ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

খুলনা-কলকাতা রুটে প্রতিদিন বাস চাই

মাহবুবুর রহমান মুন্না, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৪৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০১৭
খুলনা-কলকাতা রুটে প্রতিদিন বাস চাই খুলনা-কলকাতা রুটে প্রতিদিন বাস চাই

কলকাতাগামী সৌহার্দ্য শ্যামলী পরিবহন থেকে: খুলনা থেকে ঢাকায় যেতে বাসে লাগে ৭ ঘণ্টা আর ট্রেনে ১০ ঘণ্টা। বাসে যেতে পথে যদি জ্যাম অথবা ফেরিতে দেরি হয় তাহলে তো কথায় নেই। কখন ঢাকায় পৌঁছানো যাবে তার কোনো ঠিক নেই। সেখানে খুলনা থেকে মাত্র ৪-৫ ঘণ্টায় কলকাতায় যাওয়া যায়।

এতে সময়ও যেমন কম লাগে তেমনি খরচও কম। কিন্তু সমস্যা শুধু একটাই, খুলনা থেকে কলকাতায় সপ্তাহে তিন দিন বাস যায়।

এটা প্রতিদিন হলে বেশি ভালো হয়।

মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) খুলনা থেকে কলকাতাগামী সৌহার্দ্য শ্যামলী পরিবহনের যাত্রী খুলনা সিটি করপোরেশনের ১৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আমিনুল ইসলাম মুন্নার বাংলানিউজকে এসব কথা বলেন।  

অপর যাত্রী ব্যবসায়ী বেলাল জানান, ব্যবসায়িক কাজে মালামাল আনতে আগে ঢাকায় যেতাম। বাস-ট্রেনে যেভাবেই যাই হাজার টাকার উপরে খরচ। আর সময়ের তো কথাই নেই। খুলনা-কলকাতা রুটে যাত্রীবাহী বাস চালুর পর এখন কলকাতায় যাই মালামাল আনতে। ঢাকার চেয়ে কম দামে ভালো মাল আনতে পারি, এতে লাভও বেশি। সময়ও কম লাগে।

মুন্না ও বেলাল খুলনা-কলকাতা রুটে প্রতিদিন বাস চলাচলের দাবি জানান।

...একই বাসের যাত্রী খুলনা প্রেস ক্লাবের সভাপতি এস এম হাবিব বলেন, এ রুটে বাস চালুর মধ্য দিয়ে খুলনাসহ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হলো। আর এর মাধ্যমে খুলনার যাত্রীদের দিনে দিনে কলকাতা গিয়ে কাজ সেরে আবার সে দিনেই ঘরে ফিরে আসার সুযোগ তৈরি হয়েছে। এরপর সরাসরি রেল যোগাযোগ চালু হলে নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দে  রোগী, পর্যটক, ব্যবসায়ী কলকাতায় যেত-আসতে পারবে। এর মাধ্যমে  দুই দেশের বাণিজ্যে আরও বেশি সম্প্রসারিত হবে।

খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সিনিয়র সহ-সভাপতি মল্লিক সুধাংশু বলেন, এ রুটে বাস চালুর পর বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে সোহার্দ্য সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন আরো জোরালো হয়েছে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ উপকৃত হয়েছেন। রোগী ও বৃদ্ধরা সরাসরি বাসে করে কলকাতায় চিকিৎসাসহ সব কাজে দ্রুত যাওয়ার সুবিধা পেয়েছেন।

বাসের বেশ কয়েকজন যাত্রী জানান, সহজে দীর্ঘ মেয়াদী ভিসা পাওয়ার কারণে ভ্রমণ, চিকিৎসাসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে এ অঞ্চলের মানুষ ভারত যাচ্ছেন। ফেরার পথে কলকাতা থেকে দরকারি কেনাকাটাও সেরে নিচ্ছেন অধিকাংশ মানুষ।

বেনাপোলে ইমিগ্রেশন জটিলতা ও পথে মাঝে মাঝে গাড়ি থামিয়ে পুলিশি চেকপোস্টে কমানোর দাবি জানান তারা।

সৌহার্দ্য শ্যামলী পরিবহনের খুলনা কাউন্টার ইনচার্জ শেখ ইফতেখার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ঢাকা থেকে কলকাতা ১৮শ’ টাকা ও খুলনা থেকে ৮শ’ টাকা। শনি, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার তিনদিন ৪৫ সিটের এ পরিবহনটি কলকাতায় যায়। সোম, বুধ ও শুক্রবার কলকাতা থেকে আসে। কাস্টমস-ইমিগ্রেশনে ভিড় না থাকলে খুলনার সাত রাস্তার মোড় থেকে কলকাতার নিউ মার্কেট পর্যন্ত মাত্র ৪-৫ ঘণ্টায় যাওয়া যাচ্ছে।

তিনি জানান, খুলনার জন্য নির্ধারিত ২৫টি সিট রয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী আমরা আরও বাড়াবো। আগস্ট মাসেই আশা করছি শুধু খুলনা থেকে কলকাতায় সৌহার্দ্য শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস যাবে।
 
বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) রেজাউল করিম মোবাইল ফোনে বাংলানিউজকে বলেন, সরাসরি বাস সার্ভিস চালু হওয়ায় বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে মানুষজনের যাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। বেনাপোল স্থলবন্দর ১ আগস্ট থেকে সপ্তাহের সাত দিন ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা শুরু হলে বাংলাদেশের মানুষ আরও বেশি ভারত যাবেন। ভারতের নাগরিকরাও এ দেশে আসবেন। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, বাণিজ্য সম্প্রসারণ তথা আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সহজ ও উন্নত হবে।

২২ মে গ্রিন লাইন পরিবহনের বাস দিয়ে কমলাপুর বিআরটিসি আন্তর্জাতিক বাস টার্মিনাল থেকে ঢাকা-খুলনা-কলকাতা রুটে যাত্রা শুরু হয়। এদিন কলকাতা থেকে ছেড়ে আসা সৌহার্দ্য শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস যাত্রী নিয়ে খুলনা হয়ে ঢাকায় যায়।

এর আগে ৮ এপ্রিল ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে খুলনা-কলকাতা রুটে বাস ও ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০১৭
এমআরএম/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।