ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

৪ নদীর তলদেশ ভরাটে আটকে থাকছে ঢাকার পানি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৩০ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০১৭
৪ নদীর তলদেশ ভরাটে আটকে থাকছে ঢাকার পানি বৃষ্টির কারণে রাজধানীর একটি সড়কে জলাবদ্ধতার চিত্র (পুরনো ছবি)

ঢাকা: সামান্য বৃষ্টি হলেই রাজধানী ঢাকায় দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। এই জলাবদ্ধতার ফলে যানজটে নাকাল হতে হয় নগরবাসীকে। আর এই জলাবদ্ধতার কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা দেখছেন ঢাকাকে ঘিরে থাকা বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, বালু ও তুরাগ-- এ চার নদ-নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়াকে। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দখলে-দূষণে চার নদ-নদী ভরাট হয়ে যাওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই ডুবছে রাজধানী। এরওপর আবার ঢাকার ছোট-বড় খালগুলোও দখল হয়ে যাওয়ায় নদ-নদীগুলোতে নগরীর পানি নামার উপায় থাকছে না।

ফলে বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যাওয়া সড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকছে যানবাহনগুলো।  

এই অবস্থায় নদ-নদীগুলোর খনন, সংস্কার, দখল ও দূষণমুক্ত করা জরুরি হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।  

যদিও এ চার নদ-নদী এবং চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদী খনন, সংস্কার, দখল ও দূষণমুক্ত করে পরিবেশবান্ধব করার জন্য গত বছর উদ্যোগ নিয়েছিল নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে একটি প্রস্তাবও পাঠানো হয়েছিল, যেন নৌবাহিনীকে দিয়ে এ পাঁচ নদ-নদী খনন ও সংস্কার করে এগুলোর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ ফিরিয়ে আনা যায়। প্রায় আট মাস আগে এ পাঁচ নদ-নদী সংস্কার করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটিও করে দেওয়া হয়েছিল।  

কিন্তু সে কমিটি এখনো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। রহস্যজনক কারণে সেই উদ্যোগটাই থমকে আছে।

অভিযোগ রয়েছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে নৌবাহিনীকে কাজ না দিতে সরকারের পদস্থ আমলাদের একটি অংশ পাঁয়তারা চালাচ্ছেন।  

রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিয়ে কাজ করা বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী ও পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) নির্বাহী সদস্য তোফায়েল আহমদ বলেন, ঢাকা শহর ভৌগোলিক কারণেই বৃষ্টিপাতপ্রবণ অঞ্চল। মৌসুমী বায়ুপ্রবাহের কারণে ঢাকায় তুলনামূলক বৃষ্টি বেশি হয়। কিন্তু এই বৃষ্টির পানি কোথাও যেতে পারে না। কারণ ঢাকাকে একটা গামলা বানিয়ে রাখা হয়েছে। যে কারণে বৃষ্টির পানি নগরীর এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় গিয়ে জলাবদ্ধতা তৈরি করে।  

এই বিশেষজ্ঞ বলেন, ঢাকার খালগুলো দখল হয়ে যাওয়ায় এবং চারপাশের নদ-নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি দ্রুত নামতে পারে না। এর পাশাপাশি নগরীজুড়ে যত্রতত্র বক্স-কালভার্ট নির্মাণ পরিস্থিতিকে আরও জটিলতায় ঠেলে দিয়েছে।

সেজন্য যত দ্রুত সম্ভব চারপাশের নদ-নদী খনন করে দখল ও দূষণমুক্ত করতে হবে। তাতেই ঢাকাকে জলাবদ্ধতার হাত থেকে বাঁচানো যাবে বলে মনে করেন তোফায়েল আহমেদ।

তিনি হুঁশিয়ার করেন, অবিলম্বে নদ-নদী ও খাল দখল ও দূষণমুক্ত করা না গেলে ভবিষ্যতে আরও বড় বিপর্যয় অপেক্ষা করছে ঢাকার জন্য।

বাংলাদেশ সময়: ১০২৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০১৭
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।