার জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং এ সংক্রান্ত আইন ও বিধি বিধানের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

শিল্পাঞ্চলে শান্তি রক্ষা, পণ্য পরিবহন ও আমদানি-রপ্তানি নির্বিঘ্ন করা এবং পেশিশক্তি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও সন্ত্রাস নিমূর্ল করতে ব্যবস্থা নিতে হবে।

ভোক্তা অধিকারকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হবে এবং বাজারে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টির যে কোনো অপচেষ্টা কঠোর হাতে দমন করতে হবে।

নারী উন্নয়ন নীতি সুষ্ঠু বাস্তবায়ন করতে হবে। নারীর প্রতি সহিংসতা, নিপীড়ন ও বৈষম্যমূলক আচরণ বন্ধ এবং নারী ও শিশু পাচার রোধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।

শিশু-কিশোরদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের লক্ষ্যে শিক্ষা, ক্রীড়া, বিনোদন ও সৃজনশীল সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। শিশু-কিশোরদের মধ্যে ইতিহাস চেতনা, জ্ঞানস্পৃহা ও বিজ্ঞানমনষ্কতা জাগিয়ে তুলতে হবে।

কঠোরভাবে মাদক ব্যবসা, মাদক চোরাচালান এবং এর অপব্যবহার বন্ধ করতে হবে।

ভূমি প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি করে সরকারি ভূমি রক্ষায় সজাগ থাকবে হবে।

পার্বত্য জেলাসমূহের উন্নয়ন ত্বরান্বিতকরণের পাশাপাশি এ অঞ্চলের ভূ-প্রাকৃতিক সৌন্দয্য ও জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণ করতে হবে। পর্যটনশিল্প,  ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প এবং ঐতিহ্যবাহী কুটিরশিল্পের বিকাশে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে হবে।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম, প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার প্রমুখ।

এছাড়া মাঠ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার জি এম সালেহ উদ্দিন, যশোর জেলা প্রশাসক আশরাফ উদ্দিন, চাঁদপুর জেলা প্রশাসক আব্দুস সবুর মন্ডল ও ফরিদপুর জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩১ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০১৭
এমইউএম/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।